Bajaj Platina লক্ষ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - নিশাত তামজীদ

This page was last updated on 31-Jul-2024 03:24am , By Shuvo Bangla

আমি মোঃ নিশাত তামজীদ । আমি সাবগ্রাম বগুড়া বসবাস করি । আজ Bajaj Platina বাইক নিয়ে আমার মালিকানা রিভিউ শেয়ার করবো ।

bajaj platina

বাজাজ প্লাটিনা বাইক নিয়ে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো । ছোটবেলা থেকে বাইকের প্রতি ছিল আমার অনেক নেশা ও আবেগ । ভাবতাম আমিও একদিন বাইক রাইড করব ।

 বাইক চালানো শিখা -

বাইকটি ছিল আমার আব্বুর । ২০১৮ সালের শুরুতে আমি ছোট কাকার সাথে জেদ ধরলাম যে আমি বাইক চালানো শিখব তো কাকা আমাকে নিয়ে গ্রামের একটা রাস্তায় নিয়ে গিয়ে নিজের হাতে আমাকে বাইক চালানো শিখিয়েছেন কিছুক্ষণের মধ্যে আমি বাইক চালানো আয়ত্ত করে ফেললাম ।

বাইক চালানো শিখার পরের দিন বিকালে আমি বাসায় না বলে বাইক নিয়ে বের হয়েছিলাম। কিছুদূর যাওয়ার পরে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায় আমি অনেক চেষ্টার পরেও বাইক স্টার্ট করতে পারিনি হতাশ হয়ে বসে ছিলাম কিছুক্ষণ পর দেখি আব্বু আসছে আব্বু বাইক স্টার্ট করে দিল তারপরে আব্বুকে পিছনে নিয়ে বাইক চালাইয়ে বাসায় আসলাম সেদিনে প্রথম আব্বুকে পিছনে নিয়ে বাইক চালাইছি তখন নিজের অনুভূতিটা বলে বোঝানো সম্ভব নয় ।

বাইকটা আমার আব্বুর কিন্তু আমি বাইকটা ৬৭ হাজার কিলোমিটার চালানোর পরে পাই এখন বর্তমানে বাইকটি ৯৯,৩০০ কিলোমিটার চালানো হয়েছে । তাই বাজাজ এর শোরুম থেকে বাইক কেনার ঘটনা বলতে পারছিনা ।

সর্বোচ্চ গতি -

বাজাজ প্লাটিনা বাইক এর সর্বোচ্চ গতি হাইওয়েতে ৮৫ কিলোমিটার তুলতে পেরেছি । মাইলেজ প্রতি লিটার শহরে ৪৭ কিলোমিটার প্লাস হাইওয়েতে ৫০ কিলোমিটার প্লাস ।

নিয়মিত বাইক ড্রাইভিং -

এখন নিয়মিত কলেজ প্রাইভেট মিলে ৪০ কিলোমিটার বাইক চালানো হয় । এছাড়াও বন্ধুদের সাথে টুকিটাকি ঘুরতে যাওয়া হয়
আমি সব সময় আমার বাইক নিরাপদে রাইড করতে পছন্দ করি কারণ বাড়িতে আমার মা আমার জন্য অপেক্ষা করছে আমার লাশ এর জন্য না ।

bajaj platina

কলেজে বা প্রাইভেট এ যেতে দেরি হলেও ওভার স্পিডে বাইক রাইড করি না কারন না পৌঁছানোর চেয়ে দেরীতে পৌঁছানো ভালো । আমি সব সময় হেলমেট ব্যবহার করি আমি আমার বাইকটা কে ভালোবাসি । বাইকটা আমাকে খুব ভালো পারফরম্যান্স দেয় ।

লং ড্রাইভ -

প্লাটিনা বাইক নিয়ে আমি যেই দিন গাইবান্ধা ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি কলেজে যাই সেই দিন একটানা ৫২ কিলোমিটার বাইক চালাই রাস্তার মাঝে কোনো সমস্যা হয়নি । বাজাজ এর ইঞ্জিন গুলো অনেক লং লাস্টিং হয় ।

