আমার নাম রাফসান জুবায়ের নাভিদ। আমি ঢাকার মিরপুর ১ থাকি । আমার Yamaha Fzs V3 বাইকটি নিয়ে রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। আমি আমার বাইক এবং বাইকিং জগতকে খুব ভালবাসি কারন বাইক রাইডিং কে আমি মনে করি একটি রিফ্রেশ বাটনের মতন, ঠিক যেমন প্রতিটি কম্পিউটারে থাকে, তেমন আমাদের এই যন্ত্র মানব জীবনের একটি রিফ্রেশ করার উপায় হলো এই বাইক রাইডিং এবং ট্যুর দেওয়া। ছোটোবেলা থেকেই বাবার বাইক এর প্রতি ভালবাসা দেখে দেখেই বড় হয়েছি, তাই নিজের ও অনেক ভালবাসা বাইকের উপর এবং বাইক রাইডিং এর উপর।
টুর দেওয়ার মতন এবং ডেইলি রাইড এর জন্য আরামদায়ক একটি বাইক খুজছিলাম আর তাই এই বাইকটি নেওয়া। বাইকটি আমি মিরপুর ৬০ ফিট এর ইয়ামাহা শোরুম ক্রিসেন্ট এন্টারপ্রাইস থেকে ২ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকায় ক্রয় করি।
বাইক কিনতে যাবার দিনটি ছিল আমার জীবনের একটি মুল্যবান দিন। ওই দিনটি ছিল আমার Hsc result দেওয়ার আগের দিন। সকাল সকাল চলে গেলাম শোরুম এ এবং কিনে নিলাম পছন্দের বাইকটি সাথে আব্বু ছিল । আব্বু বাইক কিনে নিয়ে আমাকে নিয়ে সেদিন সারাদিন ঘুরলো, একবার আমি চালাই, একবার আব্বু এভাবে পুরা ঢাকার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে ফেল্লাম।
বাইকটি প্রথমবার চালানোর অভিজ্ঞতা ছিলো দারুন, নতুন বাইক, নতুন ইঞ্জিন, নতুন সবকিছু । ইয়ামাহার ইঞ্জিন খুব রিফাইন্ড । আমার বাইকটি চালানোর পিছনে মুল কারন হচ্ছে,আমার বাসা থেকে আমার ভার্সিটি অনেক দূরে তাই আমার ক্লাস করার জন্যে আমার নিয়মিত বাইক চালানো প্রয়োজন । এছাড়া আরেকটি কারন হচ্ছে আমি অনেক ঘুরতে ভালবাসি । সময় পেলে সপ্তাহের শেষে ঢাকার বাইরে নতুন নতুন জাগায় বাইক দিয়ে ট্যুরে বের হই।
আমি বলবো বাইকটি একটি কম্ফোর্ট কিং , কম্ফোর্ট এর দিক দিয়ে অনেক ভালো এই বাইকটি । বাইকটিতে এ বি এস থাকার কারনে বাইকটির ব্রেকিং ভালো , এফ আই থাকার কারনে মাইলেজ ভালো । রাইডের ক্ষেত্রে এর স্মুথনেস প্রশংসা করার মত ।
২৫০০ কিলোমিটার পূর্বে এবং পরে মাইলেজ হিসাব না করলেও আমার এখন ২১০০০+ কিলোমিটার রানিং আমি সবসময় একটু স্পিডে বাইক রাইড করি যার কারনে ইকো মুড বাদে চলতে হয় জার কারনে ৭০+ স্পিড থাকে। তখন আমার মাইলেজ ৩০-৩৫ পাই তবে এটা প্রথম থেকেই । মাইলেজ নিয়ে আমি নিরাস। পাওয়ার কম হলেও আমার কাছে কখনো পাওয়ার কম লাগেনি। তবে মাইলেজ আমার সবসময় এমন পাই । আমি সবসময় বাইকের যত্ন নেই নিয়মিত সারভিস করাই।
বাইকের মডিফাই বলতে হরন, ফগলাইট লাগিয়েছি কারন আলো অনেক কম, অনেক বেশিই কম । আমার সর্বোচ্চ তোলা স্পিড ১২৬ ভাংগা এক্সপ্রেসওয়েতে সিংগেল এ তবে পিলিয়ন সহ ১২১।
Yamaha Fzs V3 বাইকটির কিছু ভালো দিক -
রাইড করা অনকেটা আরামদায়ক
ওয়েট বেলেন্স তুলনামুলক অনেক ভালো,টানিং রেডিয়াস অনেক ভালো
ইঞ্জিন অনেক স্মুথ
জেন্টেল রাইড করলে মাইলেজ ভালো দেয়
ডেইলি রাইড এর জন্য অনেক ভালো
Yamaha Fzs V3 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -
হেডলাইট এর আলো অনেক কম,কিছু দেখায় যায়না
ইকো মুড ছাড়া ৭০+ এ চালালে অনেক ফুয়েল খায়,মাইলেজ ৩০-৩৩ এ চলে যায়
লং রাইডে ইঞ্জিন অনেক হিট হয়, বিরতি দিতে হয় রেডিয়েটর না থাকায়
পার্টস এর দাম অন্যান্য বাইকের তুলনায় অনেক বেশি।
দাম বিবেচনায় ফিচারস অনেক কম
বাইকটি দিয়ে আমি অনেক দূরে অনেক জায়গায় গিয়েছি তেমন সমস্যায় পরিনি । আমি ঢাকা থেকে নিকলি, মিঠামইন, চট্টগ্রাম, সিলেট, ফরিদপুর, মাগুরা, কুষ্টিয়া , মেহেরপুর, পাবনা, মুন্সিগঞ্জ ,বিক্রমপুর ,ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, শিতাকুন্ড এছাড়া আরও কিছু জায়গায় গিয়েছি । বাইক নিয়ে বলতে গেলে কথা শেষ হবেনা । আমার রিভিউটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ রাফসান জুবায়ের নাভিদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।