Suzuki Gixxer 155 Fi ABS টেস্ট রাইড রিভিউ - টিম বাইকবিডি
This page was last updated on 28-Jul-2024 12:48pm , By Raihan Opu Bangla
২০১৪ সালে লঞ্চ হবার পর Suzuki Bike সেভাবে তাদের বেসিক ডিজাইনের কোন পরিবর্তন নিয়ে আসেনি। শুধু কালার ও রেয়ার ডিস্ক ব্রেক ছাড়া তারা সেভাবে পরিবর্তন করা হয়নি। কিন্তু গত বছর তারা এটা করে দেখিয়েছে। নতুন Suzuki Gixxer এ যুক্ত করা হয়েছে ফুয়েল ইঞ্জেকশন ও সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস। তাই আজ আমরা টিম বাইকবিডি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি Suzuki Gixxer 155 Fi ABS টেস্ট রাইড রিভিউ।
Suzuki Gixxer 155 Fi ABS টেস্ট রাইড রিভিউ
সুজুকি বাইকটিতে বাইরে লুকসের ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিবর্তন এনেছে, সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে বাইকটির সামনের দিকে তারা যুক্ত করেছে পুরোপুরি এলইডি হেডলাইড, যার সামনের দিকে কোন ধরনের ফেন্ডার দেয়া হয়নি। এর কারণে এটি নেকেড লুকস পেয়েছে যা একে স্ট্রিট ফাইটার এটিটিউড এনে দিয়েছে।
এই সেগমেন্টের মধ্যে অন্যান্যদের চেয়ে বাইকটির প্লাস্টিক কোয়ালিটি অনেক বেশি ভাল। যদিও আরও একটু ভাল করা যেত, তবে ফিনিশিং ও ফিটিং নিয়ে সেভাবে কোন অভিযোগ নেই। আমাদের কাছে বাইকের এলইডি হেডলাইট নিয়ে কোন অভিযোগ নেই, অনেক কোম্পানি এখানে এসে কিছুটা এলোমেলো হয়ে যায়, কিন্তু সুজুকি এখনে দারূণ কাজ করেছে, হাইওয়েতে এই হেডলাইট আলো বেশ দারূণ ফিডব্যাক প্রদান করে।
দূর থেকে যদি আমরা বাইকটির দিকে দেখি তবে আমাদের কাছে মনে হয় যে এই বাইকটি দেখত অনেক হ্যান্ডস্যাম বাইক সেটা বলা যায় না। সুজুকি চাইলে হেডলাইটের উপরে কোন প্যানেল যুক্ত করতে পারত, তবে তারা এটা করেনি।
সিটিং পজিশন অনেক আপরাইট এবং আরামদায়ক, বাইকটির পিলিয়ন সিট আগের চেয়ে অনেক বেশি বড় ও প্রশস্ত, এতে করে পিলিয়ন অনেক আরামদায়ক ভাবে বসতে পারে। সুজুকি সুইচ গিয়ার গুলো পরিবর্তন করেনি, তবে স্পিডোমিটারে স্টাইলিং এ পরিবর্তন আনা হয়েছে, এটি আগের চেয়ে অনেক শার্প করে তৈরি করা হয়েছে।
বাইকটি আগের চেয়ে অনেক বেশি মাসকুলার, এর সাথে যুক্ত হয়েছে ১২ লিটারের ফুয়েল ট্যাঙ্ক। সামনের দিকের অনেক বেশি তীক্ষ্ম হবার কারণে খুব সহজে বাতাস কেটে বের হয়ে যায়। এতে আরও যুক্ত করা হয়েছে নতুন এলইডি টেইললাইট, এর সাথে দেয়া হয়েছে এক্সটেন্ডেড রেয়ার টায়ার মাডগার্ড, ও টায়ার হ্যাগার, যাতে করে পিছন থেকে পানি বেশি বিস্তৃত না হয়।
