Shares 2

Bajaj Pulsar NS160 FI ABS ১৫০০০ কিলোমিটার রাইড - সাজিদ

Last updated on 21-Nov-2023 , By Shuvo Bangla

আমি সাজিদ। আমি Bajaj Pulsar NS160 FI ABS বাইকটি ব্যবহার করছি। আজ আমি আমার বাইকের ১৫,০০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো।


আমি ময়মনসিংহে থাকি। সেই ছোট বেলা থেকেই বাইকের প্রতি এক অন্যরকম অনুভূতি কাজ করতো। আর ২০১৭ সালে এসে আমি আমার জীবনের প্রথম বাইক ক্রয় করি। আমার প্রথম বাইকটি ছিলো Benelli keeway Rks100।  বাইকটি প্রায় আমি ৪০ হাজার কিলোমিটার চালিয়েছিলাম। তারপর ক্রয় করলাম আমার ২য় বাইক Bajaj Pulsar Ns160 Fi abs ২০১৯ এর মডেল। আজ এই বাইকের রাইডিং অভিজ্ঞতাই বলতে চলেছি আপনাদের মাঝে। 

বাইকটি কেন আমি পছন্দ করেছিলাম -

আমি এই পর্যন্ত কম বেশি প্রায় সকল বাইক রাইড করেছি। তবে এই বাজেটের মধ্যে এটিই আমার কাছে সেরা মনে হয়েছে। বাইকের স্টাইল এবং ডিজাইন আমার কাছে অসাধারণ লাগে। বিশেষ করে বাইক রাইড করা অবস্থায় বাইকটি দেখতে খুবই ভালো লাগতো। আর সবচেয়ে যেই জিনিসটা আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছিলো সেটি হচ্ছে বাইকের ব্রেকিং।


বাইকটি আমি কিনেছিলাম ২লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে বাজাজ এর শোরুম ORCHI BAJAJ থেকে। যেহেতু আমি স্পিডিং পছন্দ করি না তাই এখনো বাইকের টপ স্পিড চেক করি নাই। তবে ট্যুরে যাওয়ার সময় পিলিয়ন সহ একবার ১২১পর্যন্ত উঠেছিলো । যেহেতু আমার বাসা ময়মনসিংহে তাই বেশিরভাগ সময় হাইওয়েতেই রাইড করা হয়।  এভারেজে মাইলেজ পাচ্ছি আমি ৪১.৭৮ কিলোমিটার/লিটার। 

এই বাইকের কাজ অনেক মেকানিক আছে যারা বুঝে না। আবার অনেক মেকানিক এই বাইকের কাজ জানলেও করতে চায় না। তাই আমার ধারণা সকলের উচিত বিশ্বস্ত কোনো সার্ভিস সেন্টারে সার্ভিস করানোর জন্য। একেকবার একেক সার্ভিস সেন্টারে না যাওয়াই ভালো। 


আমি বাইকটি যেভাবে মেনটিনেন্স করি -

  • নিয়মিত বাইক সার্ভিস করাই।
  • চাকার প্রেশার নির্দিষ্ট মাত্রয় রাখি এবং নিয়মিত চেক করি।
  • চেইনে ময়লা দেখলেই চেইন পরিষ্কার করে চেইন লুব ইউজ করি।
  • ফুল সিনথেটিক ইন্জিন ওয়েল (Motul) ব্যাবহার করি।
  • ইন্জিন অয়েল পরিবর্তন করার সময় নিয়মিত অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি। 
  • প্রতি ১৫০০-২০০০ কিলোমিটার পর পর এয়ার ফিল্টার পরিবর্তন করি। 

Bajaj Pulsar NS160 FI ABS বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • বাইকটির ওজন বেশি হওয়ার ফলে রাস্তায় স্মুথলি রাইড করা যায়। কোনো ভাইব্রেশন ফিল করা যায় না।
  • লুকিং অনেক ভালো।
  • ব্রেকিং খুবই ভালো। 
  • টর্ক এবং স্পিড দুটোই ভালো।
  • বাইকের সাউন্ড খুবই কম এবং স্মুথ। 
  • আন্ডারভ্যালি এক্সজস্টের কারণে পিছন দিক থেকে দেখতেও অনেক সুন্দর লাগে।

Bajaj Pulsar NS160 FI ABS বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • টার্নিং রেডিয়েন্স কম হওয়ায় বাইক ঘুরাতে অনেক জায়গা লাগে।
  • ইন্জিন অয়েল ১২০০ মি.লি. ব্যবহার করতে হয় । 
  • মিটার ডিজিটাল হলে ভালো হতো।
  • হেড লাইটের আলো কম। 
  • চাকাগুলো একটু মোটা হওয়া দরকার ছিলো।

বাইকটি নিয়ে আমি ময়মনসিংহ থেকে হালুয়াঘাট, শেরপুর জেলার অনেক পর্যটন কেন্দ্র এবং বকশিগঞ্জ, জামালপুর ট্যুর দিয়ে আসলাম কিছু দিন আগে। মোট ৪৫০ কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ছিলো। যা ঘুরেছি একদিনেই।  যেহেতু আমি প্রতিদিনই বাইক রাইড করি তাই আমার বাইক নিয়মিত সার্ভিস করাতে হয়।


আমার চুড়ান্ত মতামত -

বাইকটি কেনার সময় অনেকে বলেছিলো বাইকটি ভালো না, বাইকে অনেক সমস্যা আছে। কিন্তু এসব কথা চিন্তা না করে আমার কাছে বাইকটি এই বাজেটে ভালো মনে হয়েছে এবং আমি বাইকটি কিনেছিলাম। এখনো অনেকের মুখে শুনি বাইকটি ভালো না। আমি এখন এরকম মন্তব্যকারী কোনো মানুষ পেলে জিজ্ঞেসা করি, ভাই আপনি কি Ns ইউজার? বা আপনার কি পারসোনালি Ns বাইকটি আছে? অথবা আপনি কি দীর্ঘদিন যাবৎ এই বাইকটি ব্যবহার করেেছেন কিনা? 


তো এসব প্রশ্ন করলে ঐ ব্যাক্তিগুলো কখনোই সঠিক উত্তর দিতে পারে না। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে অল্প কয়েকদিন ব্যাবহারে বাইকের রাইডিং পারফরম্যান্স কেমন তা বুঝতে পারা যায়। কিন্তু ভালো মন্দ বুঝতে গেলে দীর্ঘদিন ব্যবহার করতে হয়। আমি ১৫,০০০ কিলোমিটারের মধ্যে তেমন কোনো সমস্যার সম্মুখীন হই নাই এখনো। তবে Ns এর একটা কমন বিষয় সেটা হচ্ছে বাইকের হোস পাইপ ফেটে যায়। আমারো এমন হয়েছিলো আর আমি RCB হোস পাইপ লাগিয়ে নিয়েছি। স্টক পাইপের চেয়ে এটা আরও বেশি ভালো বলে আমি মনে করি। ধন্যবাদ । 


লিখেছেনঃ সাজিদ  

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla