বাহন হিসেবে একটি ৫০সিসি মোটরসাইকেল কতটা সক্ষম?
This page was last updated on 08-Jul-2024 09:52am , By Saleh Bangla
আজকের এই আধুনিক সময়ে অনেক রাইডারের কাছেই ৫০সিসির একটি মোটরসাইকেল নিতান্তই অবহেলিত একটি বাহন মনে হতে পারে। তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে ৫০সিসির মোটরসাইকেল ও স্কুটারের তেমনটা চল না থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এটি একটি বহুল প্রচলিত ও সমাদৃত একটি টু-হুইলার ক্যাটাগরী। তো অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, আসলে একটি ৫০সিসি মোটরসাইকেল কতটা দ্রুত চলতে পারে?
আসলেই একটি ৫০সিসির মোটরসাইকেল কতটা দ্রুত এক্সিলারেট করতে পারে আর কতটাই বা এর টপস্পিড হতে পারে এটি একটি জানার বিষয় হতে পারে। কেননা এই ক্যাটাগরির মোটরসাইকেল যদিও হাইওয়ে রাইডের জন্য যোগ্য বা অনুমোদিত নয় তবু দৈনন্দিন জীবনে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এসব মোটরসাইকেল ও স্কুটার কমিউটার হিসেবে সারাবিশ্বে এখনো সমাদৃত। তো চলুন জেনে নেয়া যাক, বাহন হিসেবে একটি ৫০সিসি মোটরসাইকেল কতটা সক্ষম?
বাহন হিসেবে একটি ৫০সিসি মোটরসাইকেল কতটা সক্ষম?
৫০সিসির টু-হুইলারগুলো হলো সবচেয়ে এন্ট্রি-লেভেল মোটরসাইকেল বা স্কুটার, যা কিনা অনেক ম্যানুফ্যাকচারারই লার্নার মেশিন হিসাবে ডিজাইন করে থাকে। আর এছাড়াও ম্যানুফ্যাকচাররা তাদের প্রডাকশনের বড়ো একটি অংশ ৫০সিসির ইঞ্জিন দিয়ে তাদের এন্ট্রি-ক্লাস কমিউটারগুলি ডিজাইন করে। ফলে কমিউটার মোটরসাইকেল, মোপেড, স্কুটার, ডার্টবাইক এসব ক্যাটগরীর মোটরসাইকেল প্রায় সবই এখনো ৫০সিসি ক্লাস থেকেই শুরু হয়।
আর এসব বাহনের ৫০সিসির ইঞ্জিন যথেষ্ট পাওয়ারফুল হয়ে থাকে, কেননা সেসব ক্যাটাগরী ডেডিকেটেড রাইডিংয়ে সাপোর্ট দেবার জন্যই ডিজাইন করা হয়। সুতরাং, একটি ৫০সিসি মোটরসাইকেল, স্কুটার, বা মোপেডের সক্ষমতা উপেক্ষা করার তেমন সুযোগ নেই। আর এছাড়াও, এখনকার ইঞ্জিন টেকনলোজি এবং তাদের এফিশিয়েন্সি লেভেল পুরানো দিনের মেশিনের তুলনায় অনেক বেশি উন্নত। সেইসাথে এখনকার মেশিনের উল্লেখযোগ্য ফুয়েল এফিশিয়েন্সি একটি আকর্ষনীয় দিক যা ৫০সিসি ক্লাসের মোটরসাইকেলগুলিকে বাজারে সমুজ্জল রেখেছে।
তো সার্বিক বিচারে এখনকার আধুনিক ৫০সিসি ফোর-স্ট্রোক ও টু-স্ট্রোক ইঞ্জিনগুলি আগের তুলনায় অনেক বেশি সক্ষম। এখনাকার ৫০সিসির মোটরসাইকেলগুলি বেশ সহজেই ৪-৬ হর্সপাওয়ারের পাওয়ার ডেলিভারি দিতে পারে, আর সেইসাথে প্রায় একই পরিমান টর্কও উৎপাদন করে। ফলে স্পষ্টত:ই এসব মোটরসাইকেল, স্কুটার, বা মোপেড সহজেই প্যাসেঞ্জার ও সাধারন মালামাল বহনসহ প্রাত্যহিক চলাফেরায় সাপোর্ট দিতে পারে। আর সেকারনেই এগুলি এখনো বিশ্বের বহু দেশে দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও খরচ সাশ্রয়ী বাহন হিসেবে স্বীকৃত।
আর এছাড়া স্পিডের বিচারে প্রাত্যহিক সাধারন কমিউটিংয়ে কিন্তু সত্যিকার অর্থে তেমন বেশি স্পিডের প্রয়োজন হয় না। কেননা প্রতিদিনের সাধারন সিটি কমিউটিংয়ে বড়-ছোট সব মোটরসাইকেল বা স্কাটারকেই কিন্তু মোটামুটি ৪০-৫০কিমি/ঘন্টা স্পিডের ভেতরেই চালাতে হয়। শহুরে ট্রাফিকে কিন্তু এর উপরে চালাবার উপায় নেই। আর একটি ৫০সিসির মোটরসাইকেল, স্কুটার, বা মোপেড কিন্তু অনায়াসেই সারাদিন ৪০-৬৫কিমি/ঘন্টা গতিতে চলতে পারে।
তদুপরি, কিছু কিছু ৫০সিসির মোটরসাইকেল আবার ৬৫-৭০কিমি/ঘন্টা স্পিডেও ছুটতে পারে, যদিও ৫০সিসি ক্যাটাগরীর টু-হুইলারের জন্য এটিকে নিরাপদ গতিসীমা বিবেচনা করা হয় না। কেননা ৫০সিসি ক্যাটাগরীর মোটরসাইকেল বা স্কুটারগুলোর হুইল, ব্রেক, সাসপেনশন, মূলত: সিটিতে কমিউটিংয়ের জন্যই ডিজাইন করা হয়। আর জোর করে এর চেয়ে বেশি স্পিড তোলা এসব মোটরসাইকেলে মোটেও নিরাপদ নয় এবং উচিৎও নয়।
তো সবশেষে বলা যেতে পারে, একটি ৫০সিসির মোটরসাইকেল স্পষ্টত:ই এখনকার সময়ও যেকোন জনপদে একটি কমিউটার হিসাবে চমৎকার সার্ভিস দিতে সক্ষম। আর আক্ষরিক অর্থেই, এসব মোটরসাইকেল ও স্কুটার কমিউটিংয়ের জন্য চমৎকার মেশিন; যা দৈনন্দিন জীবনে ব্যক্তিগত বাহন হিসেবেতো বটেই, উপরোন্ত সাধারন পন্য বহন, যাত্রী পরিবহন, পন্য ডেলিভারী তথা আধুনিক কুরিয়ার সার্ভিসেও অত্যন্ত উপযোগী বাহন হিসেবে স্বীকৃত। সুতরাং, বাহন হিসেবে একটি ৫০সিসি মোটরসাইকেল যথেষ্ট সক্ষম।