TVS Apache RTR 150 ৩১,০০০ কিলোমিটার রাইড - ইমান আলী
This page was last updated on 31-Jul-2024 10:30am , By Raihan Opu Bangla
আমি ইমান আলী । আজ আমি আপনাদের সাথে আমার TVS Apache RTR 150 বাইকটির সম্পর্কে ছোট একটা রিভিউ শেয়ার করছি । আমি মানিকগঞ্জ এর সিংগাইর উপজেলায় বসবাস করি।
TVS Apache RTR 150 ৩১,০০০ কিমি রাইড
আমি একজন ছাত্র। বাইকটির লুকস এবং রেডি পিকাপ আমার খুব ভালো লাগে আর সেই ভালো লাগা থেকেই বাইকটি ক্রয় করা।
Click To See TVS Apache RTR 150 Bike Price In Bangladesh
বাইকটি কেনার পেছনে বাবার থেকে মায়ের ভূমিকা অতুলনীয় কারণ বাইকটি আমার মায়ের ও খুব ভালো লাগতো , বাইকটি ক্রয় করারা পরে প্রথম রাইডটা আমি মাকে নিয়েই দিয়েছিলাম কিন্ত ট্যাংক ভর্তি ফুয়েল এর টাকা বাবাই দিয়েছিল।
ওই অনুভূতি কখনোই ভুলার নয়। বাইকের মাধ্যমে পেয়েছি অনেক ভালোবাসার বড় ভাই ও স্নেহের ছোট ভাই।
TVS Apache RTR 150 In Bangladesh - Team BikeBD
এই রিভিউ সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত, আপনাদের মতের সাথে নাও মিলতে পারে । তাই আমি আমার নিজের মতো করে প্রিয় বাইকটির ভালো মন্দ দিক তুলে ধরছি ।
লুকস –
প্রথমেই আসি এই বাইকের লুকস এর ব্যাপারে, TVS Apache RTR 150 বাইকের যে দিকটি আমার সব থেকে বেশি ভাল লাগে তা হল এর লুকস, বিশেষ করে এর সামনের দিকটা আমার কাছে আসাধারন লেগেছে ।হেডলাইট, ডিজিটাল স্পিডোমিটার, ফুয়েল ট্যাংক সব মিলিয়ে বাইকটা আমার কাছে অসাধারন লাগে । প্রত্যেক মানুষের কাছে তার বাইকের একটা দিক বিশেষ ভালো লাগে,আর আমার কাছে ভালো লাগে এর ফ্রন্ট লুকস ।
Click To See All TVS Bike Price In Bangladesh
এবার আসি ব্রেকিং সিস্টেমে –
বাইকের সামনের চাকায় রয়েছে ২৭০ মিমি হাইড্রোলিক ডিক্স ব্রেক । অন্যদিকে রেয়ার ব্রেকের ক্ষেত্রে ১৩০মিমি ড্রাম ব্রেক রয়েছে । চাকায় নিদিষ্ট পরিমান হাওয়া দিয়ে বাইক রাইড করলে ব্রেকিং এ অনেক ভালো ফিডব্যাক পাওয়া যায় ।
অনেকের কাছে এই বাইকের ব্রেকিং ভালো লাগে না, কিন্তু আমি আমার বাইকের ব্রেকিং নিয়ে সন্তুষ্ট কেননা আমি এখন পর্যন্ত কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি । সিটি রাইড অথবা হাইওয়ে রাইডে আমার কখনো ব্রেকিং জনিত সমস্যায় পরতে হয়নি ।তবে এর স্টক টায়ার এর গ্রিপ খুব বেশি ভালো না , স্টক টায়ারটি পরিবর্তন করে নিলে ব্রেকিং এর ক্ষেত্রে বেশ ভালো একটা ফিডব্যাক পাওয়া যায় ।
রিম এবং টায়ার -
এই বাইকের সামনের ৯০/৯০-১৭ এবং পিছনের ১১০/৭০-১৭ সাইজের টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে । এই বাইকের সব থেকে বড় সুবিধা হল ২টি টায়ার টিউবলেস ।
তবে আমার কাছে মনে হয়েছে পেছনের চাকাটা আরো একটু মোটা দিলে আরো দৃষ্টিনন্দন হতো এবং ব্যালেন্স ভালো পাওয়া যেতো ।তাই আমি টায়ার পরিবর্তন করার সময় ১২০/৭০-১৭ টায়ার লাগিয়েছি । এতে আমার কাছে মনে হয় ব্যালেন্স অনেকটা ভালো পাওয়া যায় এবং লুকস টাও ভালোই দেখায়।
