TVS Apache RTR 150 Last White Edition 2014-এর মালিক হওয়ার অভিজ্ঞতা

This page was last updated on 07-Jul-2024 07:27am , By Shuvo Bangla

আমি লিয়ান বিস্বাস,আমি একজন ছাত্র,মানিকগঞ্জে বসবাস করি,সবাই কে শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আমার TVS Apache RTR 150 Last White Edition 2014-এর মালিক হওয়ার অভিজ্ঞতা।

TVS Apache RTR 150 Last White Edition 2014

tvs apache rtr 150

আমি বাইকের অনেক পাগল ছিলাম,এখনো আছি। বলতে গেলে বাইকের পোকা।রাস্তায় কোন বাইক দেখলে আমি হা করে তাকিয়ে থাকতাম। আর মনে মনে বলতাম ইস্ কবে যে আমার একটা বাইক হবে। প্রথম আমি বাইকের প্রেম এ পরলাম যখন আমি ক্লাস 7-এ পরি।যখন আমার বড় চাচ্চু একটা বাইক কিনে আনলো।বাইকটার নাম BAJAJ CT-100. তখন 2007/2008 সাল হবে। তখন অাবার বাজাজ পালসার ও ডিসকভার 135-এর রাজত্ব ছিল।আর আমি পালসার এর পাগল ভক্ত ছিলাম। তখন থেকেই আব্বু কে বলতাম আমাকে বাইক কিনে দিতে। কিন্তু তখন ছোট ছিলাম বলে আব্বু বাইক কিনে দিতে চাইতো না।তাছারা আমি মা-বাবার একমাত্র ছেলে।

যার কারনে আরো সংকোচ ছিল বাইক দিতে।তারপরও আমার চাপে পোরে আব্বু শেষে বল্লো এইচ,এস,সি পরিক্ষার পর দিবে।অনেক আশা নিয়ে দিন গোনা শুরু করলাম। এর পর এইচ,এস,সি পাশ করলাম।এই এইচ,এস,সি পরিক্ষার আগের সময় গুলো কেটেছে আমার বিষের মতো। যাই হোক আর কথা না বারিয়ে আসল কথায় আসি।

২৬ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখ আব্বু আমাকে ডেকে বল্লো পরশু দিন অর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ আমাকে বাইক কিনে দিবে।শুনে তো আমি এক লাফ। যাই হোক আব্বু বল্লো কি বাইক কিনবা তখন পরলাম বিপদে,কারণ আমার চয়েজের মধ্যে ছিল পাচঁটি বাইক- 1.Bajaj Pulsar 2.Tvs Apache RTR 3.Yamaha Fzs 4.Honda CB Trigger and 5.Suzuki Gixxer

এই বাইক গুলি নিয়ে গত ১ বছরে নেটে ও বাইকারদের কাছ থেকে অনেক তথ্য নিয়েছি। Bajaj Pulsar আমার অনেক আগে থেকেই পছন্দের ছিল।কিন্তু Tvs Apache RTR Hyper Edge বাইকটিও আমার মন কেরে নিয়েছিলো।অন্য দিকে Yamaha Fzs কিছুদিন আগে আমার চাচাতো ভাই ক্রয় করলো।সেই বাইক চালিয়ে Fzs এর ও প্রেেম এ পরে গেলাম।

Also Read: TVS Apache RTR 160 4V ২০,০০০ কিলোমিটার রাইড - খন্দকার মিজান

Honda CB Trigger ভাল লাগতো শুধু Honda Company - এর বাইক বলে ও এর তেল খরচের জন্যে,কিন্তু এর বডিশেপ আমার ভালো লাগতো না।আর Suzuki Gixxer ভাল লাগতো এর বডিশেপের জন্যে,কিন্তু তেল খরচের জন্য ভালো লাগতো না। সব মিলিয়ে জিলিপির প্যাচ আরকি।কিন্তু আমার চাই সুন্দর ও স্মার্ট লুক,তেল খরচ কম ও ১৫০ এর একটি বাইক। আর এই সব কিছু আমি দেখলাম Apache RTR -এ আছে। আর RTR -ই আমার জন্যে উপজুক্ত বাইক।

