রাইডিং এর সময় শরীর ব্যাথা হওয়ার ৫টি কারন এবং সমাধান
This page was last updated on 30-Jul-2024 10:14am , By Ashik Mahmud Bangla
বাইক রাইডিং এর সময় শরীর ব্যাথা হওয়া অনেক বড় একটা সমস্যা। আমাদের মধ্যে যারা নিয়মিত বাইক রাইড করেন না অথবা এক টানা অনেক সময় বাইক রাইড করেন তাদের অনেকের ক্ষেত্রে শরীরের বিভিন্ন স্থান ব্যাথা হয়ে যাওয়া কমন একটা ব্যাপার। শরীরের বিভিন্ন স্থান ব্যাথা অনেক কারনেই হতে পারে, তবে নিজেদের কিছু অভ্যাসের পরিবর্তন করে এই ব্যাথার পরিমান অনেক অংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
আজ আমি আপনাদের সাথে এই বিষয় নিয়ে বিস্তারির আলোচনা করার চেষ্টা করবো। সবার প্রথমে আমাদের এটা সনাক্ত করতে হবে আমাদের শরীরে কোন কোন স্থান ব্যাথা হচ্ছে।
রাইডিং এর সময় শরীর ব্যাথা হওয়ার ৫টি কারন এবং সমাধান
১- নিজের জন্য ভুল বাইক নির্ধারণ করা
রাইডিং এর সময় শরীর ব্যাথা হওয়ার অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে এটা। আমরা অধিকাংশ মানুষ বাইক কেনার সময় এই দিকটি খেয়াল করি না। যেই বাইকটি দেখতে ভালো, ব্রান্ড জনপ্রিয় এমন একটা বাইক কিনে ফেলি। কিন্তু তারপর শুরু হয় আসল সমস্যা, যখন বাইকটি আপনি রাইড করতে থাকেন তখন আস্তে আস্তে শরীরে এক একটা সমস্যা দেখা দেয়।একটা জিনিস সব সময় খেয়াল রাখবেন, আমাদের সবার শরীরে গঠন এক না। আমার কাছে যেই বাইকটা কম্ফোর্টেবল আপনার কাছে সেটা কম্ফোর্টেবল নাও হতে পারে। তাই এই জিনিসটি সব সময় খেয়াল রাখবেন। আপনি বাইকটা মূলত কিসের জন্য কিনছেন সেটা আগে নির্ধারন করুন।
আমাদের সবার বাইক কেনার কারন এক হয় না, কেউ দেখা যায় জীবিকার জন্য একটা বাইক কিনে, কেউ আবার ট্যুর দেয়ার জন্য। তাই নিজের জন্য সঠিক বাইক নির্বাচন করা অনেক বড় একটা ব্যাপার। আপনার বাইক যদি আপনার শরীরের সাথে না যায়, তাহলে রাইডিং এর সময় শরীর ব্যাথা এবং পরবর্তিতে আরও অনেক সমস্যা আপনার দেখা দিবে। হয়তো আপনি সাথে সাথে সেটা বুঝতে পারবেন না, কারন বয়স যখন অল্প থাকে তখন অনেক কিছুই গায়ের জোরে করা যায়। কিন্তু একটা সময় পর গিয়ে এগুলা আপনার জীবনে বড় সমস্যা তৈরী করবে।
২- সঠিক পজিশনে বাইকে না বসা
তরুণ অনেক বাইকার ভাইকে দেখি যারা ভুল পজিশনে বাইকে বসেন। আর যখন আপনার বাইকে বসার পজিশন ঠিক থাকবে না তখন আপনার শরীরের বিভিন্ন স্থানে এমনিতেও ব্যাথা হবে। অনেককে দেখি বাইকে বাকা হয়ে বসে বাইক রাইড করেন, হয়তো ডান দিকে অথবা বাম দিকে বেশি চলে যান। আপনি যদি এইভাবে বসে বাইক চালান তাহলে আপনার শরীর ব্যাথা হবেই। আবার অনেকেই আছেন যারা অকারনে মেরুদণ্ড বাকা রেখে বাইক চালান, আর আপনি যদি নিয়মিত এই পজিশনে বাইক চালাতে থাকেন তাহলে আপনার ব্যাক পেইনের সমস্যা হবেই।
