বাজাজ ভি১৫ ১০,০০০ কিঃমিঃ মালিকানা রিভিউ - অঙ্কন সিদ্দিক অভি
This page was last updated on 01-Jan-2025 04:58pm , By Saleh Bangla
বাজাজ ভি১৫ ২০১৭ বাইকটি আমি কিনি ১৭ই জুন ২০১৭ এ মিরপুরের আরিয়া মটরস থেকে। ক্ল্যাসিক বাইকের প্রতি আমার একটু আকর্ষণ সবসময়ই কাজ করতো। রয়াল এনফিল্ড, বুলেট কিংবা ট্রায়াম্ফ স্ট্রিট টুইন নিয়ে ভালোই রিসার্চ করেছিলাম যদিও ঐসব বাইক বাংলাদেশে লিগ্যালি এভেইলেবল না। অনেক কিছু চিন্তা ভাবনা করে ভি১৫ কিনলাম। যদিও আমি খুব ভালো সাইক্লিস্ট ছিলাম কিন্তু কখনই বাইক চালাইনি। একবন্ধু সাথে ছিলো, কেনার পর আমার গ্যারাজ পর্যন্ত চালিয়ে সে নিয়ে আসে। যাইহোক, একজন নতুন বাইকার হিসেবে ভি১৫ আমার কাছে খুব আরামদায়ক লেগেছিলো। আমি প্রথম ২ বার এঞ্জিন অয়েল চেইঞ্জ করি যথাক্রমে ৩০০কিমি ও ৭০০কিমি পর। তারপর থেকে এই পর্যন্ত সবসময় মতুল ৭১০০ ফুল সিন্থেটিক ব্যবহার করছি। প্রতিবার সার্ভিসের সময় এঞ্জিন অয়েল ফিল্টার এবং এয়ার ফিল্টার পালটিয়েছি।
৪. বাইকের সিট আরামদায়ক। কন্ট্রোল খুব ভালো। এই ঈদে ঢাকা-কক্সবাজার-টেকনাফ-ঢাকা টোটাল ১০০০ কিমি চালিয়েছি তিনদিনে। কোনো রকম ব্যাকপেইন কিংবা হাতের কব্জিতে ব্যথা অনুভব করিনি। হাইওয়েতে বাইকটি অনেক স্টেইবল থাকে। হেডলাইটে যথেষ্ট ভালো আলো আছে। ব্রেকিং ভালো। টার্নিং রেডিয়াস ভালো। ৫. এই ১০,০০০ কিমি এবং ১ বছর পর্যন্ত আমার বাইকের টায়ার এবং ব্যাটারি নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। বাইকে সিয়াটের স্টক টায়ার দেয়া হয়েছে। টায়ারের কন্ডিশন এখনো যথেষ্ট ভালো। (আমি মোটামুটি ভাংগা রাস্তায় ও যথেষ্ট পরিমানে রাইড দিয়েছি)
৩. শর্ট গিয়ার রেশিও। আমার কাছে একটু বিরক্তিকর লেগেছে। অনেকের কাছে ভালো লাগতেও পারে। ৪. স্পিড। এর টপ স্পিড কম। হাইওয়েতে আমি পেয়েছি ১০৩কিমি/ঘন্টা কিন্তু যদিও আমি বলব ৮০কিমি/ঘন্টা। এই ৮০কিমি পর্যন্ত বাইকের স্পিড আরামসে উঠে যাবে। কিন্তু এর পরে মনে হয় আর স্পিড উঠছে না। যাই হোক ভি১৫ যদিও স্পিড তোলার বাইক না তাই সেই হিসেবে এটিকে খারাপ দিক নাও বলা যেতে পারে।
আশা করি কেউ বাজাজ ভি১৫ কেনার আগে আমার অভিজ্ঞতা থেকে যাচাই করে নিতে পারবেন এবং কেনার পর অন্য ১৫০সিসি বাইকের সাথে তুলনা করবেন। বাজাজ ভি১৫ সম্পূর্ণ আলাদা ধরনের বাইক। যার প্যাশন আছে এবং যিনি চালিয়েছেন তিনিই বুঝবেন। যারা রেগুলার কমিউট করেন এবং রাইডিং এ একটু আলাদা ফ্লেভার চান, তাদের জন্যই এই বাইক। ধন্যবাদ সবাইকে। সবসময় নিরাপদে বাইক চালাবেন এবং হেলমেট ব্যাবহার করবেন।