টিভিএস এপাচি আর টি আর

শেষে আব্বু কে বল্লাম যে Tvs -এর Apache RTR বাইক টি নিবো।এরপর ২০১৫,২৮ জানুয়ারি সকাল ১০ ঘটিকায় আব্বু আর আমি আমাদের জেলাশহর মানিকগঞ্জের দিকে রওনা হলাম।মানিকগঞ্জ ঈশান মটোরস্ থেকে আমি আমার Apache RTR New White Edition বাইকটি নিলাম।বাইকটাকে New White Edition বলার পিছনে কারনটা হলো,বাইকটার তেলের ট্যাংকে আগের White Edition -এর মতো কোন কালো দাগের ডিজাইন নেই।পুরো তেলের ট্যাংকটাই সাদা এবং Apache লেখাটি এখন আর স্টিকার দিয়ে লেখা নেই পুরোটাই স্টিল দিয়ে লেখা।

একদম Bajaj Pulsar- এর মতো। পালসারের তেলের ট্যাংকে ঠিক যেভাবে Palsar লেখা থাকে সেইরকম। New Edition-এর RTR বাইকটার ডিজাইন হুবহু RTR-180 ABS- এর মতো ।আমার বাইকটার মূল্য পরেছিলো ১,৯৭,৫০০ টাকা।আমার বাইকটা সিংগেল ডিস্ক এর।যখন আব্বু বাইকের কাগজ তৈরী করছিলো তখন যে আমার কি আনন্দ লাগছিল তা ভষায় প্রকাশ করার মত না।আর যখন আমি আমার বাইক প্রথম চালালাম ওহ্ সেকি অণুভূতি।

প্রথম নিজের বাইক চালানোর স্রিতি আমার আজীবন মনে থাকবে।বাইকটা চালানোর সময় প্রথমে আমি ব্রেক,ক্লাচ ইত্যাদি যাচাই করে দেখলাম তারপর বাইকটা চালালাম।তারপর সব কিছু ঠিক হওয়ার পর আব্বুকে ব্যাক সিটে বসিয়ে বাসায় চলে আসলাম।শোরুমের ম্যানেজার আমাকে বলে দিয়েছিলো বাইকের গতি যেন কমপক্ষে ১০০০ থেকে ২০০০ কি.মি. পরজন্ত ৪৫ থেকে ৫৫ -এর বেশি না ওঠানো হয়।এতে করে ইঞ্জিন ভাল থাকে ও ইঞ্জিনের শব্দ ঠিক থাকে।আমি তাই বাইক ৫৫-এর উপরে চালাই না।

টিভিএস বাইক রিভিউ

৫০০ কি.মি. পর আমি আমার বাইকের প্রথম সাভির্সিং করাই এবং বাইকে থাকা মবিল পরিবতর্ন করি।এখন আমার বাইক ৭৮৩ কি.মি. পার করেছে। আমি আমার বাইক নিয়ে কোন ভ্রমনে এখনো যাইনি।তবে যাওয়ার আশা আছে।কিন্তু ছোট ছোট ভ্রমন যেমন ৭০ থেকে ৮০ কি.মি. এইসব ভ্রমন করেছি।আমার বাইকটা আমাকে ব্যাপক আনন্দ দিয়েছে।

আমি যখন RTR বাইকটির সম্মন্ধে তথ্য সংগ্রহ করছিলাম তখন প্রায় সকল যায়গাতেই শুনেছিলাম যে এই বাইকে নাকি ভাইব্রেশন করে চালানোর সময়,চাকা পিছলে যায় ইত্যাদি।কিন্তু আমার বাইকটা আমি যখন চালালাম তখন দেখি যতটা আমি শুনেছি ঠিক ততটা ভাইব্রেশন করে না,একেবারে না বল্লেইচলে। খুব সামান্ন একটু ভাইব্রেশন করে,পরে চালাতে চলাতে এমনি সব ঠিক হয়ে যায়।কিন্তু আমি মনে করি সব বাইকেই এরকম একটু ভাইব্রেশন হয়।কারন প্রতিটা বাইকেই ইঞ্জিন রয়েছে আর এই ইঞ্জিন যখন চলে তখন এর ভেতর একটু কম্পন তৈরী হবেই।

