Honda Hornet 160R ABS শখের বাইকে স্বপ্নপূরণ - এজাজ
This page was last updated on 30-Jul-2024 02:43pm , By Shuvo Bangla
আমি এজাজ। আজ আপনাদের আমার Honda Hornet 160R ABS বাইকটি নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করবো। জীবনে একটি মাত্র শখ ছিল আমার যে কোন একদিন একটি বাইকের মালিক হব। কিন্তু কিছুতেই বাবা মা কে রাজি করাতে পারিনি।
Honda Hornet 160R ABS শখের বাইকে স্বপ্নপূরণ
কিন্তু চ্যালেঞ্জ করেছিলাম, ২০২০ সালের মধ্যে যেভাবে হোক নিজে একটি বাইক কিনব। দীর্ঘদিনের জমানো টাকা মিলিয়ে মনে হল এবার একটা বাইক কেনা যায়, কিন্ত কোন মতেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলাম না কোন বাইকটা কিনবো।
Honda Hornet 160R ABS বাইকটি আমি প্রথম দেখি একদিন রাস্তায়। বাইকটি যখন আমার পাশ দিয়ে চলে গেল, এর এগ্রেসিভ লুকটা আমার ভালো লেগে গেল এবং পেছনের টেল লাইটটা দেখে আমি পুরোই প্রেমে পরে গেলাম বাইকটির।
সিদ্ধান্ত নিলাম আমার বাইকের শখটা Honda Hornet 160R ABS বাইকটি কিনেই পূরণ করব। আর যেহেতু বাইক মানেই নিরাপত্তা নিয়ে একটু শঙ্কা, সেহেতু সর্বাধুনিক ব্রেকিং সিস্টেম (এবিএস) সমৃদ্ধ বাইকটা কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহন করি।
অবশেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ আমি মগবাজার এর অফিসিয়াল Honda Showroom থেকে বাইকটি ক্রয় করি। শোরুম থেকে ডেলিভারি পাওয়ার পরই আমি বাইকটি নিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ২৬০ কিলোমিটার পথ চালিয়ে নিয়ে আসি।
একদম নতুন বাইক এতদূর চালিয়ে নিয়ে যেতে অনেকেই নিষেধ করেছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে কোন সমস্যা ছাড়াই পৌছে যাই।
তখন থেকে হর্নেট আমার প্রতিদিনের পথ চলার সাথী। প্রতি মাসেই ১/২ বার আমাকে লং ট্যুর করতে হয় বাইকটি নিয়ে। প্রথম ২০০০ কিলোমিটার ব্রেক ইন পিরিয়ড ভালোভাবে মেইনটেইন করার ইচ্ছা থাকলেও ১৫০০ কিলোমিটারের পর সেটা আর হয়নি।
ব্রেক ইন পিরিয়ডের সময় ৩ বার ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করেছি এবং ৪-৫ হাজার আরপিএম-এ বাইক চালানোর চেষ্টা করেছি। লং ট্যুরের ক্ষেত্রে প্রতি ৩০/৪০ কিলোমিটার পর পর ১০ মিনিটের বিরতি দিয়েছি এবং ১ মাস পরেই প্রথম সার্ভিসিং করিয়েছি।
অভ্যাস না থাকার কারনে প্রথম লং ট্যুরের সময় প্রচন্ড কবজি এবং ব্যক পেইন অনুভব করি। তবে পরবর্তীতে আর কখনোই কোন ধরনের পেইন অনুভব করিনি।
Honda CB Hornet 160R Test Ride Review By Team BikeBD
ব্রেক ইন পিরিয়ডের সময় বাইকটির ইঞ্জিন কেমন যেন জ্যাম মনে হয়েছে। তখন বাইকটি চালিয়ে সন্তুষ্ট হতে পারছিলাম না। ব্রেকিং, কন্ট্রোল,মাইলেজ নিয়ে কোন অসন্তুষ্টি ছিল না। তবে ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হওয়ার সাথে সাথে ইঞ্জিনের স্মুথনেস বাড়তে থাকে। থ্রটল রেসপন্সও ভাল পেতে লাগলাম। বাইকটি আমি এখন পর্যন্ত ৪৫০০ কিলোমিটার চালিয়েছি।
দ্বিতীয় সার্ভিসিং এর পর বাইক পুরোপুরি স্মুথ হয়ে গেছে। এর আগে যত বাইক চালিয়েছি খুব কম বাইক-ই পেয়েছি হর্নেটের মত এত স্মুথ।