আরও পড়ুন >> বাইকে মরিচা কিভাবে দূর করা যায় ? কি কি ক্ষতি হয়
আবার কিছু কিছু রাইডার আছে যারা পা গিয়ার লিভারের ভেতর দিয়ে দিয়ে নিচের দিয়ে দিয়ে রাখে, এই অভ্যাসটা অনেক বাজে একটা অভ্যাস। এটা দেখতেও যেমন বাজে লাগে তেমন আপনার পায়ের জয়েন্টে সমস্যা হওয়ার চাঞ্চ অনেক বেড়ে যায়। আর এই অবস্থায় আপনি যদি এক্সিডেন্ট করেন তাহলে আপনার পায়ের ক্ষতি সবার আগে হবে।
বাইকে যখন বসবেন তখন পা ছড়িয়ে রাখবেন না, কারন এতে করে আপনার শরীরে ব্যাথা হবে। শুধু শরীর বেথা না, পা ছড়িয়ে বসলে বাইক নিয়ন্ত্রণেও কিছুটা সমস্যা হয়ে থাকে। সব সময় পা দিয়ে ফুয়েল ট্যাংক শক্ত করে চেপে ধরে বাইক রাইড করুন। এতে আপনার হাটুতে ব্যাথাও হবে না আর বাইকে নিয়ন্ত্রণ ও ভালো পাবেন।
৩- কম্ফোর্টেবল গ্রিপ ব্যবহার না করা
বাইক চালানোর সময় আমাদের ডান হাত সবচেয়ে বেশি এক্টিভ থাকে। সামনের ব্রেক ধরা, থ্রটল ঘোরানো এই কাজগুলো ডান হাত দিয়েই করতে হয়। তাই দেখা যায় আমাদের অনেকের ডান হাতের কব্জি এবং হাতের তালু অনেক সময় ব্যাথা করে। এর থেকে বাচতে নরম গ্রিপ এবং Throttle Holder ব্যবহার করে দেখতে পারেন, আশাকরি কিছুটা সমাধান পাবেন।
৪- হ্যান্ডলবার এডজাস্ট ঠিক না থাকা
আমাদের একেক জনের গায়ের গঠন একেক রকম, তাই সবার দিক ঠিক রেখে আলাদা আলাদা ভাবে কখনোই বাইক বানানো সম্ভব না। তবে অধিকাংশ বাইকেই এডজাস্টমেন্ট এর সুযোগ থাকে, তাই আপনি যখন বাইক কিনবেন তারপর হ্যান্ডলবার, সিট হাইট এডজাস্টমেন্ট নিজের মতোন করে এডজাস্ট করে নিন। তাইলে আপনার কোমরে ব্যথা, জয়েন্টে ব্যাথা এই সমস্যাগুলো অনেক অংশেই কমে যাবে।
৫- শরীরে অপ্রয়োজনীয় প্রেশার না দেয়া
বাইক রাইডের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা আমাদের অনেকের রাইডিং স্টাইলের কারনে হয়ে থাকে। তাই আপনি যখন বাইক রাইড করবেন তখন শরীরে অপ্রয়োজনীয় চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকুন। মনে করুন আপনার অযথা বাউলি দেয়া বা কর্নারিং করার কোন দরকার নেই , কিন্তু তারপরও অনেকেই এই কাজটি করেন। এর ফলে শরীরে একটা অতিরিক্ত চাপ পরে এবং বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা শুরু হয়।
নিজের কিছু বাজে অভ্যাস,রাইডিং ধরন পরিবর্তন করুন এবং নিজের জন্য সঠিক বাইক নির্বাচন করুন দেখবেন আপনার রাইডিং এর সময় শরীর ব্যাথা হওয়া অনেকটাই কমে গেছে। সব সময় নিজের বাইকের পাশাপাশি নিজের দিকেও খেয়াল রাখুন।
ধন্যবাদ