TVS Raider 125 ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রাকিব

This page was last updated on 16-Nov-2023 09:20am , By Shuvo Bangla

আমি রাকিব ,ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর বসবাস করি । আমার জীবনের প্রথম বাইক TVS Raider 125 বাইকের অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

TVS Raider 125

TVS Raider 125 ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - রাকিব

আমার জীবনের প্রথম বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা হয় রাইডার ১২৫ দিয়ে । আমার আব্বু এবং আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে বাইকটা কিনেছি । বাইকটা আমি যখন অনলাইনে দেখি তখন আমার বাইকটা দেখে অনেক পছন্দ হয় তারপর ইচ্ছা হয়েছিল যখন বাংলাদেশে আসবে তখনই আমি এই বাইকটা কিনব ।

আসলে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে হওয়ার কারনে বাইকটা কিনতে অনেক দেরি হয়ে গেছে, আব্বুর জমানো টাকা এবং আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে বাইকটি কিনি । অবশেষে ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল আমার জীবনের প্রথম বাইকটি কিনতে সক্ষম হই।

বাইকটি কালো রঙ এর , টিভিএস শোরুম থেকে  বাইকটির দাম নিয়েছিলো ১,৪৫,০০০ টাকা। বাইকটি কিনতে আমি আমার আব্বু আমার দুইটা কাকা গেছিলাম । আমার বাসা থেকে শোরুম ৪ কিলোমিটার দূরে মহেশপুর থেকে বাইকটি ক্রয় করি।

প্রথম দিন ই ৫০ কিলোমিটার রাইড করি , সত্যি বলতে আমার স্বপ্ন টারে যখন আমি বাস্তবে চালাচ্ছিলাম মনের ভেতরে এতো শান্তি পেয়েছি বলে বুঝানোর মতো না, বাইকের প্রথম ৩০০০ কিলোমিটার আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে । ৫ বার ইঞ্জিন অয়েল এবং অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি ৪০০০ আর পি এম রেখে।

TVS Raider 125

ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় ৪৫ মাইলেজ পেতাম কিন্তু তার পরে ৫০ + মাইলেজ পাই । এখন বাইক ৫০০০ কিলোমিটার এখনো সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি। বাইকের ব্রেকিং, কর্নারিং, স্মুথনেস সেরা অবাক করার মতো। বাইক নিয়ে ডে লং ট্যুর দিয়েছি ৪০০ কিলোমিটার আর লংড্রাইভে এখনো যাওয়া হয় নাই ইনশাল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি যাবো ।

ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়ানোর ,বাইকের কন্ডিশন এতো ভালো পেয়েছি একটু ও কষ্ট বোধ মনে করিনি বাইকটি আসলেই অনেক সুন্দর। সিটিতে সর্বদা ৫০+ মাইলেজ পাই , হাইওয়েতে ৫৫+। বাইকের টপ স্পিড চেক করছিলাম ১১২ আমি সিঙ্গেল থাকা অবস্থায় পেয়েছি ।


বাইকে এখন পর্যন্ত নতুন লাগিয়েছি ইমারজেন্সি সুইচ, চাকায় জেল দিয়েছি, কিছু স্টিকার মডিফাইড করেছি । আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি। কন্ট্রোলিং অনেক ভালো, যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন স্টার্ট দিয়ে ইঞ্জিন ৫ মিনিট হিট করে রাখি তার পর রোডে বের হই।

বাইকের পারফরম্যান্স দিন দিন আমাকে মুগ্ধ করেই যাচ্ছে, আমার বাইকটি নিয়ে ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়াবো একদিন ইনশাল্লাহ বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রব্লেম পাইনি, বাইকে বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনি ধুয়ে ফেলি, সব সময় অকেটেন ব্যাবহার করি ।

TVS Raider 125

মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি । ৫৪০ টাকা দাম, ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ব্যবহার করি, বাইকে অফিসিয়াল ভাবে ৩ বার সার্ভিস করানো হয়েছে । বাইক রাইড করার সময় সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করি যেটা নিজের সেফটির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

TVS Raider 125 বাইকের কিছু ভালো দিক -

  • যাবতীয় সকল কাজে ব্যবহার করা যায়।
  • লুকিং গ্লাস ও হ্যান্ডেল বার অনেক সুন্দর।।
  • ব্রেকিং সিস্টেম টা চমৎকার।
  • কর্নারিং খুব ভালোভাবে করা যায়।
  • ইঞ্জিন পাওয়ার খুব ভালো ।

TVS Raider 125

TVS Raider 125 বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • লং রাইডে ব্যক পেইন হয়।
  • সিংগেল ডিক্স হওয়ার কারনে ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা।
  • রাইডার হেডলাইট টা তেমন সুবিধার না আলো অনেক কম আর একটু বেশি হলে ভালো হতো।
  • মাইলেজ মাঝে সাঝে কম পাই।

TVS Raider 125

বাইক নিয়ে এখন পর্যন্ত বেশি দূরে যেতে পারিনি কিন্তু ইচ্ছে আছে খুব তাড়াতাড়ি যাব । আসলে বাইক নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না যদি কারো বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা থাকে তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো  টিভিএস কোম্পানির রাইডার বাইকটি নিতে কারন এর পারফরম্যান্স অতুলনীয় ।
 
বাজেট হিসেবে আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে কিন্তু তবুও অনেক ভালো পার্ফরমেন্স পাচ্ছি । শেষ মুহুর্তে কিছু কথা না বললেই নয় কারন বাইক নিয়ে অবশ্যই সচেতন ভাবে রাইড দিতে হবে ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বাইক চালানো যাবে না এবং সবসময় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাতে হবে। ধন্যবাদ ।
 
লিখেছেনঃ রাকিব
 
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।