Bajaj Pulsar 150 বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - মাহমুদুল হাসান
This page was last updated on 20-Aug-2025 12:39pm , By Md Kamruzzaman Shuvo
আমি মাহমুদুল হাসান রাজ । আপনাদের সাথে আমার প্রিয় বাইক Bajaj Pulsar 150 এর রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। আমি অনার্স প্রথম বর্ষের একজন ছাত্র। আমি নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে পরাশুনা করি।

Bajaj Pulsar 150 বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - মাহমুদুল হাসান
ছোটবেলা থেকে আমার দুই চাকার ওপর একটা ভালোবাসা কাজ করে। ছোট থেকেই বাইক লাভার, কারণ আমার আব্বু আমার মতো একজন বাইক লাভার। কোথাও গেলে সবসময় আমি বাইকে যাওয়ার চেষ্টা করতাম। কারণ সেখানে একটা ভালোলাগা কাজ করতো। যখন সাইকেল চালাতাম তখন ভাবতাম এটাও দুই চাকা বাইকও দুই চাকার যান। তখনই ভেবে নিয়েছিলাম বড় হলে বাইক কিনবো।

ছোট বেলায় বাইকের নাম বলতে বুঝতাম পালসার। পালসার নামের সাথে সবাই ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বলে রাখা ভালো আমার আব্বু এখন পর্যন্ত বাজাজের অনেকগুলে বাইক ব্যবহার করছে। ২০১০ - ২০১১ সালের দিকে একটা পালসার বাইক গেলে সবার মতো আমিও তাকিয়ে থাকতাম।
Also Read: Bajaj Pulsar 135 (2014) Price in BD