Also Read: TVS Apache RTR 150cc ৬০,০০০ কিলোমিটার রাইড - বাবু

তাই এটা কোন ব্যাপার না।আর চাকা একটু স্লিপ করে তবে পিছনের ব্রেকে চাপ একটু কম দিয়ে সামনের ব্রেকে চাপ দিলে সব ঠিক মতনই কাজ করবে।অর্থাৎ দুই ব্রেক একসাথে চাপতে হবে।আর,টি,আর এর কনট্রোলিং দারুন খারাপ না।চালিয়ে বেস মজাই লেেগছে।

১৫০ সিসি বাইক রিভিউ

Apache RTR -এর সুবিধা গুলো : ১.এর মিটার এ রয়েছে ঘড়ি।যা বাইকারদের জন্যে অনেক দরকারি।সাথে রয়েছে দুটি ট্রিপ মিটার। ২.সবচাইতে ভালো লেগেছে এর স্পিড রেকর্ড এর ব্যাবসতা।এই স্পিড রেকর্ড করতে গিয়ে বাইকাররা অনেক ঝুকি নেয়। যার কারনে তারা অনেক দূঘর্টনার শিকার হয়।স্পিড মিটার থাকার কারনে আর ঝুকি নেওয়ার দরকার হয় না। ৩.বাইকটা চালিয়ে আমার পিঠে কোন ব্যাথা অনূভব হয়নি।এদিকেও বাইকটা সুবিধাজনক। ৪.RTR -এর তেল খরচ ১৫০ সিসি বাইকের তুলনায় খুবই কম।প্রতি লিটার এ ৪০ থেকে ৪২ কি.মি করে যায় আমার বাইক।

Also read: TVS Apache RTR 160 ৩০,০০০ কিলোমিটার রাইড - মনোয়ারুল ইসলাম অমি

Apache RTR-এর অসুবিধা: ১.এই বাইকের হেড লাইট সিস্টেম তেমন ভাল না। লাইট পিকাপের সাথে নিভর্র করে।যার কারনে রাতে বাইক চালানো একটু সমস্যা। ২.বাইকের চাকা স্লিপ কাটার ব্যাপারটা একটু বিপদজনক।তবে একটু সাবধানতা বজায় রেখে চালালে কোন সমস্যা হবে না। ৩.বাইকটার সকেট জাম্পার অর্থাৎ পিছনের স্প্রিং মনে হয় একটু বেশি শক্ত।কারন বাইকটা অফ রোডে চলানোর সময় একটু বেশি ঝনঝন করে।এই ব্যাপারটা একেবারে বিরক্তিকর। ৪.বাইকটার সিট খোলা অনেক ঝামেলার।সিট খোলার সিস্টেম টা যদি Yamaha Fzs বা Fazer- এর মত হতো তাহলে ভাল হতো।কারন প্রতিদিনই বাইকের কাগজ পত্র বা বাইকারের ছোট ছোট দরকারি নানা ধরনের কাগজ সিটের নিচে রাখতে হয়।কিন্তু RTR-এর সিট খোলার বেলায় অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। যাই হোক এই সুবিধা অসুবিধা আমার মনে আমার বাইক সম্পর্কে কোন প্রভাব ফেলতে পারেনি।কারন আমি আমার বাইককে অনেক অনেক অনেক ভালবাসি।

আশা করি আমার এই ছোট মালিকানা রিভিউটি আপনাদের ভাল লাগবে।এখানেই শেষ করছি খোদা হাফেজ। ফেইসবুেক আমি Lian Biswas