Yamaha R15 V3 ১৫০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা- জিসান
This page was last updated on 30-Jul-2024 07:19am , By Shuvo Bangla
আমি রাতুল মাহমুদ জিসান। আমি কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানায় থাকি। বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি Yamaha R15 V3 বাইকটি। আজ আপনাদের সাথে আমি আমার প্রিয় বাইকটির রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Yamaha R15 V3 ১৫০০ কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা
এটা আমার জীবনের ২য় বাইক। প্রথম বাইকটি ছিল Suzuki Gixxer 155। Suzuki Gixxer 155 বাইকটি নিয়ে গত দুই বছরে আমি ২০ হাজার কিলোমিটার রাইড করেছি। এর সাথে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে। আমার জীবনের প্রথম বাইক এটি।
Yamaha R15 V3 ১৫০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা
প্রথম সব কিছুর মধ্য অন্য রকম এক ভালোবাসা জড়িয়ে থাকে। প্রথম বাইকটি নিয়ে আমি তেমন কোনো ঝামেলায় পরিনি কখনো। এক কথায় সব দিক থেকে ঠিক ছিল।
আমার ২য় বাইকটি একদম নতুন মানে মাত্র ১৫০০ কিলোমিটার চালানো হয়েছে। কিন্তু আজ আমার ২য় বাইকটি নিয়ে আপনাদের মাঝে বিস্তারিত শেয়ার করব।
বর্তমান বাইকটা অর্থাৎ Yamaha R15 V3 Monster আমার স্বপ্নের একটি বাইক । যদিও এই বাইকটি আমাদের অনেক বাইকারদেরই স্বপ্ন। তেমনি এটা আমারো সপ্ন ছিল যে আমি এই বাইকটা কিনবো।
আমার বাইক প্রেমি হবার কারণ হচ্ছে আমি দুই চাক্কা যানবাহন খুব ভালোবাসি। ছোটবেলায় আমার বাইসাইকেল ছিল। এটি নিয়ে অলি-গলিতে ঘোরাফেরা করতাম। বড় ভাইদের যখন বাইক নিয়ে ঘুরতে দেখতাম তখন মনের ভিতর একটা ইচ্ছা বা আকাঙ্খা হতো বড় হয়ে হয়তো আমারও একদিন বাইক হবে।
আমি প্রথম বাইক চালানো শিখি আমার ভাই এর কাছে ২০১৪ সালে। বাইকটি ছিল ছিল Hero Splendor। শেখার পর থেকে বাইকের প্রতি আগ্রহ আরো দ্বিগুন হয়ে যায়। কিন্তুু তখন আমার বয়স কম ছিল। তাই নির্দিষ্ট গন্ডির বাইরে বাইক চালানো নিষেধ ছিল ।
আমি ২০১৮ সালের ৪ মার্চ কিশোরগঞ্জ, ভৈরব-এর আল আসকা মোটরস থেকে ক্রয় করি আমার প্রথম বাইকটি এবং বর্তমান Yamaha R15 V3 বাইকটি ক্রয় করি ঢাকা, বাংলামটর এর শরিফ মোটরস থেকে। বাইকটি যখন ক্রয় করি তখন বাইকটির বাজার মূল্য ছিল ৪ লক্ষ ১০ হাজার টাকা।
Yamaha R15 V3 বাইকটি ক্রয়ের দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে খুশির দিনের মধ্যে একটি। সেই খুশির দিনে আমার সাথে ছিলেন আমার মামা, চাচা এবং আমার বাবা। আমি আমার বাইকটি প্রথম চালাই আমার বাবাকে নিয়ে। আমার বাবাই আমাকে বাইকটি কিনে দেন।
বাইকটি যখন প্রথম চালিয়ে নিয়ে বাসায় ফিরি তখন ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্তের মধ্যে একটি যা মুখে বলে বা লিখে বোঝানোর মত নয়। বাইকটি ক্রয় করার পিছনে প্রথম কারণ হল এই বাইকের লুকস আমার খুবই পছন্দের।
এছাড়াও আমার এই Yamaha R15 V3 Indian বাইকটির বেশ কিছু ফিচার পছন্দের আছে যেমন, এর মিটার। বাইকের লুকিং অন্যান্য বাইকের চেয়ে স্টাইলিশ যা আমার কাছে খুব ভালো লাগে।
আমার বাইকটি আমি কিশোরগঞ্জ এর Yamaha সার্ভিসিং পয়েন্ট থেকে সার্ভিসিং করাই। সব পেইড সার্ভিস। কেননা আমার বাইকটি আনঅফিসিয়ালি কেনা। আনঅফিসিয়ালি কেনা কোন বাইকে ইয়াহামা সার্ভিসিং পয়েন্ট থেকে কোনো ফ্রি সার্ভিস দেয়া হয়না, এমনকি আনঅফিসিয়াল বাইক সার্ভিস-ই করেনা। আমার একজন পরিচিত ছিল বলে উনি ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
আমার Yamaha R15 V3 বাইকটির ব্রেক ইন পিরিয়ড এখনো চলছে। আমি সঠিকভাবে ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনে বাইক চালাচ্ছি। আমাদের সবার-ই উচিত ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনে বাইক রাইড করা। কেননা ভবিষ্যতে ভালো পারফর্মেন্স পেতে হলে এটা মেনে চলতে হবে।
