Yamaha R15 V3 ৮০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - লিপু

This page was last updated on 19-Nov-2023 04:32am , By Shuvo Bangla

আমি মোঃ জাবির আহমদ লিপু। আপনাদের সাথে Yamaha R15 V3 বাইক নিয়ে ৮০০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতায় মালিকানা রিভিউ শেয়ার করবো ।

Yamaha R15 V3

Yamaha R15 V3 ৮০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - লিপু


আমার বাসা সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। পেশায় বর্তমানে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভারসিটিতে অধ্যয়নরত আছি, পাশাপাশি আব্বুর বিজনেস দেখাশুনা করতেছি । বর্তমানে আমি এই বাইকটি ব্যবহার করছি। বাইকটি ইয়ামাহার শোরুম থেকে ক্রয় করে ইতিমধ্যে ৮০০০ কিলোমিটার অতিক্রম করেছি। আজকে আমি আমার বাইকিং জগতে গল্প ও আমার বাইকের ইউজার রিভিউ শেয়ার করবো আপনাদের মাঝে।

বাইক নামক শব্দটার মধ্য রয়েছে অন্যরকম আবেগ, ভালোবাসা। ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি ছিলো অন্যরকম ভালোবাসা। তখন ৬ষ্ঠ শ্রেনিতে পড়ালেখায় আছি, আব্বুর বাইক ছিলো, কিন্তু ভয়ভীতির কারনে কখনো বলা হয়নি। হঠাৎ একদিন শখের বসে কাছের এক বড়ভাই কে বললাম বাইক চালানো শিখানোর জন্য, ঐদিনই উনি আমাকে নিয়ে বাইক করে বেরিয়ে পড়েন, বলতে গেলে উনার হাত ধরে বাইককে প্রথম যাত্রা শুরু।

Yamaha R15 V3

প্রথমত বাইক চালানো শিখি HONDA CD 80 বাইক দিয়ে পরে আব্বুর বাইক Hero Honda Glamour 125, যেটা আব্বুর এখনও আছে, মাঝেমধ্যে সেটা রাইড করি, তারপর আমার জিবনের প্রথম বাইক কিনি যেটা ২০১৭ সালে । এই বাইক কিনতে গিয়ে অনেক বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হতে হয়, এই বাইকের কারণে অনেক মারও খেতে হয়েছে আম্মুর কাছে,কোনোকিছু পেতে হলে একটুতো কষ্ট করতেই হয় ।

আমার বেলায়ও তেমনটিই ঘটেছিলো। আমি বাইক কেনার ইচ্ছা পোষণ করি। প্রথমে আব্বু রাজি না হলেও পরবর্তীতে আমাকে বাইকটি কিনে দেওয়ার ইচ্ছা পুষন করেন। জিবনের প্রথম বাইক Bajaj Discover 150, বাইকটি কেনার পর যেই আনন্দ উল্লাস করেছি সেটা ২০১৭ সালে অনুভব করছি।

তারপর ২০১৮ তে Hero Honda HUNK150, ২০১৯ শে Bajaj Pulsar150, শেষমেশ নেকেড সেগমেন্ট এর বাইক ২০২০ সালে SUZUKI Gixxer Black 155 কিনি। কিন্তু এগুলো রাইড করলেও স্পোর্টস বাইকের প্রতি ছিল আমার অন্যরকম নেশা ও দূর্বলতা। ভেবেচিন্তে উঠতে পারছিলাম না কি করবো।

Yamaha R15 V3

এইদিকে মাত্র কদিন হলো SUZUKI Gixxer 155cc বাইকটা কিনলাম, কিন্তু এটাতে আমি কোনভাবেই কমফোর্ট ফিল করতে পারছিলাম না, যার কারনে শেষমেশ এটা সেল করে দেই। বাইক নেই বাইক ছাড়া তো আর থাকতে পারি না, আলহামদুলিল্লাহ, অনেক ভেবেচিন্তের পরে সিদ্ধান্ত নিলাম আমার একটা স্পোর্টস বাইক লাগবে।

শখের কোনো জিনিস কিনতে গেলে মনে অন্যরকম একটা আনন্দ কাজ করে। আমি কয়েক রাত পুরোটাই জেগে ছিলাম আর বিভিন্ন বাইকের ইউটিউবে ইউজার রিভিউ দেখতেছিলাম। কিন্তু স্পোর্টস বাইকে যে আমি আসক্ত তাই সিদ্ধান্ত নিলাম ইয়ামাহা ব্রান্ডের স্পোর্টস বাইক কিনবো যেই কথা সেই কাজ নিয়ে নিলাম পছন্দের বাইকটি ।

