Honda CB Hornet 160R নিয়ে কিছু আবেগ এবং অনুভূতির কথা - মারুফ
This page was last updated on 29-Jul-2024 08:59pm , By Raihan Opu Bangla
আমি মারুফ। বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলায় বসবাস করি । আপনাদের সাথে প্রিয় Honda CB Hornet 160R বাইকটি সম্পর্কে কিছু কথা শেয়ার করবো ।
Honda CB Hornet 160R নিয়ে কিছু আবেগ এবং অনুভূতির কথা
বাইকবিডির ওয়েবসাইটে মালিকানা রিভিউতে সবাই নিজের বাইকের রিভিউ দেয় । কিন্তু আমি কিছুটা ভিন্ন ভাবে Honda CB Hornet 160R বাইকের রিভিউ দিবো । আসলে রিভিউ না বলে আবেগ এবং অনুভুতিও বলতে পারেন । একটি কথা আছে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে এবং বাবাদের সব স্বপ্ন পূরন করা সম্ভব হয়না । Honda CB Hornet 160R বাইকটি মূলত আমার বাবার । বাবার আর ছেলের জিনিষের মধ্যে নাকি পার্থক্য থাকেনা । মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে এবং বাবাদের সব স্বপ্ন পূরন করা সম্ভব হয়না এই কথাটি কেন বললাম ! কারন আমি চাইলেও একটা বাইক কিনতে পারতেছিনা আর বাবার ইচ্ছে থাকা সত্তেও আমাকে একটা বাইক কিনে দিতে পারতেছেনা । এই কারনেই ১ টি বাইক ২ জনেই ব্যবহার করি ।
এবার আসি বাইকের প্রতি এই আবেগ এর সূত্রপাত সম্পর্কে - যেসব ছেলেদের বাবাদের বাইকের ট্যংকের উপরে বসে শৈশব শুরু হয় তাদের আর নতুন করে বাইকের প্রতি ভালোবাসা তৈরির প্রয়োজন হয়না । কিছু কিছু আবেগ অনুভূতি থাকে যা বলতে গেলে পারিবারিক ভাবেই সৃষ্টি হয় । আমার বাবা একজন বাইকার । তার বাইকের প্রতি ভালোবাসা আর আগ্রহ দেখে মনের অজান্তেই বাইকের প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয় ।
খুব অল্প বয়সেই বাবার কাছ থেকে বাইক চালানো শিখি । বাবার একটি Bajaj Platina 100 বাইক ছিল ২০১৮ সালে যখন বাংলাদেশে যখন Honda CB Hornet 160R নতুন আসলো তার অল্প কিছু দিন এর মধ্যে আব্বু বাইকটি ক্রয় করে । বাইকটিতে রয়েছে একটি ১৬০ সিসির এয়ারকুল্ড ইঞ্জিন যা থেকে প্রডিউস করে 15.09 BHP @8500 rpm এবং 14.76 Nm @ 6500 rpm । বাইকটিতে রয়েছে ৫ টি গিয়ার । কার্বুরেটর ইঞ্জিন , সামনের চাকায় ডিক্স ব্রেক, পেছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক ।
Honda CB Hornet 160R Test Ride Review By Team BikeBD
বাইকটির প্রধান ২ টি আকর্ষন এর পেছনের ১৪০ সেকশন এর টায়ার এবং ব্যাক লাইটের ডিজেইন , যা এই বাইকটি পছন্দ করার অন্যতম কারন । আব্বু যখন বাইকটি ক্রয় করে তখন বাইকটি অল্প কিছুদিন হয় বাংলাদেশে এসেছে । ওই সময়ে বাইকটি সম্পর্কে সবার বেশ আগ্রহ ছিল । বাইকটি নিয়ে প্রথম ট্যুর করি আমতলী থেকে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত । যা ছিল Honda CB Hornet 160R নিয়ে আমার প্রথম লং ট্যুর । ট্যুরে বাইকটির পার্ফরমেন্স, স্মুথনেস, থ্রটল রেস্পন্স , মাইলেজ যা ছিল অবাক করার মত ।