বাইকটি দিয়ে আমি এখন পর্যন্ত টপ স্পিড তুলেছি ১২০ কিলোমিটার/ঘন্টা। হাই স্পিডে বাইকটি খুবই স্টেবল, কোন প্রকার ভাইব্রেশন অনুভব করিনি এবং হাই স্পিডেও খুব ভাল ব্রেকিং এবং কন্ট্রোল পেয়েছি।
Honda Hornet 160R ABS বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- সর্বপ্রথম বলা যায় বাইকের রেডি পিকআপ খুবই কম। ১৬০সিসি বাইক হিসেবে রেডি পিক আপ আর একটু ভালো থাকা প্রয়োজন ছিল।
- বাইকের হেডলাইটের আলো পুরোপুরিই হতাশাজনক। রাতে এই হেডলাইটের আলোয় বাইক চালানো খুবই বিপজ্জনক।
- বাইকের বিল্ড কোয়ালিটি কিছুটা দূর্বল মনে হয়েছে। প্লাস্টিক কোয়ালিটিও খুব একটা ভাল লাগেনি আমার কাছে।
- বাইকের এক্সস্ট সাউন্ডটা আরেকটু ভারী হলে বাইকের সাইজ এবং লুকের সাথে ভালো মানাত।
- হাই আরপিএম-এ বাইকটির মাইলেজ খুবই কম।
- আফটার সেলস সার্ভিস বিশেষ করে চট্টগ্রাম হোন্ডা সার্ভিস সেন্টারে খুব একটা সন্তোষজনক নয়।
Honda Hornet 160R ABS বাইকটির কিছু ভাল দিক-
- Honda Hornet 160R ABS বাইকটির ভাল দিক বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় বাইকটির পারফর্মেন্স অসাধারণ। বাইকটির ইঞ্জিন খুবই স্মুথ।
- বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম আমার মতে এই সেগমেন্টে সেরা। যত স্পিডেই চালাইনা কেন, ব্রেকিং এর ক্ষেত্রে কোন রকম চাকা স্কিডিং বা কনফিডেন্স হারানোর মত কোন প্রকার সমস্যা ফিল হয়নি।
- থ্রটল রেসপন্স তুলনামূলক কম হলেও হাই আরপিএম-এ এর ইঞ্জিনের ক্ষমতা খুব ভাল। এবং হাই স্পিডে কোন ভাইব্রেশন ফিল হয় না।
- ১৬০ সিসির বাইক এবং ১৪০ সেকশন রেয়ার টায়ার হওয়া সত্ত্বেও বাইকটির মাইলেজ খুবই ভালো। ৪-৬ আরপিএম এ চালালে বাইকটি থেকে এভারেজ ৪৫+ মাইলেজ পাওয়া যায়। যা আমার মতে সন্তোশজনক।
- বাইকটির লুক অসাধারণ। বিশেষ করে বাইকটির টেল লাইট খুব-ই সুন্দর।
- বাইকটির সিটিং পজিশন খুব চমৎকার। ঘন্টার পর ঘন্টা চালালেও কোন প্রকার ব্যাক পেইন ফিল হয় না।
- বাইকটি নিয়ে খুব চমৎকার কর্নারিং করা যায়। সামনের এবং পেছনের মোটা চাকা কর্নারিং এ খুব ভালো সাপোর্ট দেয়।
- পিলিয়ন সিটটি খুবই কম্ফোর্টেবল।
Honda Hornet 160R ABS বাইকটির চেইন নিয়ে অনেকেরই কমপ্লেইন আছে। তবে আমি আজ পর্যন্ত চেইন নিয়ে কোন সমস্যায় পড়িনি। আমি আমার বাইকের চেইন সবসময় পরিষ্কার এবং লুব করি।
পরিশেষে বলা যায় যে, সব বাইকেরই কিছু ভালো এবং মন্দ দিক থাকবেই। কোন বাইক ই পুরোপুরি পার্ফেক্ট না। বাইক যদিও আমাদের প্রায় সকল ছেলেরই স্বপ্ন। কিন্তু সেই সাথে বাইক এক্সিডেন্টও সকলের জন দূঃস্বপ্ন।
বাইক চালানোর সময় অবশ্যই ভালোমানের হেলমেট এবং অন্যান্য সেফটি গিয়ার পরিধান করে নিবেন। এই হেলমেট এবং সেফটি গিয়ার যেমন বাইক চালানোর সময় একটু হলেও নিরাপত্তা প্রদান করে ঠিক তেমনি একজন বাইকারকে আরো বেশি ̄স্মার্ট করে তোলে।
সকল বাইকারকে শুভকামনা জানিয়ে আজ এ পর্যন্ত। ধন্যবাদ । আজকে এই পর্যন্ত এবার চলুন দেখে আসি All Honda bike price in Bangladesh এর বিস্তারিত।
লিখেছেনঃ এজাজ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।