TVS Apache RTR 150 - মালিকানা রিভিউ - Md.Shariful Islam

This page was last updated on 30-Jul-2024 04:19am , By Shuvo Bangla

আসসালামু আলাইকুম, আমি মোঃ শরিফুল ইসলাম। আমার বাসা ঢাকা জেলার সাভার থানার বাগ্নিবাড়ি গোলাপ গ্রাম) গ্রামে। আমি পেশায় একজন প্রভাষক। আমি ৭ বছর যাবত TVS Apache RTR 150 (2014) বাইকটি ব্যবহার করছি। আজ আমি আপনাদের কাছে তুলে ধরব, আমার বাইকটির সাথে কাটানো আমার ৭ বছরের এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।TVS Apache RTR 150

TVS Apache RTR 150 - মালিকানা রিভিউ

প্রথমত, আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব, আমার বাইক চালানো শেখার অভিজ্ঞতা। ছোটবেলা থেকেই বাইক এর প্রতি আমার অন্যরকম এক আকর্ষন কাজ করে। ২০১১ সালে যখন আমি কলেজের ১ম বর্ষের ছাত্র, তখন আমার বন্ধু আকমল এর বাবার Yamaha RX বাইকটি দিয়ে আমি বাইক চালানো শিখি। তখন থেকেই ভাবতাম কবে যে আমি নিজে একটি বাইক কিনব।

২০১৩ তে HSC পরীক্ষা শেষে আমি Walton Swift 80 (Auto Clucth) বাইকটি ক্রয় করি। বাইকটিতে কোন Clutch ছিল না, আমি এটা 2nd hand ক্রয় করেছিলাম শুধুমাত্র বাইক রাইডিং এ দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য। তখন থেকেই আমি Online এ ঘাটাঘাটি করতাম, কোন বাইকটি আমার জন্য ভালো হবে। আমার Bajaj Pulsar 150 বাইকটি খুব ভালো লাগতো।RTR

কিন্তু একদিন যখন আমি আমার পুরাতন বাইক নিয়ে গেরেজে যাই, সেখানে আমি TVS Apache RTR বাইকের একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পাই। ওই বিজ্ঞাপনের ৩ টি বিষয় আমার মনকে ছুয়ে দেয়।

১- বাইকের লুক

২- বিজ্ঞাপনে লেখা ছিল ভয়ংকর স্পিড

৩- হাই স্পিড রেকর্ড

TVS Apache

কিছুদিন পর, আমি আমার বন্ধু বাদলকে নিয়ে কাউকে কিছু না বলে চলে যাই TVS Showroom এ। সেদিন সরাসরি বাইকটি দেখে আমি সিদ্ধান্ত নেই যে, আমি TVS Apache বাইকটাই কিনব। আম্মুকে সব বলার পর আম্মু রাজি হল, তারপর ২০১৪ সালের ডিসেম্বর এর ২৭ তারিখ শনিবার আমার এক কাকা কে নিয়ে চলে যাই বাইক কেনার উদ্দেশ্যে TVS Showroom ( Savar Nama Bazar Branch ) এ, সেখানে মাত্র ২ টি রঙের বাইক ছিল।

তার মধ্যে থেকে সাদা রঙের বাইকটি আমার পছন্দ হয়। বাইক কিনতে গেলে কি কি নিয়ে যেতে হয় তা আমার জানা ছিল না। তারা বলল যে, Passport Size Photo, NID Copy, Utility Bill (for registration) লাগবে। আমি বিকেলে গিয়ে সব কাগজ পত্র দিয়ে আসি। বাইক কেনার সময় রেজিষ্ট্রেশন এর টাকা+ হেলমেট সহ আমার মোট বিল হয় ২,২৫,৪০০ টাকা।টিভিএস

বাইকটি বাসা পযন্ত আমার কাকা চালিয়ে নিয়ে আসে। বাসায় আসার পর কাকা যখন আমার হাতে বাইক এর চাবি দিল, আমার তখনকার আনন্দ আর অনুভূতি আমি বলে বুঝাতে পারব না। ১ম রাইডিং এই আমি বুঝতে পারি যে, এই বাইকের রেডি পিকাপ সম্পর্কে। আর এর জন্যই এই বাইকের নাম Apache RTR ( Raching Throttle Response )