বাইকটির সিটিং পজিশন বেশ ভালো , রাইডিং সিট অথবা পিলিয়ন সিট উভয় সিটে আপনি কম্ফোর্ট পাবেন । হ্যন্ডেল এর পজিশন লং রাইড করার জন্য খুবই ভালো । বাইকটি নিয়ে আমি যত লং রাইড করেছি কখনো আমি কোন প্রকার ব্যাক পেইন অথবা হাতে পেইন ফিল করিনি । ব্রেকিং এর কথা বলতে গেলে এর সামনের ডিক্স ব্রেক এবং পেছনের ড্রাম ব্রেকের পার্ফরমেন্স যে কোন পরিস্থিতিতে বাইকটিকে কন্ট্রোল করার জন্য সক্ষম । এর ইঞ্জিন পাওয়ার ১৬০ সিসি সেগমেন্টে শুরুর দিকে বেশ ভালো মনে হলেও ১০০+ স্পিডে আমার কাছে কিছুটা কম মনে হয়েছে ।
ব্রেকিং সঠিক নিয়মে মেনে রাইড করার কারনে বাইকটি থেকে পার্ফরমেন্স এবং মাইলেজ বেশ ভালো পাচ্ছি । প্রায় ৫০,০০০ কিলোমিটার রাইড করা হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত ইঞ্জিনের কোন কিছুই পরিবর্তন করার প্রয়োজন মনে হয়নি । পার্ফরমেন্স খুব ভালো দিচ্ছে । ইঞ্জিনের বাইরের কিছু পার্টস পরিবর্তন করেছি যেটা নরমাললি কম বেশি সবারই করতে হয় যেমন - ক্লাচ ক্যাবেল, থ্রটল ক্যাবেল, প্লাগ, চেইন স্পোকেট, এয়ার ফিল্টার ইত্যাদি । বলে রাখা ভালো বাইকটির মিটারে একবার সমস্যা হয়েছিল শুরুর দিকেই । বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেডকে বিষয়টি জানানোর পরে যদিও কিছু দিন সময় লেগেছে কিন্তু তারা সেটা ওয়ারেন্টির আওতায় সমাধান করে দিয়েছে । এছাড়া খুব বেশি কোন সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হয়নি ।
কোম্পানির রিকমেন্ডেড 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবহার করি । পেট্রনাস ইঞ্জিন অয়েলটি লং টাইম ধরে ব্যবহার করতেছি । এর পার্ফরমেন্স যথেষ্ট ভালো যার কারনে ব্যান্ড পরিবর্তনের কোন ইচ্ছে এখন পর্যন্ত হয়নি ।
যেহেতু বাবা ছেলে ২ জনেই বাইকটি ব্যবহার করি যার কারনে এর যত্নে কোন কমতি হয়না । নির্দিষ্ট সময়ে সার্ভিস করাই , নিয়মিত ওয়াস করি , সঠিক সময়ে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি , টায়ার প্রেসার সঠিক রেখে রাইড করি ।
Honda CB Hornet 160R বাইকের কিছু ভালো দিক -
- ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স
- লুকস
- ব্রেকিং
- মাইলেজ
- কম্ফোর্টনেস
Honda CB Hornet 160R বাইকের কিছু খারপ দিক -
- চেইন নয়েজ
- টপ স্পিড কম
- ইঞ্জিন সাউন্ড
- হেডলাইটের আলো কম
- ইঞ্জিন কিল সুইজ নেই
প্রতিটি মানুষের মনের মধ্যে কোন না কোন স্বপ্ন থাকে যা পূরন করা তার জীবনের লক্ষ হয়ে যায় । লাইফে যত ইচ্ছে আছে তার মধ্যে সব থেকে বড় ইচ্ছে একটা বাইক । শুরুতে বলেছিলাম মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলেদের আর বাবাদের অনেক স্বপ্ন থাকলেও তা পূরন করা সম্ভব হয়না । কিন্তু স্বপ্ন দেখতে তো ক্ষতি নেই ।
আমিও স্বপ্ন দেখি কোন এক সময় আল্লহ আমাকেও একটি বাইকের মালিক করবে । কখনো এ নিয়ে আফসুস করিনা স্বপ্ন নিয়ে পথ চলতেছি । চলতে চলতে কোন এক সময় স্বপ্নটা আল্লাহ পূরন করে দিবে ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মারুফ আহম্মেদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।