বাজাজ ভি১৫ বাইকের ভালো দিকঃ
১. বাইকের বাহ্যিক গঠন নিয়ে কিছু বলবো না। এটি যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি কিনেছিলাম শুধু মাত্র এর লুক এবং এক্সজস্ট নোট এর কারণে। ২. বাইকের বিল্ট কোয়ালিটি ভালো। আমার কাছে ভালো লেগেছে (যদিও আমি বাইকের বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞ ব্যক্তি না, এটি সম্পুর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত)। ৩. ওভারঅল পারফরমেন্স নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। এই বাইকের সেগমেন্ট অন্যান্য ১৫০সিসি বাইকের মত নয়। এটাকে বলা যেতে পারে ক্ল্যাসিক কমিউটার। এটাকে পালসার, আপাচি, হাংক এর সাথে তুলনা করা নেহাতই বোকামি অথবা অজ্ঞতা। বাইকটি মাইলেজের দিক থেকে অসাধারণ। আমি হাইওয়েতে ৫৪-৫৫ কিমি/লি. পেয়েছি এবংশহরের ভিতরে আনুমানিক ৪৯-৫০কিমি/লি. পেয়েছি এবং পাচ্ছি। উল্লেখ্য আমি সবসময় এক পাম্প থেকে তেল নিই। এর লো রেভ রেইঞ্জে হাই টর্ক আপনাকে অসাধারণ রাইডিং অভিজ্ঞতা দিবে। গিয়ার শিফটিং খুবই স্মুথ। এর ফর্ক এবং শক এবজরভার বেশ ভালো ঝাকুনি সহ্য করতে সক্ষম।
>>বাজাজ ভি১৫ এর ভিডিও রিভিউয়ের জন্য এখানে ক্লিক করুন<<
বাজাজ ভি১৫ বাইকের খারাপ দিকঃ
১. ভাইব্রেশন। ৪০-৬০ কিমি এ ভালোই ভাইব্রেশন করে। এর উপরে তেমন করে না। (নির্ভর করে আপনি কি ধরনের এঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছেন। ফুল সিন্থেটিক ব্যবহার করলে ভাইব্রেশন অনেক কম অনুভব করবেন)। ২. পার্টস। হাতের নাগালে পাবেন না। যদিও আমি Moto Garage এর উপর পুরোপুরি ভরসা করি। বাজাজের ডিলার হিসেবে জেনুইন পার্টস তাদের কাছ থেকেই নিই।
>>বাজাজ ভি১৫ এর লেটেস্ট মূল্য জানতে এখানে ক্লিক করুন<<
সর্বশেষঃ
আমি মডারেট রাইডার। সিটিতে ৬০কিমি এর উপরে কখনো বাইকিং করিনা যতই তাড়া থাকুক। এই ১০,০০০ কিমি এবং ১ বছর পর্যন্ত এঞ্জিন অয়েল বাদে আমি বাইকের যা যা পালটিয়েছি- ১. ব্রেক সু ১ বার। ২. ব্রেক প্যাড ২ বার। ৩. চেইন স্প্রকেট ১ বার (কয়েকদিন আগে) ৪. টাইমিং চেইন এডজাস্টার (কয়েকদিন আগে) ৫. স্পিডোমিটার কেবল।
Also Read: বাইকের সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্স ফি ফ্রি দিচ্ছে বাজাজ । বাইকবিডি
লিখেছেনঃ অঙ্কন সিদ্দিক অভি
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