Yamaha R15 V3

৮০০০ কিলোমিটার বাইকটি রাইড করি । বাইকটিতে রয়েছে ১৫৫ সিসির লিকুইড কুল ইঞ্জিন, তার সাথে রয়েছে 6 স্পিড গিয়ার বক্স, বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে USD ফ্রন্ট সাসপেনশন, ফ্রন্ট টায়ারে রয়েছে 100/80-17 এবং রেয়ার টায়ারে 140/70-17 সাইজের টায়ার দেওয়া হয়েছে, এবং ডাবল ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। বাইকটা কোন ভাবেই আমাকে হতাশ করেনি।

প্রতোক বাইকে ভালো এবং খারাপ উভয় দিক বিদ্যামান থাকে। ঠিক তেমনই আমার R15 V3 তে ও ভালো দিক খারাপ দিক রয়েছে। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে এগুলো বলবো।

Yamaha R15 V3 বাইকের ভালো দিক -

  • খুবই সুন্দর স্পোর্টস লুক ও সিটিং পজিশন
  • লিকুইড কুল ইঞ্জিন
  • অসাধারণ ব্রেকিং সিস্টেম
  • থ্রটল রেসপন্স যা এক কথায় অসাধারণ

Yamaha R15 V3 বাইকের খারাপ দিক -

  • শুরুর দিকে ইঞ্জিন একটু গরম হবে।
  • প্রাথমিক পর্যায়ে মাইলেজ কম পাওয়া যায়।
  • হাইওয়েতে লাইটের তীব্রতা কম লাগে আমার কাছে।

যখন আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এই বাইকটি কিনবো তখন অনেকেই আমাকে বাঁধা দেয় ইন্ডিয়ান বাইক প্লাস্টিক কোয়ালিটি ভালোনা নানা কথা বলেছিলো অনেকে। ওভার হিট হয়ে যায়, ভালো দিক গুলো কেউ তুলে ধরেনি সবাই খারাপগুলোই বলেছে। তাই আমি কারো কথায় কান না দিয়ে আমার শখের বাইকটি নিয়ে নিলাম।

বাংলাদেশে আমার কাছে সব থেকে বেস্ট বাইক মনে হয় এটা। কারন এর স্পোটি লুক আর ফিচার আর কোন বাইকে পাই নাই। আমার বাইকের ব্রেকিং নিয়ে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট। কারন বাইকটি অন্যান্য বাইকের তুলনায় খুবই কম স্কিড করে। এবং মজার বিষয় হচ্ছে এটাতে ABS ব্রেক ব্যবহার করায় আমাকে মুগ্ধ করেছে, যা আমাকে প্রতিনিয়ত অবাক করে।

Yamaha R15 V3

আমার বাইকের সর্বোচ্চ টপ স্পিড ১৪৬ এবং আমি ৩ গিয়ারে বাইক ১০৫ স্পিড তুলতে সক্ষম হয়েছি। আর ওভারটেকের সময় বাইকের থ্রাটল রেসপন্সটা এক কথায় অসাধারণ যা বলার বইরে। আমার বাইকে সিটিতে ৩৬-৩৮ এবং হাইওয়েতে ৪২-৪৪ পাই। বাইকের পাওয়ারটা অসাধারণ যা সর্বদা আমাকে মুগ্ধ করে।

প্রত্যেক বাইকে কিছু সমস্যা থাকে যা আমাদের সবার বিবেচনা করা উচিৎ। বাইকটি লং রাইডের জন্য বেস্ট বাইক বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ বাইকবিডিকে এধরণের কন্টেস্ট আয়োজন করার জন্য, এবং সকল বাইকারকে অনুরোধ করব বাইক চালানোর সময় সাবধানে রাইড করুন ভালো মানের সার্টিফাইড হেলমেট, সেফটিগার্ড পরে বাইক চালাবেন, উচ্চ গতি পরিহার করুন, সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরতে পারলেই আপনি একজন প্রকৃত বাইকার। ধন্যবাদ ।

 

লিখেছেনঃ মোঃ জাবির আহমদ লিপু

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।