টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া বাইক ট্যুরের সম্পূর্ণ গল্প - জাহিদ হাসান
This page was last updated on 09-Sep-2025 04:48pm , By Md Kamruzzaman Shuvo
আমি জাহিদ হাসান , আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার টেকনাফ - তেতুলিয়া বাইক রাইডের ভ্রমন কাহিনী । ২০২৩ সালে মাথায় আসে একটি স্বপ্ন বাংলাদেশের এক প্রান্ত টেকনাফ থেকে আরেক প্রান্ত তেতুলিয়া পর্যন্ত বাইক ট্যুর করার। সহজ কাজ ছিল না, তবে দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি ও আল্লাহর রহমতে অবশেষে ২০২৫ সালে সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আলহামদুলিল্লাহ।
টেকনাফ টু তেতুলিয়া - ক্রস কান্ট্রি

এই যাত্রার আগে অসংখ্য ভিডিও দেখেছি, মানচিত্র ঘেঁটেছি, প্ল্যান করেছি এবং অপেক্ষা করেছি। অবশেষে সাহস জুগিয়ে আমার সাথে যোগ দেন Md Al Amin Hossen ভাই, যিনি একই স্বপ্ন বুকে ধারণ করেছিলেন। দুইজন মিলে শুরু করলাম বাংলাদেশের প্রথম ক্রস কান্ট্রি রোড টেকনাফ টু তেতুলিয়া।
যাত্রার দিনগুলো -

প্রথম দিন: টেকনাফে পৌঁছানো
ঈদের পরদিন বিকেলে রওনা হয়ে রাত ৫টার মধ্যে পৌঁছাই টেকনাফে। পথে বেশ কিছু দুর্ঘটনা চোখে পড়ে, যা মন খারাপ করে দিয়েছিল। তবে কক্সবাজারের সমুদ্রতীরে শীতল বাতাসে সব ক্লান্তি মিলিয়ে যায়। মেরিন ড্রাইভের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে পৌঁছে যাই টেকনাফ।

দ্বিতীয় দিন: টেকনাফ থেকে টাঙ্গাইল
সকালে শুরু হয় তেতুলিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা। একদিনেই টেকনাফ থেকে টাঙ্গাইল পৌঁছাই অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা ! ক্লান্তি ছিল, তবে মন ভরা ছিল উত্তেজনায়।
তৃতীয় দিন: টাঙ্গাইল থেকে তেতুলিয়া
ভোরে আবার রওনা। যমুনা সেতু, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুর, নীলফামারী পেরিয়ে অবশেষে পৌঁছাই পঞ্চগড়ে। সেখান থেকে আরও প্রায় ৪০ কিলোমিটার গিয়ে পৌঁছাই তেতুলিয়া জিরো পয়েন্টে।
সেদিনই পূর্ণ হলো বহু বছরের স্বপ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত বাইক ট্যুর ! আলহামদুলিল্লাহ ।
উত্তরবঙ্গের অভিজ্ঞতা -
উত্তরবঙ্গের প্রকৃতি সত্যিই মনোমুগ্ধকর। পথে নানা অভিজ্ঞতা হয়েছে, শিখেছি অনেক কিছু। আল্লাহর সৃষ্টির সৌন্দর্য উপলব্ধি করার সুযোগ পেয়েছি। তেতুলিয়ার চা বাগানসহ আরও অনেক জায়গায় ঘুরেছি।
Also Read: Motorcycle Price In Bangladesh
নতুন গন্তব্য: রাজশাহী
তেতুলিয়া থেকে বিকেল ৫টায় আবার রওনা দিয়ে জয়পুরহাটে পৌঁছাই রাত ৯টার দিকে। সেখানেই কাটে তৃতীয় রাত। চতুর্থ দিনে নওগাঁ হয়ে পৌঁছাই রাজশাহীতে। রাজশাহীর বিমানবন্দর, পদ্মার পাড়, আম বাগান সবকিছু ঘুরে দেখি। এরপর নাটোরে গিয়েও শহর ঘুরে তরমুজ দিয়ে নাস্তার মজাই আলাদা ছিল ।
বাড়ি ফেরা -
ফেরার পথে যমুনা সেতু থেকে টাঙ্গাইল হয়ে ঢাকা আসাটা ছিল ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। প্রচুর গাড়ির চাপ মাথায় নিয়ে অবশেষে রাত ১০টার মধ্যে বাসায় ফিরি। আলহামদুলিল্লাহ ।
সহযাত্রী আল আমিন ভাই । এই পুরো ট্যুরে Al Amin ভাই ছিলেন আমার সবচেয়ে বড় ভরসা। তিনিই অধিকাংশ সময় বাইক চালিয়েছেন। আমি কেবল সাপোর্ট দিয়েছি। তাঁর ধৈর্য, সাহস এবং ভালোবাসা ছাড়া এই ট্যুর সম্ভব হতো না।
যাত্রার বাইক -
এই স্মরণীয় যাত্রা সম্পন্ন করেছি Bajaj Pulsar 150 দিয়ে। যদিও আমার নিজের বাইক Discover 125cc, তবে এই ট্যুরে পলসারই ছিল আমাদের নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।
এই ট্যুর শুধু একটি ভ্রমণ নয় এটা আমার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মৃতিময় অভিজ্ঞতা। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বাইক চালিয়ে যাওয়া সত্যিই এক অবিস্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে। ধন্যবাদ BikeBD-কে, এতদিন ধরে তাদের কনটেন্ট দেখে প্রেরণা পেয়েছি।
লিখেছেনঃ জাহিদ হাসান
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