এমনিতেই আমি খুব স্পীডে বাইক চালাইতে পছন্দ করি না। আমি যানতাম না ব্রেক ইন পিরিয়ড সম্পর্কে। ৪০০ km এর পর আমি বাইকের ১ম সাভিসিং করাই, এবং বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। তারপর নিয়ম অনুযায়ী বাইকের সবগুলো ফ্রী সার্ভিসিং TVS Authorised Service Center থেকে করাই। প্রথম প্রথম আমি মাইলেজ নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম।

আমি বাইকের মাইলেজ পেতাম ২৫-৩০, ১০০০০ কি.মি. পর TVS Tejgaon Service Centre এ গিয়ে আমার Milege কম এর কথা বলি এবং বাইক সার্ভিসিং করাই। তারপর আমার মাইলেজ হয়ে যায় সিটিতে ৩৮-৪০ এবং হাইওয়েতে ৪২-৪৫ কি.মি। প্রতি ৮০০ কি.মি পর পর আমি বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি।আরটিআর আমি Havoline 20W 40 ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। ঢাকাতে জ্যামের মধ্যে পিলিয়ন নিয়ে রাইডিং এর সময় আমি খুব সমস্যার সম্মুখীন হই। বাইকের কন্ট্রোলিং আর ব্রেকিং ছাড়া এই বাইকের সবকিছুই আমার খুভ ভালো লাগে। আমি প্রতি মাসে ২ থেকে ৩ বার আমার বাইক ওয়াস করি। রঙটা সাদা হওয়ার কারনে ময়লা টা একটু বেশি ই হয়। Apache RTR এর প্রধান সমস্যা হচ্ছে চেইন, আমাকে প্রতি মাসে অন্তত একবার হলেও চেইন টাইট দিতে হয়।

দীর্ঘ ৭ বছরে, আমি চালিয়েছি ৪৭,৫৩০ কি.মি. , এর মধ্যে আমি ৩ টি চেইন স্পোকেট, ২ টি ব্যাটারি, ২ টি ক্লাচ প্লেট, ১ টি পিষ্টন পরিবর্তন করেছি। আলহামদুলিল্লাহ, আমি এখনও আমার বাইকে খুব সন্তুষ্ট। আমার বাইক এখনো আমার কাছে নতুন এর মতই রয়েছে। কারন, আমি প্রতি ৩ মাস পর পর এখনো আমার বাইকের সার্ভিসিং করাই।

আর ব্রেকিং এর কথা, সবাই বলে RTR এর ব্রেকিং ভালো না, কিন্ত আমার কাছে শুরু থেকেই ভালোই মনে হয়েছে, আর যখন আমি আমার বাইকের সামনে পিছনের চাকায় TVS tyre এর পরিবর্তে MRF Tyre ব্যবহার করি, তখন থেকে ব্রেকিং টা আরও জোস হয়ে যায়।

বাইকের ভালো দিকগুলোঃ

১- হাই স্পিড রেকর্ড
২- বাইকের ডিজাইন টা অনেক সুন্দর (স্পোর্টি লুক)
৩- ইঞ্জিন সাউন্ড
৪- মাইলেজ
৫- ইঞ্জিন পাওয়ার, স্পীড অন্য সকল প্রতিযোগি বাইক থেকে খুব দ্রুত উঠে
৬- সিটিং পজিশন

বাইকটির কিছু খারাপ দিকঃ

১- চেইন লুজ হয়ে যায়।
২- কন্ট্রোলিং
৩- বাইকের পার্টসের দাম একটু বেশি

আলহামদুলিল্লাহ আমি আমার TVS Apache RTR 150 বাইকটি নিয়ে খুশি আছি। আমার রিভিউতে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ।

লিখেছেন - Md. Shariful Islam

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন। আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।