পালসারের ব্যাক লাইট এবং হেডলাইটের দুই চোখের প্রেমে পড়ছিলাম আমি। তখন থেকেই মাথায় ছিলো বাইক নিলে পালসারই নিবো। এছাড়া বাড়ির লোকেরও পছন্দের তালিকায় ছিলো পালসার। মুখে যতটা বলা সহজ কেনা তার থেকে অনেক কঠিন।
আমার পরিচিত অনেকে দেখতাম পালসার বাইক চালাতো। অনেকের কাছে বাইক চেয়েও পাই নাই। তখন মনে মনে ভাবতাম আমারও একদিন বাইক হবে । ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষার পর বাইক কিনে দেওয়ার কথা বললে দেয় নাই, এরপর ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষার পর বাড়ি থেকে রাজী হলো বাইক কিনে দিবে।
তবে বাসা থেকে বললো পুরনো বাইক দিবে ।পুরানো ভালো কন্ডিশনের বাইক পাওয়া মুশকিল। অবশেষে টাকা ম্যানেজ হলো এবং বাইক নেওয়ার দিন ধার্য করা হলো। দিনটি ছিলো শুক্রবার। রাতে ঘুম হয় নাই ঠিকমতো যে সকালে বাইক কিনতে যাবো।অবশেষে আসলো সেই সময়।দীর্ঘ অপেক্ষার পর পেয়ে গেলাম পছন্দের বাইক। তখন যে ভালো-লাগাটা কাজ করছে এটা জীবনে একবারই আসে। তবে কোন একদিন বাজাজের শোরুম থেকে নতুন বাইক কেনার ইচ্ছেটাও পূরন করবো ।
আমার বাইকটি ছিলো পালসার সিঙ্গেল ডিস্ক ২০১৬ মডেল। ১ লক্ষ ৬ হাজার টাকায় বাইকের দাম ধার্য করা হয়। যদিও আগে এর থেকে ভালো বাইক চালিয়েছি তারপর যখন নিজের বাইকটা প্রথম বারের মতো রাইড দিলাম তখন কলিজাটা ঠান্ডা হয়ে গেলো।
Also Read: Bajaj Discover 125 ST Price In BD
আমার বাইক চালানোর প্রধান কারণ হলো কলেজে যাওয়া আসা করা। অনেক সময় কলেজে যাওয়ার সময় যানবাহন পাওয়ার সমস্যা ভোগ করা লাগে,কারণ আমার বাসা গ্রামের ভিতরে।
Bajaj Pulsar 150 বাইকের কিছু ফিচার -
- ১৫০ সিসির পাওয়ারফুল একটা ইঞ্জিন।
- ১৫ লিটারের একটা বড় ফুয়েল ট্যাঙ্ক ।
- ৪ স্টোকের একটা এয়ারকুলিং ইঞ্জিন।
- পিছনে ১০০/৯০ সেকশনের টায়ার এবং সামনে ১০০/৮০ সেকশনের টায়ার।
বাইকটি চালানোর সময় মনের কথা যে ভালোলাগা কাজ করে সেটা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না। নিজেকে তখন সৌভাগ্যবান মনে হয়। বাইকটি এখন পর্যন্ত একবার মাস্টার সার্ভিস দেওয়া হয়েছে এবং এটা নড়াইল থেকেই অভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা। যাদের সার্ভিসে আমি সন্তুষ্ট।
মোট ২৫০০ কিলোমিটারের পূর্বে লিটারে ৩৮-৪০ মাইলেজ পেয়েছি এবং এখন লিটারে ৪২-৪৫ মাইলেজ পাচ্ছি। আমার বাইকে Shell Advance 20w 50 মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। এটার বর্তমান বাজার মূল্য ৫৫০ টাকা। যেটা দিয়ে অনায়াসে ১ হাজার কিলোমিটার বাইক রান করা যায়।
বাইকের এখনো পর্যন্ত পিছনের টায়ার এবং সাইড স্ট্যান্ড বদলানো হয়েছে। বাইক দিয়ে সেভাবে টপ স্পিড চেক করি নাই। আমি এখন পর্যন্ত ৯২ পর্যন্ত টপ স্পিড তুলেছি। তেমন ভালো রোড না পাওয়ায় বেশি স্পিড চেক করি নাই। তবে এটা দিয়ে অনায়াসে ১১০+ স্পিড তুলা যাবে।
Also Read: Bajaj Dominar 400 Price In BD
Bajaj Pulsar 150 বাইকের কিছু ভালো দিক -
- এই সেগমেন্টে লুকিং আমার কাছে সেরা।
- মাইলেজ শহরের মধ্যে ৪০+ এবং হাইওয়েতে ৫০ এর মতো।
- সিটিং পজিশন এবং লম্বা সিট।
- বাজারের পার্টস এভেল এভেলটি, বাজারের বাইকের সকল পার্টস আপনি যে কোনো জায়গায় পাবেন ।
- পার্টস এর দাম তুলনামূলক কম।
- বাইকের বিল্ড কোয়ালিটি খুবই মজবুত এবং শক্তপোক্ত। বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট হতে বাধ্য।
Bajaj Pulsar 150 বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- বাইকের পাওয়ার লো। ১৫০ সিসির ইঞ্জিন অনুযায়ী বাইকের পাওয়ার কম। কোম্পানির উচিত পাওয়ারে একটু ফোকাস দেওয়া।
- রাতে বাইকটি চালাতে গেলে হেডলাইটের সমস্যা আপনাকে ভোগাবে।পর্যাপ্ত আলো না হওয়ার রাতে বাইক চালাতে গেলে আমি একটু সমস্যাই পড়ি।
- পালসারের নতুন নতুন ভার্সন আসলেও তারা তাদের বাইকের মিটার এখনো পরিবর্তন করে নাই। যেটা অনেকটা পুরাতন।
- লং টুরে গেলে ৫০ - ৬০ কিলোমিটার চালানোর পর ইঞ্জিন প্রচুর হিট হয়।
- জ্যামে পড়লে বা ভাঙা রাস্তায় কিছুক্ষণ বাইক চালালে হাতের কবজিতে ব্যাথা অনুভব করা যায়। এছাড়া লং টুরে গেলে হাতের পাশাপাশি পিঠে ব্যাথা অনুভব করা যায়।
বাইকটি দিয়ে বড় লম্বা ট্যুর না দেওয়া হলেও ১০০ কিলোমিটারের মতো একটা ট্যুর দিয়েছি যেটা নড়াইল থেকে যশোর হয়ে খুলনা হয়ে আবার নড়াইলে আসা।
যারা স্পিডের দিকে ফোকাস দিতে চান না। একটা স্টাইলিশ লুকিং এবং ভালো মাইলেজের বাইক চান তাদের জন্য বলবো পালসার হতে পারে সেরা চয়েজ। আর বাজাজ এর লং লাস্টিং ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স এর কথা আপনারা সবাই জানেন ।
পরিচিত এবং অপরিচিত সকলের প্রতি রইলো আন্তরিক ভালোবাসা। আমার এই রিভিউটা আশা করি আপনারা পজিটিভ ভাবে নিবেন। ধন্যবাদ বাইক বিডি আমার এই মতামত প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য।
