Shares 2
মোটরসাইকেল ট্রাভেলের সম্ভাব্য খরচপত্র কিভাবে নির্ধারন করবেন?
Last updated on 14-Oct-2024 , By Saleh Bangla
আমরা অনেকেই মোটরসাইকেল চালাতে বেশ পছন্দ করি। ফলে সবাই যে কেবল যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন তা নয়। বরং স্বল্প দূরত্ব থেকে অনেক দীর্ঘ পথেও অনেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ভ্রমণে বের হন। তাই উইকএন্ড হাইকিং বা মোটরসাইকেল নিয়ে লং-রাইড বিশ্বজুড়ে খুবই জনপ্রিয় একটি মোটরসাইক্লিং কালচার। আর আমাদের দেশেও এখন এই কালচার দিন দিন বেড়েই চলেছে। তো সেইসূত্রেই আজ আমরা একটি মোটরসাইকেল ট্রাভেলের সম্ভাব্য খরচপত্র হিসাবের উপায় নিয়ে জানবো।
মোটরসাইকেল ট্রাভেলের সম্ভাব্য খরচপত্র কিভাবে নির্ধারন করবেন?
বাংলাদেশে আমরা এখন অনেকেই সময় সুযোগ পেলেই মোটরসাইকেল নিয়ে লং-ট্রিপে বের হয়ে পড়ি। অনেকেই হয়তো বেশ কয়েকদিনের লম্বা সফরে বের হতে চান বা দেশের বাইরে লম্বা রাইডে বের হবার কথা ভাবছেন। এমতাবস্থায় সকল প্রস্তুতির সাথে সাথে এসব ট্রিপের খরচপত্রের সম্ভাব্য হিসাব বের করে বাজেট নির্ধারণ করা জরুরী। কেননা খরচ নির্ধারণ ছাড়া বাজেটে সমন্বয় করা অত্যন্ত কঠিন।
আর সঠিক খরচের হিসাব করে বাজেট নির্ধারণ করা গেলে নির্বিঘ্ন রাইডের সাথে অচেনা দুরবর্তীস্থানে অর্থাভাবের বিপদও এড়ানো যায়। তাই কোন মোটরসাইকেল ট্রিপের আগেই রাইডের সম্ভাব্য ব্যয় যত্নের সাথে নির্ধারণ করতে হবে এবং ভ্রমণের প্রস্তুতি হিসাবে যথেষ্ট বাজেটেরও ব্যবস্থা করতে হবে। তদনুসারে, আমরা এখানে মোটরসাইকেল ট্রাভেলের সম্ভাব্য খরচপত্র হিসাবের সাধারণ পদ্ধতি নিম্নে তুলে ধরছি।
মোটরসাইকেল ট্রাভেলের সম্ভাব্য খরচপত্র হিসাবের পদ্ধতি
মোটরসাইকেল নিয়ে লং ট্রিপের সম্ভাব্য খরচ নির্ধারণের জন্য, প্রথমেই সম্ভাব্য ট্রাভেল ডিসটেন্স, পছন্দের ভিজিটিং প্লেস, নাইটহোল্ড প্লেস, ঘোরাঘুরির প্ল্যান, ইত্যাদি নির্ধারণ করে ট্রিপের একটি মোটামুটি লেআউট দাঁড় করে ফেলতে হবে। এইভাবে প্ল্যান করে ফেলতে হবে রাইডার কতদিন কতটা দুরত্বে ট্রিপ পরিচালনা করবেন। সেইসাথে বের হয়ে আসবে তিনি কতক্ষণ বা কতদুর বাইক চালাবেন, কত রাত বাইরে থাকবেন, এবং কোথায় থাকবেন, এবং সেইসাথে খরচের অন্যান্য সম্ভাব্য ক্ষেত্র।
এভাবে পুরো ট্রিপের একটি মোটামুটি লেআউট দাঁড় করার পরে, প্রথমে সম্ভাব্য রাইডিং ডিস্টেন্সের সাপেক্ষে মোটরসাইকেলের মোটামুটি জ্বালানী খরচ বের করতে হবে। মূলত: কোন মোটরসাইকেল রাইডের এটি একটি বড় অংশ হয়ে থাকে। আধুনিক এই সময়ে Google Map এর সাহায্যে কিলোমিটারে মোট রাইডের দৈর্ঘ্য সহজেই বের করে নেয়া যায়। আর এরসাথে মোটরসাইকেলের প্রতি কিলোমিটার চলার খরচ গুণ দিয়ে মোট জ্বালানী খরচও সহজে বের করে নেয়া যায়।
