Yamaha FZ 250 – দ্য পাওয়ারফুল কমিউটার
This page was last updated on 18-Aug-2024 05:25pm , By Badhan Roy
কমফোর্ট, ব্রেকিং এবং ব্যালান্স এর জন্য বরাবরই সেরা হিসেবে বিবেচিত বিশ্ববিখ্যাত Yamaha ব্র্যান্ড এর FZ সিরিজের বাইক গুলো। বাংলাদেশের বাইকারদের মধ্যেও FZ-s 150 v2 ও v3 যথেষ্ট জনপ্রিয়। পুলিশ ও র্যাব ফোর্সের জন্য অফিসিয়ালি বরাদ্দ করা প্যাট্রোলিং বাইক হিসেবে FZ 250 বাইকগুলো প্রায়ই দেশের রাস্তায় চোখে পড়লেও সিসি লিমিটের কারনে তা ছিল সাধারণ বাইকারদের নাগালের বাইরে।
এছাড়াও অনেক বাইকার যারা লাদাখে বাইক ট্যুর দিয়েছেন অথবা দিতে চান তারা Yamaha Fz 250 বাইকটি ভাড়ায় নিয়ে থাকেন এর পারফর্মেন্স ও কমফোর্টের কারনে। Lord of The streets এই কারনেই বলা হয়ে থাকে Yamaha Fz সিরিজটিকে। সিসি লিমিট বৃদ্ধির পর থেকে বাংলাদেশের কম্যুটার সিরিজের বাইক প্রেমীদের অনেকেরই আগ্রহ এই Yamaha Fz 250 বাইকটিকে ঘিরে তা বলাই যায়।
তো আজ আমরা কেবল Yamaha Fz 250 এর স্পেসিফিকেশনই নয় বরং এর ভাল-মন্দ দিক এবং আসলে কোন বাইকারদের জন্য বাইকটি উপযোগী তা নিয়ে আলোচনা করব।
Yamaha FZ 250 – ডিজাইন
কমিউটার ও ন্যাকেড স্পোর্টস বাইকের দুইরকম সংমিশ্রণই Yamaha Fz 250 বাইকে লক্ষ করা যায়। বড় ইঞ্জিনের সাথে মাসকুলার শেপের ফুয়েল ট্যাংক এবং ইউনিব্রো বাই ফাংশনাল এলইডি হেডলাইট বাইকটিকে বেশ এগ্রেসিভ দেখায়। Yamaha Fz 250 এর সিট স্প্লিটেড হওয়া স্বত্তেও যথেষ্ট আরামদায়ক এবং প্রশস্ত, রাইডার এবং পিলিয়ন উভয়েই আরামদায়ক রাইডিং অনুভব করতে পারবেন। বাইকটির ডিজাইন শেপের ব্যাপারে ইয়ামাহা মোটরসের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায় ফরওয়ার্ড মাস লেআউট ও ডাউনফোর্সের উপর গুরুত্ব দিয়ে বাইকটিকে ডিজাইন করা হয়েছে যা রাইডিং ফিল কে বাড়িয়ে তোলে এবং টোটাল ডিজাইন ল্যাংগুয়েজ একজন স্পোর্টস এথলেট এর সুঠাম পেশী বা মাসল থেকে অনুপ্রাণিত।
Yamaha FZ 250 – ইঞ্জিন স্পেসিফিকেশন
Yamaha Fz 250 বাইকটিতে রয়েছে ইউরো BS VI প্রযুক্তির ফুয়েল ইঞ্জেক্টেড (FI) এয়ার কুলড সিঙ্গেল সিলিন্ডার, SOHC ২৪৯ সিসির ২ ভাল্ভ ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন যা ৮০০০ আরপিএম এ সর্বোচ্চ ২০.৮ হর্সপাওয়ার শক্তি ও ৬০০০ আরপিএম এ ২০.১ নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করে। ওয়েট মাল্টিপ্লেট ডিস্ক ক্লাচ এবং ৫ স্পিড গিয়ারবক্স একটি স্মুথ এবং প্রতি গিয়ারেই কুইক রেসপন্স দিতে সক্ষম। বাইকটির ইঞ্জিন অয়েল ক্যাপাসিটি ১.৫৫ লিটার যা সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের তুলনায় কিছুটা কম। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১৩০-১৩৫ কিমি প্রতি ঘন্টায়।
Yamaha FZ 250 – ফিচারস
Yamaha Fz 250এর কিছু উল্লেখযোগ্য ফিচারস হলো:
সিট হাইট, ওজন ও গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স: ১১০৫ মি.মি এর সিট হাইটের সাথে ১৬০ মি.মি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে বাইকটিতে। ১৫২ কেজি ওজনের কার্ব ওয়েট হওয়া স্বত্বেও বাইকটির ওয়েট ব্যালান্স খুবই সুন্দর।
ইগনিশন সিস্টেম: সেলফ ইলেক্ট্রিক ইগনিশন।
ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার: সম্পূর্ণ ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারটি FZ-s 150 v3 এর মত হুবুহু দেখতে। এতে ফুয়েল লেভেল, একাধিক ট্রিপ মিটার, স্পিডোমিটার, ট্যাকোমিটার, সার্ভিস ইন্ডিকেটর, এবিএস ইন্ডিকেটর, ঘড়ি ইত্যাদি।
টিউবলেস টায়ার: বাইকটির টায়ার সাইজ- সামনের টায়ার 100/80-17, পিছনের টায়ার: 140/70-17. টিউবলেস Ceat ও MRF ২ ধরনের radial টায়ার বাইকটির সাথে আসে যা সহজে পাংচার বা লিক হওয়ার ঝুঁকি কম।
ব্রেক: Yamaha Fz 250 বাইকটিতে ২৮২ মি.মি এর ফ্রন্ট ও ২২০ মি.মি এর রিয়ার ডিস্ক ব্রেক ব্যাবহার করা হয়েছে। বাইকটির ব্রেক ডুয়াল চ্যানেল এবিএস এর সাথে ২ পট ক্যালিপার ভার্শনের। যদিও ইয়ামাহা এবং Fz সিরিজের বাইকের ব্রেকের অসাধারণ পারফর্মেন্স সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই তারপরেও হায়ার সিসি হিসেবে এর ব্রেকেও যথেষ্ট আপগ্রেড করা হয়েছে।
সাসপেনশন সিস্টেম: বাইকটির সামনে টেলিস্কোপিক ফর্ক ও পিছনে মাল্টি এডজাস্টেবল মনোশক অ্যাবজর্বার ব্যাবহার করা হয়েছে যা একটি স্মুথ রাইডিং নিশ্চিত করবে বলে ধারণা করা যায়।
মাইলেজঃ ১৪ লিটারের ফুয়েল ক্যাপাসিটির সাথে প্রতি লিটার জ্বালানী তেলে বাইকটি ৪০-৪৫ কিলোমিটারের মাইলেজ দিতে সক্ষম। হায়ার সিসি বিবেচনায় সেগমেন্টের অন্যান্য বাইক থেকে যথেষ্ট ভাল মাইলেজ দেয় বলাই যায়। তবে জ্বালানীর মান ও রাইডিং স্টাইলের উপরে মাইলেজ কম বেশি হতে পারে।
Yamaha Fz 250 এর ভাল-মন্দ
প্রত্যেকটি বাইকেরই ভাল এবং মন্দ দিক আছে। সেই বিবেচনায় Fz 250 এর ভাল দিকের মধ্যে রয়েছে এর কমফোর্ট, ব্রেকিং, এবিএস, আরামদায়ক পিলিয়ন সিট, আপরাইট হ্যান্ডেলবার পজিশন, ভাল মাইলেজ, তুলনামূলক কম মেইনটেইনেন্স এর ঝামেলা, স্পেয়ার পার্টস এর এভেইলিবিলিটি।
বাইকটির মন্দ দিক বিবেচনা করলে নজরে আসে বাইকটি সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের তুলনায় যথেষ্ট পাওয়ারফুল নয়। যা ইনিশিয়াল রেসপন্স এবং ওভারটেকিং এর ক্ষেত্রে কনফিডেন্স এর উপর প্রভাব ফেলে, অপরদিকে সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকগুলোর মত অত্যাধুনিক ও সময়োপযোগী ফিচার এবং অ্যাপ কানেকটিভিটির ঘাটতি বাইকটিতে লক্ষ্য করা যায়। হায়ার সিসি ও আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্য বিবেচনায় বাইকটি অয়েল কুলড বা লিকুইড কুলড হলে হয়তোবা আরো ভাল হতে পারতো।
এই ছিল এক নজরে Yamaha Fz 250 এর বিস্তারিত। যারা পরিবার নিয়ে বাইকে চলাফেরা করেন, লং রাইড দেন এবং যাদের পাওয়ার এর তুলনায় কমফোর্ট ও ব্রেকিং মূল প্রাধান্য তাদের জন্য Fz 250 বাইকটি হতে পারে পারফেক্ট চয়েস।
Yamaha Fz সিরিজের অসাধারণ সাফল্যের উত্তরসূরি হিসেবে দেশের বাজারে অন্যতম সেরা জনপ্রিয়তা অর্জন করে Fz 250 মার্কেটে শক্ত প্রতিদ্বন্দিতা তৈরি করবে আশা করা যায়। ACI Motors বাংলাদেশ বাইকারদের কথা মাথায় রেখে বরাবরের মতই স্পেয়ার পার্টসের সহজলভ্যতা এবং সন্তোষজনক বিক্রোয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করে বাইকটি রিজনেবল প্রাইসে অতিদ্রুত বাংলাদেশের বাজারে লঞ্চ করবে বলে আমরা আশাবাদী।
বাইকের লঞ্চিং, মূল্য ও প্রি বুকিং, বিষয়ক তথ্য সবার আগে পেতে বাইকবিডির সাথেই থাকুন।