Yamaha R15 V3 Monster Edition | First Impression Review
ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় অর্থাৎ ২৫০০ কিলোমিটার পযর্ন্ত ৫০০০ আরপিএম এ বাইক চালাতে হবে। ইঞ্জিনে কোনো প্রেশার দেওয়া যাবেনা।
Yamaha R15 V3 বাইকটিতে আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ৪০ থেকে ৪২ কিলোমিটার। যা আমার কাছে খুবই সন্তোষজনক মাইলেজ। একটা স্পোর্টস বাইক থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা উচিত না।
আমি সবসময় বাইকের মেইনটেনেন্স এর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। কারণ ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে অবশ্যই মেইনটেনেন্স ঠিকঠাকভাবে করতে হবে। যেমন ইঞ্জিন অয়েল সময়মতো পরিবর্তন, চেইনে গিয়ার অয়েল দেওয়া, চাকায় সঠিক এয়ার প্রেশার রাখা, মাঝেমধ্যেই বাইক ওয়াশ করা ইত্যাদি।
বাইকটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমি বাইকটি সব সময় পাতলা কাপর দিয়ে মুছে রাখি। তাতে বাইকটি যেমন পরিষ্কার থাকে তেমনি দেখতেও ভালো দেখা যায়।
যেহেতু আমার বাইক এর ব্রেক ইন পিরিয়ড চলছে তাই আমি বাইকটিতে মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। আমি ইঞ্জিন অয়েল YAMALUBE 10W40 ব্যবহার করি। এর দাম ৪৮০ টাকা। ৩০০০ - ৪০০০ কিলোমিটার চালানোর পর সেমি সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করবো এবং ৫০০০-৬০০০ কিলোমিটারের পরে ফুল সিনথেটিক ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করবো।
এখন পর্যন্ত আমি কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি আমার R15 V3 বাইকটিতে। শুধুমাএ একটি অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করেছি। এই অয়েল ফিল্টারের দাম ৩০০ টাকা। এখন পযর্ন্ত বাইকটিতে কোনো মডিফিকেশন করিনি। কিন্তু কিছু দিন পর কিছুটা মডিফাই করার ইচ্ছা আছে।
আমার বাইকের যেহেতু ব্রেক ইন পিরিয়ড এখনো চলছে, তাই টপ স্পিড তোলার চেষ্টা করিনি। খুব সাবধানে ব্রেক ইন পিরিয়ড মেনে চলছি। পরে যেন ভালো পারফর্মেন্স পাই সে জন্য।
Yamaha R15 V3 বাইকটির কিছু ভালো দিক-
- রেডি পিকাপ
- মাইলেজ
- স্টাইলিশ লুক
- ইঞ্জিন পারফর্মেন্স
- এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম
- লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন
Yamaha R15 V3 বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- হালকা ব্যাক পেইন হয়
- প্লাস্টিক কোয়ালিটি এবং রং এর মান তুলনামূলক ভালো না
- হেড লাইটের আলো কম
ব্রেক ইন পিরিয়ড চলার কারনে এখনো আমি আমার এই প্রিয় বাইকটি নিয়ে কোন লং ট্যুর দেইনি। ইচ্চা আছে ব্রেক ইন পিরিয়ড শেষ হলে বেশ কয়েকটি জায়গায় যাব। প্রথম যাব সাজেক। সাজেক আমার পছন্দের একটি জায়গা। এছাড়া হিল রাইডের একটি অভিজ্ঞতাও হবে।
সবারপ্রতি আমার অনুরোধ একে অন্যের সাথে কখনো হিংসা করবেন না। আমরা সকল বাইকার ভাই ভাই। একজন বাইকারের বিপদে আমরা অন্য বাইকার এগিয়ে আসবো। কেননা রাস্তায় সবারই বিপদ হতে পারে এমনকি নিজেরও।
আশা করি সবাই নিজের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ভাল মানের হেলমেট পরে বাইক চালাবেন এবং চেষ্টা করবেন সেফটি গিয়ার ব্যবহার করার জন্য। রাস্তার সব নিয়ম মেনে বাইক রাইড করবেন। বেশি গতিতে বাইক চালাবেন না। মনে রাখবেন যত গতি তত ক্ষতি।
ইয়ামাহার এমন ইউজার রিভিউ এবং r15 v3 price in bangladesh এর সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে আমাদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখুন। শুধু ইয়ামাহা নয় আরো বাইকের ইউজার রিভিউ রয়েছে আমাদের ওয়েবসাইটে। আপনাদের মূল্যবান বক্তব্য এবং r15 v3 ভালো বা খারাপ দিক আপনার কাছে কোনটা মনে হয় সেগুলো আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ।
লিখেছেনঃ রাতুল মাহমুদ জিসান
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।