নতুন এই Gixxer অনেক বেশি আরামদায়ক। এই বাইকের হ্যান্ডেলবার অনেক আপরাইট করা, ও ফুট পেগ লো সেন্টার করে দেয়া হয়েছে। এর সিট আগের ভার্সনের চেয়ে কিছুটা নরম, ও আরামদায়ক, সিটের কারণে হাইওয়েতে সেভাবে কোন ধরনের সমস্যা অনুভব হয়নি।
বাইকটি ওজনে ৫কেজি বেশি, তবে এতে করে বাইকটিতে হ্যান্ডেলিং এ কোন ধরনের সমস্যা অনুভব হয় না। তাই বাইকটি কিছুটা হালকা হবার কারণে ব্রেকিং তেমন কোন সমস্যা হয়নি।
এই দিকে সুজুকি বাইকটির আন্ডারবেলি কিছুটা উচু করা হয়েছে, তাই আপনি পিলিয়ন নিয়ে খুব সহজেই স্পিডব্রেকার এর উপর দিকে রাইড করতে পারবেন। তাই স্পিডব্রেকারে সেভাবে কোন রকম সমস্যা হয় না, তবে যদি বড় কোন স্পিড ব্রেকার হয় তবে সেটা সমস্যার কারণ হতে পারে।
বাইকটির স্পিডোমিটার নতুন ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। তবে এতে মোটামুটি সকল ধরনের তথ্য দেখা যায়, এদের মধ্যে আরপিএম মিটার, স্পিড, ফুয়েল গজ, ঘড়ি, ও ওডোমিটার রয়েছে।
নতুন এই Suzuki Gixxer 155 Fi ABS বাইকটি নতুন ভাবে ডিজাইন ও কসমেটিন পরিবর্তন করেলেও বাইকটির ইঞ্জিনে সেভাবে পরিবর্তন আনা হয়নি। বাইকটিতে এখনও দেয়া হয়েছে ১৫৫সিসি, এয়ার কুল্ড, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ফুয়েল ইঞ্জেক্ট, BS6 ইঞ্জিন, যা থেকে সর্বোচ্চ 13.9 BHP @ 8000 RPM এবং 14 NM of Torque @ 6000 RPM শক্তি উৎপন্ন করতে পারে।
সুজুকি এখানে দারূণ একটি ট্রিক করেছে। আপনি যদি চান তবে এই একই ডিজাইনের ভেতর কার্বুরেটর ভার্সন ক্রয় করতে পারবেন। যার ইঞ্জিন থেকে 14.6 BHP শক্তি পাওয়া যায়, আর সেই সাথে একই পরিমান টর্ক উৎপন্ন হয়ে থাকে। আর এই বাইকটিতে কোন এবিএস যুক্ত করা হয়নি।
যেহেতু আমরা দুটি ভার্সন ই টেস্ট রাইড করেছি তাই আমরা বলতে পারি যে এই জিক্সারটি আগের সাথে তুলনা করতে পারবেন না, কারণ জিক্সারের মুল হচ্ছে এর র’ পাওয়ার! কিন্তু এফআই এর কারণে বাইকটি অনেক শান্ত এবং সভ্য বলা যায়। তবে এটা নিয়ে এত ভাবার কিছু নেই, কারণ এটি এখনও Suzuki Gixxer ই রয়েছে।
এফআই হলেও বাইকটি এখনও অনেক এফআই ইঞ্জিনের যুক্ত বাইকের চেয়ে বেশ দারূণ এক্সেলারেট করে থাকে, এবং বাইকটি @ 9000 RPM এ রেভ করে থাকে। ক্লাচ অনেক লাইট এবং গিয়ার শিফটিং স্মুথ।
আপনি যত থ্রটল টুইস্ট করবেন এর ডাবল ব্যারেল এক্সহস্ট, ততটাই গর্জন করবে, কারণ এটি জিক্সারের সিগনেচার। ইঞ্জিন গর্জন করতে বেশ পছন্দ করে থাকে। এক্সহস্টের সাউন্ড বেশ উচু এবং রেস এর অনুভব দিয়ে থাকে।
আপনি লো-এন্ডে টর্ক এবং কুইক এক্সেলারেশন এর কারণে ঢাকা শহরের জ্যামের মধ্যে প্রতিদিনের যাতায়াত বা কমিউটিং বেশ ভাল রেসনপন্স করে থাকে। ৫০০০ আরপিএম এর পর থেকে ইঞ্জিন গর্জন করতে শুরু করে।
Click To See Suzuki Gixxer 155 Fi ABS Test Ride Review
