Suzuki Gixxer SF FI 155 কর্নারিং করার জন্য খুব ভালো- শোয়াইব
This page was last updated on 16-Jul-2024 02:01pm , By Raihan Opu Bangla
আমার নাম শোয়াইব আহমেদ। আমি একজন ছাত্র। আমি ২০২০ সালে এসএসসি পাস করি। বর্তমানে আমি ড্যাফোডিল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র। আমি একটি Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইক ব্যবহার করি । আজ আমি আমার Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইকটি নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
Suzuki Gixxer SF FI 155 কর্নারিং করার জন্য খুব ভালো
আমার বাসা ঢাকার জুরাইন মুরাদপুরে। আমার জীবনের প্রথম কেনা বাইক Suzuki Gixxer SF FI 155। আমি ছোট বেলা থেকেই বাইক পছন্দ করতাম। কিন্তু বাইক কিনতে পারবো এটা ভাবতেই অবাক লাগে। অনেক আগে থেকেই আম্মুর কাছে বলতাম এসএসসি পাশ করলে বাইক কিনে দিতেই হবে। সেটা শোনার পর আম্মু বলতো তোর আশা আর পূর্ণ হবে না। কারণ আমিই একমাত্র ছেলে আর আমার একটা বোন আছে।
আমি এসএসসি পরীক্ষা দেয়ার পর মার্চ মাস থেকে আমার এলাকার এক বড় ভাই নাম খালিদ ওর সাথে আমি অনলাইনে কাজ করি। ২ জন মিলে কাজ করতাম পার্টনার হিসেবে। ২ জনে মিলে যা ইনকাম করতাম আবার ২ জনে মিলে তা খরচ করতাম।
এভাবে ৪ মাস কাজ করতে করতে আমরা প্রায় দেড় লক্ষ টাকার মতো ইনকাম করে ফেলছি। হঠাৎ করে আমার বাইক কেনার ইচ্ছে হয় । তার পর আমি একদিন বাসায় আম্মুরে বলি বাইক কিনবো কিনে দাও। আম্মু রাজি হচ্ছিলনা । একদিন বাসায় বললাম আমার কাছে ৬০ হাজার টাকা আছে আমারে বাইক কিনে দিলে দিতে পারো আর না হলে আমি টাকা গুলো কিন্তু খরচ করে ফেলবো।
টাকা নষ্ট না হওয়ার কথা ভেবে আম্মু আব্বুকে গিয়া এসব কথা বললো। পরে হটাৎ করে একদিন আব্বু আমার রুমে এসে বলে কি বাইক কিনবি দাম কত কেমন বাইক দেখতে ইত্যাদি ইত্যাদি বললো। তার পর আমি দীর্ঘ ১ মাস অপেক্ষা করার পর বাইক কিনে দিলো।
ছোট বেলায় অনেককেই বাইক চালাতে দেখতাম। বাইক দিয়ে অনেক জায়গায় ঘুরে বেড়ানো যায়। বাইক দিয়ে প্রকৃতি দেখার মজাই আলাদা । ফেসবুকে অনেক পোস্ট দেখতাম ঘুরতে যাওয়া বাইক দিয়ে সেখান থেকেই বাইকিং পছন্দ এবং ভালোবাসার কারণ হয়ে উঠলো।
Suzuki Gixxer SF FI 155 First Impression Review In Bangla – Team BikeBD
আমি যেসময় বাইক কিনবো ভাবছি তখন থেকেই বিভিন্ন বাইক কোম্পানি অফার দেয়া শুরু করে দিয়েছে। ইয়ামাহা, টিভিএস , সুজুকি এগুলোতে । হটাৎ করে সুজুকি কোম্পানীয়ের দিকে আমার নজর যায়। বাইক গুলো দেখতে খুবই সুন্দর।
Suzuki Gixxer SF FI 155 কালো কালার টা দেখতে অনেক সুন্দর। বাইক ব্যবহার করছি ভ্রমন করার জন্য। কোন জায়গায় ঘুরতে গেলে বাইক দিয়ে যাবো। রাস্তা-ঘাট , পাহাড়-পর্বত ,সমুদ্র-সৈকত ইত্যাদি আরো অনেক জায়গায় ই ঘুরতে যাওয়ার জন্য বাইক কিনেছি ।
আবার আমার ক্যাম্পাসে যাওয়া আসা করার জন্য। ধানমন্ডি যেতে প্রায় সময় ই অনেক জ্যাম পরে। এতে করে বাইক দিয়ে তাড়াতাড়ি আসা যাওয়া করতে পারবো। সেকারণেই বাইক ব্যবহার করছি। আমার বাইকটির দাম নিয়েছে ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকা ।
বাইকটা পুরান ঢাকার বংশাল এর ওমেগা মটর্স থেকে কিনেছি। বাইক কিনতে যাওয়ার দিন আব্বু আর আব্বু বন্ধু লিটন কাকা আর লিটন কাকার ছেলে আমার বন্ধু এক ক্লাসে পড়তাম আমরা ৪ জন যাই। ধোলাইপাড় অগ্রণী ব্যাংক থেকে আব্বু টাকা তুলে সেখান থেকে আমরা ৪ জন ২ রিকশায় করে বংশাল যাই। আমি আর আমার বন্ধু লিয়ন এক রিকশায় আর আব্বু আর লিটন কাকা এক রিকশায় করে ওমেগা মটর্স এর সামনে গিয়েছি।
গিয়ে দেখি একটা মাত্রই বাইক ছিল Suzuki Gixxer SF FI 155 ২০১৮ এর এটাই লাস্ট এর পরে আর কোন বাইক আসবে না এই মডেলের। তারপর টাকা জমা দিয়ে কিনে ফেললাম Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইকটি ।
