বিডি রাইডার্স ক্লাবের অসাধারন আয়োজনঃ গো কারটিং

This page was last updated on 04-Jul-2024 09:57am , By Shuvo Bangla

ফেব্রুয়ারির ২২ তারিখ কয়েকজন রেসার ও কয়েকজন বাইক প্রেমী ফ্যান্টাসি কিংডমে গিয়েছিল গো- কারটিং করার জন্য, যেটা ঢাকা থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে আশুলিয়াতে অবস্থিত । সম্পূর্ণ আয়োজনটি অর্থাৎ “চল গো-কারটিং করি” আয়োজন করেছিল বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বাইকিং গ্রুপ  বিডি রাইডার্স ক্লাব এবং আয়োজনটি সফল করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছে বাইকবিডি ও বিডি গোস্ট রাইডার্স ।

বিডি রাইডার্স ক্লাবের অসাধারন আয়োজনঃ গো কারটিং

বিডি রাইডার্স ক্লাব

দিনটি শুরু হয়েছিল ধানমণ্ডির ইউল্যাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সকাল ৮ টা থেকে বাইকারদের আসার মধ্য দিয়ে। একটির পর একটি অসাধারন বাইক যেমন এসওয়াইএম উলফ, পালসার, হাঙ্ক, এবং স্পোর্টস বাইক ইয়ামাহা আর১৫ ভি২  ও হোন্ডা সিবিআর ১৫০ আর ছাড়াও ছিল হিরো হোন্ডা গ্ল্যামার । সকলেই যেন প্রস্তুতি নিয়েই এসেছে গো-কারটিং এর জন্য । অনেকের জন্যই এটা ছিল প্রথমবারের মত আবার অনেকের জন্য এটা ব্যবসাও বটে । পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী একটি কার ও ১৪ টি বাইক নিয়ে আমরা আমাদের ভ্রমণ শুরু করলাম । যদিও আমরা অনেক লোক-সমাগম আশা করেছিলাম কিন্তু এই অসাধারন দিনটি উপভোগ করার জন্য মাত্র ২৯ জন লোকের সমাগম ঘটল ।

র‍্যালিটির নেতৃত্ব দিচ্ছিল দুটি এসওয়াইএম উলফ বাইক যেগুলো চালাচ্ছিলেন এসওয়াইএম মোঃ আলী নেওয়াজ ও পিয়াস জিআরজেড । যদিও সকালে রাস্তা ফাঁকা ছিল কিন্তু সকলে ২ বাই ২ আকারে লাইন করে অবস্থান করল এবং সামনে ছিল ফটোগ্রাফারসহ একটি কার । সকলেই সকালের স্নিগ্ধ আবহাওয়া উপভোগ করছিল । উত্তরার হোটেল রিজেঞ্চি পর্যন্ত সবকিছুই ঠিক ছিল, সেখান থেকে একটি পালসার ১৮০ ও একটি হিরো হোন্ডা গ্ল্যামার হঠাৎ করেই নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু করে দিল ফলে সকলে লাইন ভেঙে বেরিয়ে গেল । প্রত্যেকেই নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে গেল । তখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াল কে কার আগে যাবে । একজন শান্ত চালকসহ একটি সুন্দর বাইক হঠাৎ একটি দানবে পরিণত হল । এ সময় আমার মনে হল আমি যেন ঢাকার রাস্তায়  “আইজেল ম্যান টিটি” দেখছি ।

কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আগেই দলের দুইজন বড় ভাই শুভ্র সেনরাসেল রাইডার সকল বাইকারকে নিয়ে আব্দুল্লাহপুরে একত্রিত হলেন । তারা সবাইকে রেস না করতে ও বাজে ভাবে বাইক না চালাতে অনুরোধ করলেন কেননা আমরা সকলেই যাচ্ছিলাম আনন্দ করতে কিন্তু এভাবে রাফ চালালে একটি আনন্দের ভ্রমণ নিমিষেই সবার জন্য দুঃখ বয়ে আনতে পারে । আমি বিস্ময়করভাবে লক্ষ্য করলাম যে সকল বাইকারই তাদের কথা শুনলো এবং এর পর থেকে কেউ আর লাইন না ভেঙে অত্যন্ত সুন্দরভাবে এগিয়ে চলল ।

