Yamaha Fazer Fi V2 ১২,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - নির্জন
This page was last updated on 15-Jul-2024 04:57pm , By Raihan Opu Bangla
আমি মোঃ নাছিমুল আক্তার নির্জন। আমার ঠিকানা হারাগাছ, রংপুর, আমি এখন Yamaha Fazer V2 বাইকটি ব্যবহার করতেছি, আমি আপনাদের সাথে আমার সব থেকে পছন্দের বাইকের সম্পর্কে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Yamaha Fazer Fi V2 ১২,০০০ কিমি মালিকানা রিভিউ
Yamaha Fazer V2 বাইকটি বর্তমানে আমি ১২,০০০+ কিলোমিটার চালাইছি। এই ১২ হাজার কি মি রাইডের মধ্যে থেকে বাইকটির ভালো খারাপ দিক গুলো আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ।
বাইক চালানো শিখেছিলাম বাবার কাছ থেকে, যখন বাইক চালানো শিখেছি তখন আমি ক্লাস ৪ এ পড়ি, হঠাৎ এক দিন বাবা বলতেছে যে আজ তোমাকে বাইক চালানো শিখাবো, আমি তো এই কথা শুনে অবাক, পরে বাবা আমাকে সব কিছু বুঝায় দিলো, বাইকে চাবি দিয়ে অন করলাম, স্টার্ট দিলাম গিয়ার দিবো তখনই স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেলো।
বাবা আবার ভালো করে বুঝিয়ে দিলো যে, গিয়ার দিয়ে ধিরে ধিরে ক্লাছ ছেড়ে দিবে আর পিকআপ বাড়াবে, এভাবে বাইক চালানো শুরু হয়ে গেলো, তখন আমার বাবার বাইক ছিলো Bajaj Discover 135 সি সি।
প্রথম দিন থেকে আজ পর্যন্ত বাইক নিয়ে কোন প্রকার সমস্যা হয়নি , তখন থেকে ইচ্ছা ছিলো নিজে একটা বাইক কিনবো, SSC পরিক্ষা দিয়ে বাসায় মা কে বললাম যে বাবা কে বলে আমাকে একটি বাইক কিনে দাও , মা বাবাকে কথা টা জানালো । বাবা রাজি হলো না।
মা পরের দিন বিকেলে আমাকে জানালো তোমার বাবা বাইক কিনে দিবে না। শুনে খুব কষ্ট পেলাম, আমিও জেদ ধরে বসলাম যে বাইক কিনে নিবো, পরে বাবাকে নানা কষ্টে রাজি করালো মা, কলেজে ভর্তির কিছু দিন পর বাবা বললো যে কি বাইক কিনতে চাও ।
Also Read: ৬ লক্ষ টাকার মধ্যে ইয়ামাহা বাইক এর দাম
তখন আমি আমার ভালো লাগার বাইকের নাম বললাম । Yamaha Fazer V2 বাইকটি আমার আগে থেকে পছন্দ । বাবা Yamaha Fazer V2 বাইকটি কিনে দিতে রাজি হলো । বাইকটি পছন্দ করার কারন ছিলো বাইকটির অসাধারণ লুকস,মাইলেজ,বিল্ড কোয়ালিট ।
পরের দিন বাবা আমাকে নিয়ে বাইক কিনতে গেলো রংপুর শহরে, রংপুরের জিয়া মটরস্ থেকে বাইকটি কিনেছিলাম। বাইকটি ২,৬৮,০০০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছিলাম ।
বাইকের চাবি হাতে তুলে দেয়ার আগে বাবা আমাকে ওয়াদা করিয়েছিল আমি যেন বাইকের টপ স্পিড না তুলি, আমি বাবা কে সবার সামনে কথা দিয়েছিলাম যে বেপরোয়া হয়ে গাড়ি চালাবো না। আমার ইচ্ছে পূরন হলো, পছন্দের বাইকটি কিনতে পারলাম ।
বাইক চালিয়ে যখন বাসায় আসি সেই অনূভুতি কি ছিলো তা বলে বুঝাতে পারবো না। বাসায় এসে বাইক থেকে নেমে মাকে জরিয়ে ধরি আর বলি যে তুমি যদি বাবা কে রাজি না করাতে তাহলে আমার স্বপ্ন পূর্ণ হতো না,মা আমাকে বলে তুমি আজকে খুশি তো? আমি বলি আজকে আমি অনেক খুশিতে আছি,মা আরও একটি কথা বলেছিল মন দিয়ে পড়াশোনা করবা আর সাবধানে বাইক চালাবে।
বাইকের মাইলেজ পাচ্ছি ৪০-৪১ প্রতি লিটারে। Fi টেকনোলজি ইঞ্জিন, এয়ার কুলিং সিস্টেম, ১৪৯ সিসি ইঞ্জিন সব মিলে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। শো-রুম থেকে চারটি ফ্রি সার্ভিসিং পেয়েছিলাম। তারা প্রতিবার আমার সমস্যা গুলোর কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে বাইকে সার্ভিসিং করে দিয়েছে । আমার বাইকে এখনো বড় ধরনের কোন সমস্যা হয়নি ।
আমি বাইকের সঠিক যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি । কোন সমস্যা হলে আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকলে বাবা বাইকটি সার্ভিসিং করতে নিয়ে যায়। আমি ১০০০ বা ১১০০ কিলোমিটার মধ্যে ইঞ্জিল অয়েল পরিবর্তন করি।
বাইক কেনা থেকে শুরু করে এখনো ইমালুব 10w40 ব্যবহার করি দাম ৪৯৫ টাকা। বেশ কয়েকবার অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করেছি এক বার এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করেছি, আর হাইড্রোলিক ব্রেক পরিবর্তন করেছি একবার। বাইকের লুক অসাধারণ হওয়ায় এখনো কোন প্রকার মডিফাই করি নাই ।
টপ স্পিড সম্পর্কে আর কি বলবো ওই যে বাইক কেনার সময় বাবাকে কথা দিয়েছিলাম যে বেপরোয়া ভাবে বাইক চালাবো না, তাও ৭৫/৮০ তুলেছিলাম এক দিন।
Yamaha Fazer V2 বাইকটির কিছু ভালো দিক-
- মাইলেজ
- বিল্ড কোয়ালিটি
- কম্ফোর্ট
- অসাধারণ লুকস
- কম্ফোর্ট পিলিয়ন সিট
Yamaha Fazer V2 বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- হেড লাইটের আলো কম যা হাইওয়ের জন্য পর্যাপ্ত নয়
- পিছনে হাইড্রোলিক ব্রেক নেই
- রেডি পিকাপ কম হওয়ায় হাইওয়েতে বড় গাড়িকে ওভারটেক করতে সমস্যা হয় অনেক বেশি
- লং ট্যুরে গেলে বাইকটির সাউন্ড এর সমস্যা হয় সাময়িক ভাবে
- এই বাইকের ইঞ্জিন খুব গরম হয়
বাইকটি নিয়ে মন্তব্য হলো বাইকটি সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে অনেক দিন টিকবে। এখন পর্যন্ত বাইকটি আমাকে হতাশ করেনি ।
এ পর্যন্ত লং ট্যুরে যাইনি সর্বোচ্চ বগুড়া গিয়েছিলাম । বাইকটি লং ট্যূর এর জন্য ব্যবহার করতে পারেন । তবে যারা রেডি পিকআপ বেশি চান তাদের জন্য এই বাইক নয় । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মোঃ নাছিমুল আক্তার নির্জন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।