Yamaha R15M ৯০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রায়হান রনি
This page was last updated on 31-Jul-2024 10:58am , By Shuvo Bangla
আমি রায়হান রনি । টাংগাইল জেলার ঘাটাইল এ আমার বসবাস। আমি বর্তমানে Yamaha R15M বাইকটি ব্যবহার করি । আজ আপনাদের সাথে আমি আমার প্রিয় বাইকটির রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
এই বাইকটি বর্তমানে ৯০০০ কিলোমিটার রাইড করেছি । বাইকটি টাংগাইল জেলাতেই অধিকাংশ সময় চালিয়েছি এবং এর পাশাপাশি ঢাকা, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, সাজেক, সিরাজগঞ্জ,জামালপুর আরও বিভিন্ন জেলাতে গিয়েছি।
এটা আমার জীবনের ৩য় বাইক। প্রথম বাইকটি ছিল FZS V3 এবং ২য় বাইকটি ছিল R15 V3। আসলে Yamaha এর প্রতি সবসময় একটি দুর্বলতা সব সময় কাজ করে। আমার ভালোবাসার ৩টি বাইক এর সাথে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে । আমার আগের ২টি বাইক নিয়ে আমি ১০০% সেটিসফাই ।
আমার বর্তমান বাইকটি নিয়ে আপনাদের মাঝে বিস্তারিত কিছু শেয়ার করব। বর্তমান বাইকটা অর্থাৎ R15M আমার স্বপ্নের একটি বাইক । আমার বাইক প্রেমি হবার কারণ হচ্ছে আমি দুই চাক্কা যানবাহন খুব ভালোবাসি। ছোটবেলায় আমার বাইসাইকেল ছিল। এটি নিয়ে অলি-গলিতে ঘোরাফেরা করতাম।
বড় ভাইদের যখন বাইক নিয়ে ঘুরতে দেখতাম তখন মনের ভিতর একটা ইচ্ছা বা আকাঙ্খা হতো বড় হয়ে হয়তো আমারও একদিন বাইক হবে । বাইকটি আমি কিনেছিলাম ROAD & RACE মালিবাগ ইয়ামাহার শোরুম থেকে । আমি বাইকটি ক্রয় করি ৫,৩০,০০০ টাকায় । তখন বাইকটি অফিসিয়াল আসেনি বাংলাদেশে ।
আমার বাইকটি যখন প্রথম চালিয়ে নিয়ে বাসায় ফিরি তখন ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তের মধ্যে একটি যা মুখে বলে বা লিখে বোঝানোর মত নয়। বাইকটি ক্রয় করার পিছনে প্রথম কারণ হল এই বাইকের লুকস আমার খুবই পছন্দের।
এছাড়াও আমার এই বাইকটির বেশ কিছু ফিচার পছন্দের আছে যেমন, এর মিটার। বাইকের লুকিং অন্যান্য বাইকের চেয়ে স্টাইলিশ যা আমার কাছে খুব ভালো লাগে। তবে আমার বাইকটি সার্ভিস নিয়ে কষ্ট পোহাতে হয়। বাইকটি আনঅফিসিয়াল হওয়াতে সবসময় ঢাকা থেকে সার্ভিস করতে হয়।
তবে আমার বাইকটির ব্রেক ইন পিরিয়ড আমি সঠিকভাবে মেনে চালিয়েছি। আমাদের সবার-ই উচিত ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনে বাইক রাইড করা। কেননা ভবিষ্যতে ভালো পারফর্মেন্স পেতে হলে এটা মেনে চলতে হবে।
ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় অর্থাৎ ২৫০০ কিলোমিটার পযর্ন্ত ৫০০০ আরপিএম এ বাইক চালাতে হবে। ইঞ্জিনে কোনো প্রেশার দেওয়া যাবেনা। আমি সবসময় বাইকের মেইনটেনেন্স এর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে অবশ্যই মেইনটেনেন্স ঠিকঠাকভাবে করতে হবে।
ইঞ্জিন অয়েল সময়মতো পরিবর্তন, চেইনে গিয়ার অয়েল দেওয়া, চাকায় সঠিক এয়ার প্রেশার রাখা, মাঝে মধ্যেই বাইক ওয়াশ করা ইত্যাদি। বাইকটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি বাইকটি সব সময় পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে রাখি। তাতে বাইকটি যেমন পরিষ্কার থাকে তেমনি দেখতেও ভালো দেখা যায়।
আমি ইঞ্জিন অয়েল Yamalube Full Synthetic RS4GP ব্যবহার করি। এর দাম ১৭৫০ টাকা । প্রতিটা ইঞ্জিন অয়েল এর সাথে একটি করে অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি ।
এখন পযর্ন্ত বাইকটিতে মডিফিকেশন করেছি অনেক । RCB E2 Clutch System এবং RCB S1 Master Brake Pump ,RCB
break hose pipe , Jomthai Chain & Sproket Full Syatem , Hurrycan Airfilter আরো অনেক কিছু মডিফিকেশন করেছি । এখন পর্যন্ত মডিফিকেশনে ৭০০০০+ টাকা খরচ হয়েছে ।
Yamaha R15M বাইকটির কিছু ভালো দিক-
- রেডি পিকাপ
- মাইলেজ
- স্টাইলিশ লুক
- ট্রাকশন কনট্রোল
- কুইকশিফটার
- ইঞ্জিন পারফর্মেন্স
- এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম
- লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন
- প্লাস্টিক কোয়ালিটি এবং রং এর মান তুলনামূলক ভালো v3 থেকে।
- কমফোর্ট ভাল v3 থেকে।
- মিটার ডিটেইলস অনেক।
Yamaha R15M বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- হালকা ব্যাক পেইন হয় তবে R15 V3 থেকে কম
- হেড লাইটের আলো কম কিন্তু V3 থেকে ভালো
- R15 V3 থেকে পাওয়ার কম
- চেইন থেকে সাউন্ড আসে
বাইকটি সিটি এবং লং রাইড এর জন্য বেস্ট অপশন । তার পরও অনেক এর ভালোনাও লাগতে পারে। কিন্তু আমি বাইকটি নিয়ে সেটিসফাইড । সর্বপুরি শেষ কথা নিজের নিরাপত্তা নিজের কাছে । আশা করি সবাই নিজের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ভাল মানের হেলমেট পরে বাইক চালাবেন এবং চেষ্টা করবেন সেফটি গিয়ার ব্যবহার করার জন্য।
রাস্তার সব নিয়ম মেনে বাইক রাইড করবেন। বেশি গতিতে বাইক চালাবেন না। সময় এর চাইতে জীবনের মুল্য অনেক বেশি। ধন্যবাদ ।