Yamaha Fazer ৩০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - তুর্য বসাক
This page was last updated on 15-Jul-2024 04:36pm , By Ashik Mahmud Bangla
আমি তুর্য । আজ আমি আপনাদের আমার ব্যবহার করা Yamaha Fazer বাইকটি ৩০ হাজার কিলোমিটার রাইড করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
Yamaha Fazer ৩০,০০০ কিলোমিটার রাইড রিভিউ - তুর্য বসাক
৯ম শ্রেণী থেকে বাইক চালানোর প্রতি অনেক আগ্রহ জন্মায়। এরপর এস.এস.সি পরীক্ষার পর পরিবার এর সবাইকে রাজি করতে সক্ষম হই বাইক কিনে দেওয়ার জন্য। কম বয়সের কারনে বাইক কিনে দেওয়ার জন্য মানাতে একটু সমস্যা হলেও আমি সফল হয়েছিলাম।
স্পোর্টস বাইক ছাড়া Yamaha Fazer ছিল আমার সব থেকে পছন্দের। তাছাড়া আমার বাবা ইয়ামাহা বাইক ইউজার আর মা ও ফেযার বাইকটি পছন্দ করলেন। এরপর এলো বাইক কেনার পর্ব, Bajaj Pulsar 150 Twin Disc বাইকটি ছিল আমার প্রথম বাইক। এর কিছুদিন পরই আমার পছন্দের বাইকটি ইয়ামাহা ফেযার বাইকটি কিনে ফেলি।
বাইকটির লুকস আর ব্রেকিং এর জন্য আমি বাইকটি বেছে নেই। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে আমি বাইকটি ক্রিসেন্ট এন্টারপ্রাইজ থেকে ক্রয় করি। বাইকটি প্রথমবার চালানোর অনুভূতি ছিল অসাধারন। মূলত কলেজে যাওয়া ও এর ফাঁকে একটু ঘোরা ফেরার জন্য বাইকটি চালানো হতো। বাইকটি এফআই সিষ্টেম হওয়াতে এর মাইলেজ নিয়ে আমি মোটামুটি সন্তুষ্ট। তবে ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার এর বেশি আমি পাইনি।
নিত্যদিনের প্রয়োজনে খুব ভালো পারফর্মেন্স পেয়েছি বাইকটি দিয়ে। Yamaha Fazer নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত ৩০ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছি। নিয়মিত ফ্রী সার্ভিস গুলো করেছি এবং এরপর থেকে ইয়ামাহার সার্ভিস সেন্টার এর পেইড সার্ভিস গুলো করেছি। প্রতি ৫০০০ কিলো পর পর আমি জেনারেল সার্ভিসিং করিয়েছি।
২০,০০০ কিলোমিটার পূর্বে আমি ৩৬ - ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটারে মাইলেজ পেয়েছি, ২০,০০০ কিলো চলার পর তা একটু কমে যায়। নিয়মিত সার্ভিসিং এর পাশাপাশি আমি সপ্তাহে ১ বার টায়ার পেসার চেক, চেইন ক্লিন ও লুব ও এয়ার ফিল্টার ক্লিন এগুলো করে থাকি। ৫০০০ কিলোমিটার পর থেকে প্রতি ১০০০ কিলোমিটার পর পর আমি মতুল ৫১০০ (10w40) গ্রেড এর সেমি সেন্থেটিক ইঞ্জিন ওয়েল ইউজ করেছি । এর আগে মতুলের মিনারেল (10w40) গ্রেড ব্যবহার করেছি। বর্তমানে রেপজল ফুল সিন্থেটিক ব্যবহার করছি।
এই ৩০ হাজার কিলমিটারের মধ্যে আমি কিছু পার্টস পরিবর্তন করেছি , সেগুলো হল-ব্রেক প্যাড ৫ বার, ব্রেক সু ৬ বার, চেইন স্প্রোকেট ১ বার ও ব্যাক চ্যাসিস বুশ ১ বার চেঞ্জ করেছি। ২৫ হাজার কিলো চালানোর পর ক্লাস প্লেট পাল্টাতে হয়েছে। বাইক কেনার পর প্রথম ২০০০ কিলো যত্ন নিয়ে চালালে আপনি পরবর্তীকালে ভালো সার্ভিস পাবেন আপনার বাইক থেকে।
হেডলাইট এর আলো একটু কম হওয়ায় আমি LED একজোড়া বাল্ব পরিবর্তন করি ও হাইওয়েতে পর্যাপ্ত আলো পেতে একজোড়া ফগ লাইট ইন্সটল করি। বাইকটি থেকে আমি সর্বোচ্চ ১২৪ টপ স্পিড পেয়েছি তবে ১১০ এর পর অনেক সময় নিয়েছে স্পিড তুলতে। Yamaha Fazer Fi V2 দিয়ে আমি কুমিল্লা, টাংগাইল, নরসিংদি ভ্রমন করেছি। কোনো সমস্যা ছাড়াই। সর্বোচ্চ ৩২০ কিলোমিটার একদিনে চালিয়েছি।
বাইকটির ভালো কিছু দিক :
- বাইকটি খুবই স্মুথ একটা বাইক এবং ব্যালেন্স খুব ভালো।
- অনেক কম্ফোর্টেবল একটি বাইক। (একটানা অনেকক্ষন রাইড করলেও শরীর ব্যথা অনুভব করিনি)
- হাইওয়ে পারফর্মেন্স অনেক ভালো।
- ব্রেকিং খুবই ভালো নন এবিএস হিসেবে।
- বিল্ড কোয়ালিটি ভালোই বলা যায়।
বাইকটির কিছু খারাপ দিক :
- এক্সেলেরেশন খুব কম।
- ট্যাপেট এডজাষ্ট খুব অল্প সময় ঠিক থাকে। প্রথম থেকেই।
- ২,৭১,০০০ টাকা দামটি বেশি মনে হয়েছে।
- বাইকটির উচ্চতা একটু কম মনে হয়েছে। সামান্য উচু স্পীড ব্রেকার পিলিয়ন সহ রাইড করলে ঘষা লাগে।
- ওভারটেকিং এ খুব ভালো কনফিডেন্স পাওয়া যায়না।
সবদিক বিবেচনা করলে বাইকটির পারফর্মেন্স আপনাকে মুগ্ধ করবে আশাকরি। তবে আপনি এই বাইক থেকে দ্রুত গতি পাবেন না। স্মুথ ও আরামদায়ক ভ্রমনের জন্য বাইক কিনতে চাইলে আপনি ফেজার আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন। সব সময় সেফটির সাথে এবং হেলমেট পরিধান করে রাইড করবেন। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ তুর্য বসাক
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।