একটি বিষয় আমি দেখতে পেয়েছি যে, যেহেতু বাইকটি আগের চেয়ে বেশ শান্ত ও সভ্য, তবে ৪ নাম্বার গিয়ার যদি আপনি ৮০-৯০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা রাইড করেন তবে আপনি বুঝতে পারবেন না, যতক্ষন না আপনি স্পিডোমিটারের দিকে তাকাবেন।
আপনি ভাবতে পারেন যে জিক্সারের ফান ফ্যাক্ট হারিয়ে গিয়েছে, কিন্তু আসলে তা নয়। আপনি শহরের জ্যামের ভেতর জিগজ্যাগ ভাবে বাইকটি কন্ট্রোল করতে পারবেন। এছাড়া হাইওয়েতে আপনার ওভারটেকিং এ কোন সমস্যা হবে না।
Suzuki Gixxer 155 Fi ABS বাইকটির কর্নারিং এর কথা যদি বলা হয়, তবে এটি আগের ভার্সনের মত কর্নারিং দারূণ ফিডব্যাক প্রদান করে থাকে। আর ব্রেকের ক্ষেত্রেও আপনি বেশ একটি ফিডব্যাক পাবেন।
বাইকটি কন্ট্রোলিং এর ক্ষেত্রে বেশ দ্রুত রেসপন্স করে থাকে, এর সাথে রেয়ার মনোশক সাসপেনশন এর সাথে রেয়ার টায়ার যুক্ত করেছে। তবে আমরা হতাশ হয়েছি দুটি বিষয়ে, একটি হচ্ছে এর হর্ণ, সিঙ্গেল এই হর্ণ সেভাবে কাজে শহর বা হাইওয়েতে রাইড করার সময়। আর দ্বিতীয় হচ্ছে বাইকটি ঘুরাতে বেশ ভাল পরিমানে একটা জায়গা দরকার। মানে এর টার্নি রেডিয়াস বেশি।
আমরা আমাদের টেস্ট রাইডের সময় শুকনো বা ভেজা রাস্তায় এর রোটার পেটাল ডিস্ক ব্রেক থেকে বেশ ভাল ফিডব্যাক পেয়েছি। সেভাবে কোন ধরনের ইস্যু অনুভব করনি।
হ্যা, আপনি হয়ত জিক্সারের র’ পাওয়ার অনেকটাই মিস করবেন, তবে এখন এটির ফান ফ্যাক্টর এখনও রয়ে গিয়েছে। বাইকটির চেসসি, সাসপেনশন, এবং টায়ারের কারণে আপনি কর্নারিং দারূণ কনফিডেন্স পাবেন, যদি কিছু সমস্যা হয়ও আপনি সেটা রিকভার করে উঠতে পারবেন।
এখন যেহেতু পিলিয়ন সিট অনেক প্রশস্ত তাই আপনার বড় পিলিয়ন নিতে কোন সমস্যা হবে না, এছাড়া আপনি আপনার বড় ব্যাগও পিছনে বেধে নিতে পারবেন।
Suzuki Gixxer 155 Fi ABS ভাল দিকঃ
- স্মুথ ইঞ্জিন
- ভাল কন্ট্রোল
- ব্রেকিং ভাল
- হেডলাইটের আলো বেশ ভাল
- বড় প্রশস্ত পিলিয়ন সিট
Suzuki Gixxer 155 Fi ABS খারাপ দিকঃ
- বিল্ড কোয়ালিটি প্রতিযোগীদের থেকে এখনও পিছিয়ে আছে
- ফ্রন্ট সাসপেনশন কিছুটা স্টিফ
- BS6 ইঞ্জিন হবার কারণে ভাল ফুয়েল ব্যবহার করা দরকার
- প্লাস্টিকের ফিনিশিং কোয়ালিটি আরও ভাল হওয়া দরকার ছিল
- সিঙ্গেল হর্ণ রাইডে জন্য সহায়ক নয়
- টার্নিং রেডিয়াস অনেক বেশি
আপনি যদি অতীতে একটি সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস সহ বাইক ক্রয় করতে চাইতেন তখন আপনি ভি৩ ক্রয় করতেন, কারণ তখন এর সমকক্ষ কেউ ছিল না। যদিও মার্কেটে কিছু অপশন ছিল, তবে সেগুলো এর কাছাকাছি ছিল না। কিন্তু এখন আছে, এখন সত্যি এর কাছাকাছি কেউ আছে। Lets See Suzuki Gixxer price in Bangladesh here.