বাইকটি প্রথমবার চালানোর মুহূর্ত ছিল অসাধারণ বাইকটা কিনে বের করার পর টেস্ট ড্রাইভ দিয়ে খুব মজা পেয়েছি। তার পর আমার বন্ধু লিয়নকে পিছনে বসিয়ে বাসা পর্যন্ত এনেছি। আমার বাইকের রঙ নীল । কিন্তু আমার পছন্দ ছিল কালো রঙ। কিছু চিন্তা না করেই যেটা আছে সেটাই নিয়ে নিলাম। আমার বাইক কেনার পর মোট ৩টি সার্ভিস করিয়েছি।
৫০০ কিলোমিটারের পর আমি প্রথম সার্ভিস করাই ওমেগা মটর্স এর সার্ভিস সেন্টার থেকেই। প্রথম সার্ভিস তা ভালোই লেগেছে অনেক কিছুই করে দিছে। ইঞ্জিন অয়েল ও পরিবর্তন করি সাথে অয়েল ফিল্টার । দ্বিতীয় সার্ভিস সেখান থেকে করি। কিছু দিন আগে আমি তৃতীয় সার্ভিস করি রায়েরবাগ থেকে Bikerz Paradise সার্ভিস সেন্টার থেকে।
বাইকের মাইলেজ ভালো পাই । কারণ আমার Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইকটি FI ইঞ্জিন। আর FI ইঞ্জিন মাইলেজ ভালো দিবে এটাই স্বাভাবিক। লং রোডে মাইলেজ পাই প্রায় ৪৫। সিটিতে হয়তো ৪০ কিলোমিটারের কাছাকাছি পাচ্ছি । বাইক কেনার সময় একটা Motul 20w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল দিয়েছিলো ওটা ব্যবহার করেছি। তার পরে সুজুকি কোম্পানি এর 20w40 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েলটা ব্যবহার করেছি।
এখন আমি Shell 20w40 গ্রেড এর ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। আশা করি ভালো ফলাফল পাবো। আমি বাইকের কোন কিছুই পরিবর্তন করি নাই। যেমন আছে দেখতে ঠিক তেমন রয়েছে। আগামীতে মডিফাই করার ইচ্ছা আছে অনেক কিছুই মডিফাই করবো আশা করি।
বাইকটি দিয়ে কর্নারিং করে খুব মজা পাওয়া যায়। আমার খুব ই ভালো লাগে বাইক দিয়ে কর্নারিং করতে। আমার মতে এই SF বাইক কর্নারিং করার জন্যই। Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইক দিয়ে আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পীড ১২৩।
সব চেয়ে বেশি এটাই তুলেছি মাওয়া রোডে। এর পরে আর এতো স্পীড তোলার প্রয়োজন পরে নাই তাই আর তুলি নাই। এখন যেই রোড যেমন সেটা বুঝেই স্পীড তুলি। কারণ শুধু পিকআপ দিলেই হয় না কন্ট্রোল ও লাগে চালাতে হলে।
Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইকের কিছু ভালো দিক-
- বাইকটি চালিয়ে বেশ কম্ফোর্ট ।
- সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেল এর পজিশন আমার খুব ভালো লেগেছে ।
- ইঞ্জিন পাওয়ার এবং রেডি পিকাপ ।
- কর্নারিং এর সময় বাইক এর ব্যালেন্সিং খুব ভালো ।
- লং রাইডে বেশ ভালো পার্ফরমেন্স পাওয়া যায় ।
Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইকের কিছু খারাপ দিক-
- লং রাইডে বাইকের ইঞ্জিন সাউন্ড পরিবর্তন হয়ে যায়।
- গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কম ।
- বাইকের পার্টস এর দাম তুলনামূলক বেশি ।
- অয়েল সিল খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় ।
- হেডলাইটের আলো খুব কম ।
বাইকটি দিয়ে আমার লং রাইড ছিল ঢাকা থেকে সিলেট । শ্রীমঙ্গল দিয়ে সিলেট গিয়ে চা বাগান থেকে শুরু করে জাফলং, বিছানাকান্দি ঘুরে এসেছি। ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর যাওয়ার ইচ্ছা ছিল সেটা আর যাওয়া হলো না। ইচ্ছে আছে পরবর্তীতে যাবো বাইক দিয়ে।
Suzuki Gixxer SF FI 155 বাইকটি নিয়ে আল্লাহর রহমতে খুবই খুশি আছি। ভালো হোক বা খারাপ হোক তা একান্ত আমার। ভালো খারাপ দিক বিবেচনা করে সবই ঠিক আছে । আমিও খুশি আছি । ধন্যবাদ ।
সুজুকির সব বাইকের দাম এবং সুজুকির শো-রুম সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে আসুন। নতুন নতুন মোটরসাইকেল এর বিষয়ে খবর জানতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ সবাইকে।
লিখেছেনঃ শোয়াইব আহমেদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।