Bajaj Platina বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • দুই জন পিলিয়ন নিয়ে সহজেই বাইক রাইড করা যায়
  • ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়
  • লং টাইম ইউজ করার জন্য বেস্ট একটা বাইক
  • লংটাইম বাইক রাইড করার ফলে কোন সমস্যা হয় না
  • বাজাজ প্লাটিনা বাইক এর সকল পার্টস সবজায়গাতেই পাওয়া যায়
  • বাইকটির সিট হাইট কম্ফোর্টেবল হওয়াতে বাইক চালাতে সাচ্ছন্দ্য বোধ মনে হয়
  • টেকশই মেটালের ১১ লিটার ফুয়েল ট্যাংক
  • বাইকের কন্ট্রোলিং চমৎকার
  • ইন্জিন কেপাসিটি ১০২ সি সি যা প্রয়োজন অনুযায়ী পাওয়ার ডেলিভারি করে
  • বাইকটি মজবুত

বাইক নিয়ে এক্সিডেন্ট -

আলহামদুলিল্লাহ তেমন কোন বড় ধরনের এক্সিডেন্ট এর সম্মুখীন হয়নি কিন্তু কিছুদিন আগে কলেজে যাওয়ার সময় আমি যখন বাইক রাইড করি হঠাৎ একটি কুকুর বাইকের সামনের চাকার সাথে বাড়ি খায় বাইকটা ব্যালেন্স ঠিক ছিলো এবং আল্লাহতালা বাঁচিয়েছেন বাইক নিয়ে পড়ে যাইনি । শুধু হ্যান্ডেল বার টা একটু বেঁকে গেছিল পরে সেটা সোজা করে নিয়েছিলাম।

বাইক মেইনটেনেন্স - 

  • ১০০০কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করা
  • টুকিটাকি কোন ত্রুটি হলে সঙ্গে সঙ্গে সেটা ঠিক করে নেওয়া
  • সপ্তাহে একদিন চাকার প্রেসার পরীক্ষা করা

সার্ভিসিং -

৬৭ হাজার কিলোমিটার থেকে ৯৯ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত মোট ৫ বার সার্ভিসিং করানো হয়েছে । ভাবনা মোটরসাইকেল রিপেয়ারিং হাউস থেকে ।

bajaj platina

বাইকের পার্স পরিবর্তন -

সামনে ও পিছনের দুইটা টায়ার পরিবর্তন করা হয়েছে । MRF টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে । রিং পিস্টন পরিবর্তন করা হয়েছে। ৮০ হাজার কিলোমিটারে যখন আমি বাইক সার্ভিসিং করাই সার্ভিসিংয়ের পরের দিনে আমি যখন কলেজে যাই তখন বাইকের ইঞ্জিনের ভিতরে অনেক শব্দ হচ্ছিলো ।

কিন্তু আমি ওই ভাবে বুঝতে পারনি কিছুক্ষণ পরে বাইকটি বন্ধ হয়ে যায় অনেক চেষ্টা করে বাইকটি স্টার্ট করতে পারিনি তারপরে বাইকটি সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে গেলাম তারপরে ওরা বাইক চেক করে দেখে বাইকে একটুও ইঞ্জিন অয়েল নেই জার করণে বাইকের রিং পিস্টন নষ্ট হয়ে যায় এবং রিং পিস্টন নতুন লাগাতে হয় ।

কাদের জন্য এই বাইক  -

আমার মত স্টুডেন্ট যাদের কলেজ বা প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার জন্য বেশি মাইলেজ এবং কম বাজেটের মধ্যে বাইক দরকার তারা বাজাজ প্লাটিনা বাইক কিনে নিতে পারেন । যারা নতুন তারা এই বাজাজ প্লাটিনা বাইকটি নিতে পারেন ।

সবাই সকল বাইকার এর জন্য দোয়া করবেন । সকল বাইকারের প্রতি ভালোবাসা রইলো সকল বাইকার কে আল্লাহতালা হেফাজত করুক আমার মতামতে কোথাও ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো । ধন্যবাদ টিম বাইকবিডিকে এই রকম আয়োজন করার জন্য ।

লিখেছেনঃ মোঃ নিশাত তামজীদ
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।