দ্বিতীয়ত, পুরো ট্রাভেলে মোটরসাইকেলের মোটামুটি একটি মোইটেন্যনান্স খরচ ধরে নেওয়া উচিত, যদি আপনার বেশ লম্বা ট্রাভেলের পরিকল্পনা থাকে। এক্ষেত্রে প্রতি ৫-৬ হাজার কিলোমিটার চলার পর মোটরসাইকেলের স্বাভাবিক মোইটেন্যনান্স খরচ এখানে বিবেচনা করা উচিত। কিন্তু আরো বড়ো রাইডের জন্য আরো বিস্তৃত মোইটেন্যনান্স খরচ তালিকায় যোগ করা উচিত এবং অনাকঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্যও বাড়তি বাজেট রাখা উচিৎ।
তো মোটরসাইকেলের সম্পর্কিত খরচসমূহ নির্ধারণ করার পর ভ্রমণের সময় রাইডারের খাবার, রাত্রিযাপন, এবং বিশ্রামের ব্যবস্থা সম্পর্কিত খরচ নির্ধারণ করতে হবে। এখানে গড়পড়তা প্রতিদিনের খাবারের খরচ, স্ন্যাকস বা পানীয়ের খরচ, এবং সেইসাথে ভিজিটিং স্পটের লোকাল ফুড, বা বিশেষ খাবারের জন্যও বাড়তি খরচ ধরে মোট বাজেট নির্ণয় করা উচিত। এরপরে নির্দিষ্ট অঞ্চলে রাত্রিযাপনের জন্য হোটেল বা রিসর্ট ভাড়ার খোঁজ নিয়ে সম্ভাব্য মোট আবাসন খরচও নির্ধারণ করা যেতে পারে।
সবশেষে মোটরসাইকেল রাইডের কিছু অননুমিত কিছু সম্ভাব্য খরচের জন্যও কিছু বাজেট রাখতে হবে। কেননা চলার পথে রাস্তা ও সেতুর টোল, স্পট ভিজিটিং ফি, বিশ্রামাগার ফি, কোন স্থানে প্রবেশের ফি, ইত্যাদির জন্য কিছু পরিমাণ বাজেট অবশ্যই রাখা উচিৎ। এছাড়াও, স্যুভেনির সংগ্রহ, উইন্ডো শপিং, এবং বিনোদন খরচও এতে যোগ হতে পারে। আর এসব প্রত্যাশিত খরচের পাশাপাশি লম্বা মোটরসাইকেল রাইডের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধ-পত্র, চিকিৎসা, ও সম্পর্কিত বিশ্রামের খরচও বিবেচনা করা উচিত।
পরিশেষে সবমিলিয়ে এইগুলি হলো একটি লং মোটরসাইকেল ট্রিপের প্রত্যাশিত খরচের পরিধি। এসব খরচ মোটামুটি নির্ধারন করে নিলেই একটি ট্রিপের মোটামুটি সম্ভাব্য মোট খরচ বের করে ফেলা যায়। তবে একথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, এখানে উল্লেখিত কিছু খাতের খরচ অনিবার্য, এবং কিছু কিছু খরচ অবশ্যই পরিবর্তনশীল ও বিভিন্ন পরিস্থিতির সাপেক্ষে পরিবর্তনীয়। সুতরাং বাস্তবে অনুমিত খরচের কম-বেশি হতে পারে। এটি স্বাভাবিক। সুতরাং এই বাস্তবতা ধরে নিয়েই আপনি যেকোনো মোটরসাইকেল রাইডের সম্ভাব্য খরচ নির্ধারণ করে নিতে পারেন, ধন্যবাদ।
T
Published by Saleh Bangla