যেহেতু আমরা ফ্যান্টাসি কিংডমে যাচ্ছিলাম তাই গতির রাজ্যে প্রবেশ করার পূর্বেই আমরা নাস্তা করে নিলাম । যেহেতু আমরা পারকিং লটে ছিলাম পিয়াস একটি নুড়ি পাথরের টুকরো খুঁজে পেল তাই আমরা কিছুক্ষন মজা করার ও কিছু ফুট প্যাগ হুইলি এবং রোলিং স্টপি করার সিদ্ধান্ত নিলাম যা সেখানে যারা উপস্থিত ছিল সকলেই স্বাগত জানালো ।

go carting fantasy kingdom

মোট ২৯ জনের মধ্যে মাত্র ১৬ জন রেসে অংশগ্রহন করবে বাকিরা তাদেরকে সমর্থন জানানোর পাশাপাশি নিজেরা মজা করবে । এটা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত রেসের প্রতিযোগিতা যেখানে সবাই মজা করেছিল যদিও ১৬ জন প্রতিযোগী খুবই সিরিয়াস মুডে ছিল । অনেকেই ভালো প্রতিযোগিতা করেছে অনেকেই দেয়ালের সাথে টায়ার লাগিয়ে দিয়ে ধাক্কা খেয়েছে । অবশেষে ৩ জন নির্বাচিত হল যাদের মধ্যে তুষার ছিল শীর্ষে, আমরা সকলেই জানি যে সে ফর্মুলা১ এ অংশগ্রহণের জন্য চেষ্টা করছে এবং এ লক্ষ্যে সে গত বছর ভারতে ফর্মুলা৪ সিরিজে অংশগ্রহন করেছিল । দ্বিতীয় হয়েছিল বিআরসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈকত ও আমি তৃতীয় হই । পিয়াস চতুর্থ হয় ।

fantasy kingdom

যদিও সকল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরাই সকল পুরষ্কার পেয়ে থাকে কিন্তু এ প্রতিযোগিতাটি একটু ভিন্ন ধরনের । চারজন শীর্ষ প্রতিযোগীর সকলকেই ফ্যান্টাসি কিংডমের পক্ষ থেকে উপহার দেয়া হয় যা নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ । তারা আমাদেরকে একই সাথে কুলের বিভিন্ন পণ্য দেয় । দিনটি শেষ হয়েছিল লোকজনের তাদের সাথে ছবি তোলার মধ্য দিয়ে । চলে যাওয়ার পূর্বে গোস্ট রাইডার্স এর প্রতিষ্ঠাতা পিয়াস জিআরজেড ও বিডি রাইডার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা প্রতিষ্ঠাতা রাসেল রাইডার নিজেদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধের নিদর্শন হিসেবে তাদের অফিসিয়াল টি-শার্ট বিনিময় করলেন । এর মাধ্যমে তারা প্রমাণ করলেন যে যদিও তাদের সংঘটন দুটি পৃথক কিন্তু তাদের নিজেদের মধ্যে প্রচুর শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে ।

Also Read: বিডি রাইডার্স ক্লাব

ঢাকায় ফেরার পথে আমরা সমস্যাই পড়লাম । আমরা শুনলাম যে ঢাকায় সমস্যা মানে দাঙ্গা হচ্ছে এবং একথা শুনে কার ও বাইকসহ আমরা কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়লাম । কিন্তু স্রষ্টাকে অশেষ ধন্যবাদ যে আমরা নিরাপদেই বাড়ি ফিরতে পেরেছিলাম । আসলে আমাদের নিরাপদে বাড়ি ফেরার পিছনে বেশ কিছু কারণ ছিল যেমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা ৮ টি ও ৬ টি বাইকের দুটি গ্রুপে ভাগ হয়ে যায় । প্রথম গ্রুপ দ্বিতীয় গ্রুপের ১০ মিনিট পূর্বে পৌঁছায় । বাইক ও চালকদের নিয়ে এটা ছিল একটি অসাধারন দিন । আশা করি এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতে আরও বেশী পরিমাণে করা হবে ।

-ওয়াসিফ আনোয়ার