স্কুটার নিয়ে লং রাইডে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
This page was last updated on 31-Jul-2024 12:14am , By Shuvo Bangla
বর্তমানে বাইকের পাশাপাশি স্কুটার নিয়েও সবাই হাইওয়েতে লং রাইড করতেছে অথবা লং ট্যুরে যাচ্ছে । যারা স্কুটার নিয়ে লং ট্যুর করতেছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল -
স্কুটার নিয়ে লং রাইডে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
(১) লাস্ট ব্রেক সার্ভিস করানোর পর অনেকদিন অথবা অনেক কিলোমিটার পার হয়ে গেলে লং রাইডের জন্য রওনা দেয়ার একদিন আগে ব্রেক সার্ভিস করে নিন। প্রয়োজন হলে ব্রেক-শু/ ব্রেক প্যাড পরিবর্তন করে নিন। (২) এয়ারফিল্টার অবশ্যই পরিষ্কার করে নিন । (৩) ইঞ্জিন অয়েল কত দিন আগে পরিবর্তন করেছেন এবং ওই ইঞ্জিন অয়েলে কত কিলোমিটার চলেছে সেটা সবসময় মনে রাখবেন। মিনারেল অয়েল সাধারনত ১০০০-২০০০ কিলোমিটার পরপর পরিবর্তন করা ভালো , সিনথেটিক হলে ৩০০০+- কিলোমিটার পর পর পরিবর্তন করা ভালো।
Vespa VXL 150 Review - Team BikeBD
আপনি ট্যুরে কত কিলোমিটার রাইড করবেন সেটা জানা থাকলে প্রয়োজন অনুসারে ট্যুরে যাওয়ার আগেই ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করে নিন। ট্যুরের মাঝখানে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করা ঝামেলা , তাছাড়া স্কুটারের মেকানিকও সব জায়গায় এভেইলেবল থাকে না। সুতরাং ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হলে ট্যুরের আগে করুন, অথবা ট্যুর থেকে ফিরে এসে করে নিন ।
একান্ত প্রয়োজন ছাড়া রাস্তার মাঝে যেকোনো জায়গা থেকে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন না করা ভালো। ১০০-২০০ কিলোমিটার এক্সট্রা চললে কোনো সমস্যা নেই। সবসময় চেষ্টা করবেন সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে। (৪) একটা এক্সট্রা স্পার্ক প্লাগ সবসময় সাথে রাখুন। প্লাগে যে কোন সময় সমস্যা হতে পারে , যেকোনো সময় প্লাগ অকেজো হতে পারে। আর যেকোনো জায়গায় স্কুটারের স্পার্ক প্লাগ পাওয়া যায়না। সুতরাং সিটের নিচে একটা এক্সট্রা প্লাগ সবসময় রেখে দিবেন সেফটি হিসেবে। (৫) টায়ার প্রেশার খুব ইম্পরট্যান্ট একটা বিষয়। অনেকেই ইচ্ছামতো টায়ার প্রেশার রাখেন, অনেকে বেশি দেন বেশি মাইলেজ পাওয়ার জন্য। এর ফলে কিছু সমস্যা হয় -
- রাস্তার সাথে আপনার টায়ারের কন্ট্যাক্ট সারফেস কমে যায়।
- ব্রেক করলে বা কর্নারিং এর সময় চাকা স্লিপ করার চান্স থাকে।
- ভেজা রাস্তায় ব্রেক করলে স্কীড করার সম্ভাবনা থাকে।
- বেশি টায়ার প্রেশার থাকলে বাইকে বেশি ঝাকুনি লাগে।
টায়ার প্রেশার সবসময় রিকমেন্ডেড লেভেলে রাখুন। বড়োজোর ১ কিংবা ২ পিএসআই এদিক ওদিক হতে পারে।
(৬) বৃষ্টির দিনে রাইড করতে হলে টায়ার প্রেশার রিকোমেন্ডেড লেভেল থেকে বরং ২-৫ পিএসআই কমিয়ে দিন। তেল হালকা বেশি যাবে অথবা এক্সিলারেশন একটু স্লো হবে, কিন্তু ব্রেকিং পারফরম্যান্স পাবেন দুর্দান্ত, আর ম্যানুভারিং+কর্নারিং এ কোনো ঝামেলাই হবে না। (৭) রাতে রাইড করতে হলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করে নিন । এলইডি লাইট অথবা ফগলাইট এর ব্যবস্থা রাখুন । এবং ঠিকমতো আলোর প্রজেকশন এডজাস্ট করে নিন। রাতে রাইড করতে হলে একা রাইড না করা ভালো । (৮) সিটের নিচে একটা ছাতা রেখে দিন। বৃষ্টি আসলে অথবা রোঁদে দাঁড়ালে প্রয়োজন হতে পারে। এটা আপনার জন্য অনেক হেল্পফুল একটা জিনিস হতে পারে । (৯) একটা ৫০০ এমএল পানির বোতল সিটের নিচে রেখেদিন। পানি পিপাসা লাগলে কাজে তো আসবেই, আরো একটা দারুন সুবিধা আছে - সেটা হলো রাস্তায় বিপদে পড়ে হঠাৎ করে যদি অন্য কোনো বাইকের কাছ থেকে তেল নেয়া লাগে তখন আপনার এই বোতল লাগবেই । (১০) এবার সবচেয়ে জরুরি বিষয় - সেটা হলো ফুয়েল ম্যানেজমেন্ট। তেল নেয়ার সাথেসাথে একটা ট্রিপ মিটার ০ করে দিবেন। এরফলে আপনি সবসময় বুঝতে পারবেন লাস্ট তেল নেয়ার পরে কত কিলো রাইড করলেন। আপনার স্কুটারের ফুয়েল এফিসিয়েন্সি তো আপনার জানাই আছে।
ধরেন পাঁচ লিটার ট্যাংক, আর প্রতি লিটারে ৪০ কিলোমিটার মাইলেজ পান - তাহলে লাস্ট টাইম ট্যাংক ফুল করে নেয়ার পরে যদি ১৫০ কিলোর মতো রাইড হয়ে যায় তাহলে পরবর্তী ফুয়েল স্টেশনেই তেল নিয়ে নিন। ট্রিপ মিটার ০ করার সুবিধাই এটা, আপনার সবসময় জানা থাকছে যে তেল নেয়ার আগে পর্যন্ত আর কত কিলোমিটার রাইড দিতে পারবেন। (১১) রাইডিং গিয়ার পরবেন। ভালো গ্লাভস, নি-এলবো সাপোর্ট আর ভালো হেলমেট পরে রাইড করবেন। (১২) হেলমেটের জন্য নানারকম ব্লুটুথ কমিউনিকেটর পাওয়া যায়, রাস্তায় চলন্ত অবস্থায় টুকটাক গান শুনতে হলে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন স্পিকারে অতিরিক্ত ভলিউম রাখবেন না । কল রিসিভ করতে হলে কিংবা সঙ্গীসাথীদের সাথে কথা বলার জন্য এই কমিউনিকেটরগুলো খুবই কাজের জিনিস । (১৩) অযথা রিস্কি রাইড, স্পিডিং, ওভারটেক করবেন না। বুঝে শুনে ঠান্ডা মাথায় নিজের আর স্কুটারের ক্যাপাবিলিটি অনুযায়ী কনফিডেন্সের সাথে চালাবেন । স্কুটার নিয়ে আপনার লং রাইড আনন্দময় এবং নিরাপদ হোক ।
ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ - হাসিন হায়দার ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২১