সাসপেনশন-
ফ্রন্ট সাসপেনশন টেলিস্কোপিক ফর্ক ও রিয়ার সাসপেশন ডাবল ইউনিট সাথে সুইং আর্ম রয়েছে । TVS Apache RTR 150 এর সাসপেনশঅন বেশ ভালো। ভাংগা রাস্তায় বাইকটির পেছনের সাসপেনশন দারুন সাপোর্ট দেয়।মাইলেজ -
বাইকটার মাইলেজ নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমার কাছে ব্যপারটা আসাধারন মনে হয়েছে । বাইকটি প্রায় ২৫ হাজার কিলোমিটার চালানোর পরেও মনে হয় আমি এভারেজে ৪০+ মাইলেজ পাই । তবে আমি কখনো নিখুঁত ভাবে চেক করে দেখিনি।
TVS Apache RTR 150 বাইকের কিছু খারাপ দিক-
- চেইন স্পোকেট যা ১২,০০০ কিলোমিটারে নষ্ট হয়ে যায় এবং প্রচুর শব্দ করে ও দ্রুত লুজ হয়
- স্টক হেডলাইট হাইওয়ের জন্যে যথেষ্ট না
- লং রাইড করলে ব্যাক পেইন হয়
- হাই আর পি এম এ বাইকটি থেকে প্রচুর ভাইব্রেশন আসে
রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স –
বাইকটির হাইট কম হবার কারনে বাইকটি রাইড করে খুবই আরামদায়ক আমার কাছে কারণ আমি ৫.৫” ইঞ্চি। বাইকটির একমাত্র ইস্যু হচ্ছে এর ইঞ্জিন ভাইব্রেশন । ভাইব্রেশনটি ৫ হাজার আরপিএম থেকে শুরু হয় এবং ৭ হাজার আরপিএম পর্যন্ত চলতে থাকে ।
৭ হাজার আরপিএম এর পরে ভাইব্রেশন ফুটপেগ এ প্রসারিত হয় । নিয়মিত বাইকটি ব্যবহার করতে করতে এতে অভ্যস্ত হয়ে পরেছি ।
ভাইব্রেশন এর জন্য বাইকটির রাইডিং কমফোর্ট একটু কম । আমার কাছে বাইকটির সাসপেনশন ঠিকঠাক মনে হয়েছে । সামনের এবং পেছনের উভয় সাসপেনশনই ভালো ফিডব্যাক দিয়েছে এবং এর লো রাইড হাইটের কারনে অফরোডিং এর সময়েও ভালো কনফিডেন্স পাওয়া যায় ।
TVS Apache RTR 150 এর সেরা জিনিস হচ্ছে এর ইঞ্জিন এটা আমাকে ভালো ফিডব্যাক দেয়। আমি সবসময় Haveoline 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করে থাকি । এর ইঞ্জিনের শব্দ আমার কাছে খুবই ভালো লাগে । এতে ভালো রেডি পিকাপ রয়েছে, যা আমাদের অতি সহজে যেকোনো গাড়িকে ওভার টেক করতে পারি।
বাইকটি পার্ফরমেন্স যথেষ্ট ভালো, তবে এর থেকে সেরা পারফর্মেন্স এর বাইকও রয়েছে । সামনের সাসপেনশনটি কিছুটা সফট যা অফ রোডিং এর জন্য খুবই ভালো । বাইকটি আমি হাইওয়ে ও সিটিতে রাইড করেছি তার অভিজ্ঞতা থেকেই আমার এই রিভিউটা শেয়ার করলাম।
Click To See All Bike Price In Bangladesh
জানি না কতটুকু গুছিয়ে লেখতে পেরেছি ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পরিশেষে বাইকার ভাই ব্রাদার্সদের উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই সব সময় ভালো মানের হেলমেট পরিধান করবেন। বাইকার বাইকার ভাই ভাই। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ ইমান আলী
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।