হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে বাইকারদের করনীয়
This page was last updated on 30-Jul-2024 03:36pm , By Ashik Mahmud Bangla
বাইরে চলছে প্রচণ্ড তাপদাহ , আর এই সময়টাতে যারা সারাদিন বাইক নিয়ে বাইরে থাকেন তাদের হিট স্ট্রোক থেকে সচেতন থাকা প্রয়োজন। আর আমরা সবাই জানি এই গরমে সারাদিন হেলমেট পড়ে বাইক চালানো কতটা কষ্টকর। আমরা বাইকাররা যদি একটু সাবধান থাকি তাহলে আমরা নিরাপদ থাকতে পারবো।
হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে বাইকারদের করনীয়
একজন মানুষের যখন হিট স্ট্রোক হয় তখন অনেকেই বুঝতেই পারেন না তার হিট স্ট্রোক হয়েছে। কিন্তু এটা বুঝা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
হিট স্ট্রোক হচ্ছে সেটা কিভাবে বুঝবেন?
● মাথা ঝিমঝিম করা
● অসংলগ্ন আচরণ
● নিশ্বাস দ্রুত হওয়া
● রক্তচাপ কমে যাওয়া
● ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া ও ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়া
● প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
● ত্বক শুষ্ক ও লালচে হয়ে যাওয়া
● রোগী অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারে
প্রতিরোধের উপায়
গরমের দিনে আমরা বাইকাররা যদি কিছু নিয়ম মেনে চলি তাহলে হিট স্ট্রোক থেকে নিরাপদ থাকবো।
● বাইক চালানোর সময় ঢিলেঢালা পোশাক পরুন, হালকা রঙের সুতির কাপড় হলে ভালো হয়। অনেকেই আছেন যারা এই গরমেও ভারি উইন্ড ব্রেকার পরে বাইক রাইড করেন ধূলা থেকে বাঁচতে। যদি উইন্ড ব্রেকার ব্যবহার করেন তাহলে পর্যাপ্ত বাতাস প্রবেশ করে এমন উইন্ড ব্রেকার ব্যবহার করুন।
● খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া দুপুর বেলা বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। আর আপনি যখনি বাইরে বের হবেন আপনার সাথে অবশ্যই একটা পানির বোতল রাখুন।
● ফুল ফেস হেলমেট পরে বাইক চালানোর সময় শরীর খারাপ লাগলে হেলমেট খুলে কোন ছাউনি বা গাছের নিচে বিশ্রাম নিয়ে নিন। এই সময়টাতে বেশি বেশি পানি পান করুন এবং মুখে পানি দেয়ার চেষ্টা করুন।
● যদি সম্ভব হয় তাহলে ডাবেন পানি এবং বিভিন্ন ফলের জুস পান করার চেষ্টা করুন।
● যেসব ভাইয়েরা রাইড শেয়ার করে থাকেন , তাদের উদ্দেশ্যে বলছি আপনারা যখন বাইক নিয়ে অপেক্ষা করেন তখন চেষ্টা করুন একটু ঠান্ডা স্থানে অবস্থান করতে। যেমন কোন গাছের নিচে অথবা কোন ছাউনির নিচে।
● দীর্ঘ সময় জ্যামে বসে থাকলে হেলমেট খুলে ফেলুন , আবার বাইক চালানোর সময় পরিধান করুন।
চিকিৎসা
কারও হিট স্ট্রোক হলে দ্রুত যেসব ব্যবস্থাগুলো নিতে হবে,
■ রোগীকে অপেক্ষাকৃত শীতল কোনো স্থানে নিয়ে যেতে হবে
■ ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিন, ফ্যান ছেড়ে দিন বা বাতাস করুন
■ প্রচুর পানি বা খাবার স্যালাইন পান করতে দিন
■ কাঁধে-বগলে অথবা কুঁচকিতে বরফ দিন
■ দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।
হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে যা খাবেন
কাঁচা আমের শরবত
গরমে কাঁচা আমের জুস খুবই উপকারী। এটা শরীর ঠাণ্ডা রাখে এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
পেঁয়াজের রস
হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচার অন্যতম ভালো উপায় হলো পেঁয়াজের রস। অনেকেই এর ঝাঁজালো স্বাদ পছন্দ করে না। তবে এর রস ঔষধি গুণাগুণ সম্পন্ন। পেঁয়াজের রস গরম থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে।
ডাবের পানি
এর গুণাগুণ সম্পর্কে প্রায় সবারই জানা। দুপুরের গরম থেকে মুক্তি পেতে ডাবের পানি পান করুন, সতেজ অনুভব করবেন। এটা তাৎক্ষণিকভাবে তৃষ্ণা মেটায় ও দীর্ঘক্ষণ আর্দ্রতা বজায় রাখে।
অ্যালোভেরার শরবত
রোদপোড়া থেকে বাঁচতে অ্যালোভেরার শরবত অনন্য। এটা হজমে সাহায্য করে, বুক জ্বালাপোড়া কমায় এবং পেটের নানা রকম সমস্যা দূর করে। গরমে প্রতিদিন এক গ্লাস অ্যালোভেরার শরবত পান করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে আসে।
মাঠা
আয়ুর্বেদ শাস্ত্রমতে প্রতিদিন এক গ্লাস মাঠা খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী। এটা প্রোবায়োটিক্সয়ের ভালো উৎস এবং গরমে পানিস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। তাই গরমের অস্বস্তি থেকে বাঁচতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় মাঠা যুক্ত করুন।
তেঁতুলের শরবত
সুস্বাদু এই শরবত সবাই খুব পছন্দ করে। তাছাড়া গরমে এই শরবত খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপযোগী। ভিটামিন এবং ইলেকট্রোলাইট সম্পন্ন তেঁতুল গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি পেটের নানা ধরনের সমস্যা সমাধান করে।
ধনিয়া ও পুদিনার শরবত
এই প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি শরবত গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখে। যা উন্নতমানের ‘ডিটক্সিফাইইয়িং’ বা শরীরের দূষিত পদার্থ বের করে দেয়ার জন্য উপযুক্ত পানীয়। খালি পেটে পান করলে তা শরীরের জন্য বেশি ভালো।
বাইকার ভাইদের প্রতি অনুরোধ থাকবে সব সময় নিজের দিকে খেয়াল রাখুন, নিজে সুস্থ থাকুন এবং নিরাপদ থাকুন।