Suzuki GSX-R150 ৭০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - বাপ্পি

This page was last updated on 30-Jul-2024 08:42am , By Shuvo Bangla

আমি ফারহান আহাম্মেদ বাপ্পি , আমার বাইকের নাম Suzuki GSX-R150 আমার বাইকটি বর্তমানে ৭৩৫০ কিলোমিটার রানিং। আমার বাসা ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় এবং আমরা জীবনের প্রথম বাইক ছিলো Gixxer SF, যেটা আমার প্রিয় এবং শখের একটি বাইক ছিলো।

ছোট থেকেই আব্বুর বাইকের পিছনে বসতাম, সে সময় থেকেই কেনো যেনো বাইকের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়, নিজে নিজেই আব্বুর বাইক দিয়ে বাইক শিখা হয়েছিলো। ছোট থেকে স্বপ্ন হয়ে উঠে বড় হয়ে বাইক দিয়ে দেশ-বিদেশ ঘুরবো। প্রথম দিকে Gixxer SF বাইকটি আমার অনেক ভালো লাগতো, সেটা ইউজ এর পর পরই GSX-R মার্কেটে চলে আসে।

Suzuki GSX-R150 ৭০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - বাপ্পি

বাংলাদেশের টপ-স্পিড বাইক এবং স্পোর্ট বাইক হিসেবে GSX-R বাইকটিকে অনেক পছন্দ হয়ে যায়। বাইকের লুকিং দেখার মতো, যেটা আমাকে আকস্মিত করে। চাবি ছাড়া বাইক, এটা একটু বেশি আনকমন মনে হলো। তার মধ্যে হলুদ কালার টা বেস্ট মনে হয়েছিলো।

সুজুকির শোরুম থেকে বাইকটির দাম নেওয়া হয়েছিলো কাগজ সহ ৪ লক্ষ টাকা এবং সেটি নিয়েছি চট্রগ্রাম থেকে। প্রথমে বাইকটি মার্কেট এ আসার পর সারাদিন ইউটিউব এ রিভিউ দেখতাম। বাইক কিনার ৪-৫ দিন আগে শো-রুম থেকে বাইকটি দেখে আসি তারপর কিছু টাকা কম থাকে, ওই টাকা টা অনেক কস্ট করে ম্যানেজ হয়।

টাকা ম্যানেজ হওয়ার সাথে সাথেই শো-রুমে চলে যাই এবং বাইকটি কিনে ফেলি। যখন বাইকটি রেডি করা হচ্ছিলো, তখন মনে হচ্ছিলো কখন উঠবো কখন উঠবো। আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না আমি বাইকটি কিনে ফেলেছি। বাইকটি প্রথমবার চালানোর অনুভূতি বলার মতো ছিলো না। কারন এর আগে আমার স্পোর্টস কোনো বাইক ধরার সৌভাগ্য হয় নি।

বাইকটিতে এবিএস রয়েছে, কি লেইস ইগনিশন সিস্টেম, ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট,প্যাটাল ডিস্ক, ব্রেকডুয়েল ইএম আই টি, ডুয়েল ডিস্ক ব্রেক,
টিউব লেস টায়ার রয়েছে। এই নিয়ে ৪ বারের মতো সার্ভিস করিয়েছি, ২ বার সুজুকি সার্ভিস সেন্টার এ করিয়েছি আর বাকি ২ বার এলাকার সার্ভিস সেন্টার এ।

২৫০০ কিলোমিটার এর পূর্বে ৩৭-৩৮ এর মতো মাইলেজ পেতাম এবং পরে ৩৪-৩৫ এর মতো পাই। ১০ দিন পর পরই বাইক ওয়াশ করি এবং খুবই সাবধানতার সাথে ইউজ করি বাইক। নিয়মিত বাইকের কুলেন্ট চেক করি, ডিস্ক অয়েল চেক করি, কখনোই পেট্রোল ব্যবহার না করে সব সময় অকটেন ব্যবহার করি।

বাইকের শুধু হর্ন পরিবর্তন করেছি এবং কিছু স্টিকার লাগিয়েছি। আগের হর্ন এ তেমন সাউন্ড ছিলো না তাই নতুন হর্ন লাগাই। বাইকের কোন অংশ মোডিফাই করা হয় নাই। বাইকটি দিয়ে আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পীড ছিলো ১২৩।

Suzuki GSX-R150 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • কি-লেস সিস্টেম, যার ফলে সিকিউরিটি রয়েছে অনেক।
  • এই বাইকটি সব বাইকের তুলনায় স্পিড বেশি কিন্তু মাইলেজ ঠিক আছে।
  • কম দামে স্পোর্টস বাইকের ফিল পাওয়া যায়।
  • ৫" ৪' এর থেকে ৫" ৮' মানুষের জন্য পারফেক্ট।
  • লাইটিং পজিশন এবং আলোর দিক থেকে ঠিকঠাক।

Suzuki GSX-R150 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • পিলিয়ন সিট এ পিলিয়ন নিতে খুবই কস্ট হয়।
  • বাইকটির সম্পূর্ন ভার হাতের কবজি তে পরে।
  • বাইকের সাথে একটি রিমোট দেওয়া হয়, সেটা হারিয়ে গেলে, কিনতে পাওয়া অনেক কস্টদায়ক হবে।
  • বাইকে পিলিয়ন নিয়ে লং ট্যুরে গেলে কাঁধে পেইন হয়।
  • ওভার স্পীড হলে ব্রেকিং করতে সমস্যা হয় ছোট চাকার কারনে।

বাইকটি দিয়ে ভোলা টু বরিশাল ট্যুর দেওয়া হয়েছিলো। যেখানে প্রায় ২৩০ কিলোমিটার এর মতো চালানো হয়েছে। সেই ট্যুরে কোনো ধরনের ঝামেলা হয় নি এবং সবকিছুই ভালো ছিলো মাইলেজ ও ভালো পেয়েছি।

বাইকটি নিয়ে আমার চূড়ান্ত মতামত ও পরামর্শ হলো যদি আপনি সোলো রাইডার হন সেক্ষেত্রে নিতে পারেন। ফ্যামিলি/পিলিয়ন নিয়ে ট্রাভেল করতে হলে বাইকটি না নেওয়াই ভালো।


লিখেছেনঃ ফারহান আহাম্মেদ বাপ্পি

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।