Suzuki Gixxer ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - শাহনেওয়াজ

This page was last updated on 30-Jul-2024 05:05am , By Shuvo Bangla

আমি মোঃ শাহনেওয়াজ । আমার বাসা ঝিনাইদহ , কালিগঞ্জ । আমি আমার জীবনের প্রথম বাইক Suzuki Gixxer নিয়ে অভিজ্ঞতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো।

আমার জীবনের প্রথম বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা হয় Gixxer দিয়ে যেটা ছিলো আমার ভাইয়ের এবং আমার কিছু জমানো টাকা দিয়ে। বাইকটা কেনা হয় ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। Duel Tone বাইকটা কেনার খুব ইচ্ছে ছিল কিন্তু ওটা বাজারে সরবরাহ না থাকায় সিঙ্গেল ডিস্কটা নেয়া হয়।
 

Suzuki Gixxer ৫০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - শাহনেওয়াজ

আসলে মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে হওয়ার কারনে বাইকটি কিনতে অনেক দেরি হয়ে গেছে, ভায়ের জমানো টাকা এবং আমার জমানো কিছু টাকা দিয়ে বাইকটি কিনি । অবশেষে ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আমার জীবনের প্রথম বাইকটি সুজুকির শোরুম থেকে কিনতে সক্ষম হই , বাইকটি কালো রঙ এর , দাম ছিলো ১,৭৬,০০০ টাকা , বাইকটি কিনতে আমি আমার ভাই আমার দুইটা বন্ধু গেছিলাম ।
 
আমার বাসা থেকে যশোর গেছিলাম বাইকটা কিনতে। যশোর ট্রেডিং শোরুম এর নাম এবং প্রথম দিনই ৩০ কিলোমিটার রাইড দিই , সত্যি বলতে আমার স্বপ্নটা যখন আমি বাস্তবে চালাচ্ছিলাম মনের ভেতরে এতো শান্তি পাইছি বলে বুঝানোর মতো না , বাইকের প্রথম ৩০০০ কিলোমিটার আমি ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করি খুব সুন্দর ভাবে ।
 
৫ বার ইঞ্জিন অয়েল + অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করি । সবসময় ৫০০০ আর পি এম রেখে রাইড করি। ব্রেক ইন পিরিয়ড এর সময় ৪৫ মাইলেজ পেতাম কিন্তু তার পরে ৫০+ মাইলেজ পাই । এখন বাইকে ৫০০০ কিলোমিটার সেইম পারফর্মেন্স পাচ্ছি। বাইকের ব্রেকিং, কর্নারিং, স্মুথনেস সেরা যা অবাক করার মতো।

বাইক নিয়ে ডে ট্যুর দিয়েছি ৪০০ কিলোমিটার , আর লং রাইডে এখনো যাওয়া হয় নাই , ইনশাল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি যাব । ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়ানোর , বাইকের কন্ডিশন এতো ভালো পাইছি একটু ও কষ্ট বোধ মনে করিনি ।
 
সিটি তে সর্বদা ৪৫+ মাইলেজ পাই হাইওয়ে তে ৫০+। বাইকের টপ স্পিড চেক করছিলাম ১১৫ আমি সিঙ্গেল থাকা অবস্থায় পেয়েছি এবং এখনো পাই। বাইকে এই পর্যন্ত নতুন লাগিয়েছি ইমারজেন্সি সুইস, চাকায় জেল দিয়েছি । কিছু স্টিকার মডিফাইড করেছি, আল্লাহর রহমতে কোনো এক্সিডেন্ট হয়নি।
 
আসলে কন্ট্রোলিং অনেক ভালো, যখন বাইক নিয়ে বের হই তখন কিক দিয়ে ইঞ্জিন ৫ মিনিট হিট করে রাখি তার পর রোডে বের হই । বাইকের পারফরম্যান্স দিন দিন আমাকে মুগ্ধ করেই যাচ্ছে , আমার বাইকটি নিয়ে  ইচ্ছা আছে ৬৪ জেলা ঘুরে বেড়াবো একদিন । ইনশাঅল্লাহ বাইকে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রব্লেম পাইনি ।
 
বৃষ্টি কাদা লাগলে তখনই ধুয়ে ফেলি, সব সময় অকেটেন ব্যাবহার করি । ইঞ্জিন অয়েল মটুল ব্যাবহার করি । মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল যার দাম ৫২০ টাকা । ১০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত রাইড করি । বাইকে অফিসিয়াল ভাবে ৩ বার সার্ভিস করানো হয়েছে । ৫০০ কিলোমিটার পর পর সার্ভিস করিয়েছি , বাইক রাইড দেওয়ার সময় সার্টিফাইড হেলমেট ব্যাবহার করি যেটা নিজের সেফটির জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
 

Suzuki Gixxer বাইকের কিছু ভালো দিক -

  • দূর দূরান্ত যাবতীয় সকল কাজে ব্যবহার করা যায়।
  • বাইক আসলে ফ্যামিলির অনেক প্রয়োজনে ব্যবহার করে সুবিধা পাই ।
  • লুকিং গ্লাস ও হ্যান্ডেল বার অনেক সুন্দর।
  • বাইক দিয়ে খুব অল্প সময়ে যেখানে সেখানে যাওয়া যায়।
  • ব্রেকিং সিস্টেম চমৎকার।
  • বাইক থাকার কারনে প্রিয়জন কে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারি।
 

Suzuki Gixxer বাইকের কিছু খারাপ দিক -

  • লং রাইডে ব্যক পেইন হয়।
  • আমার বাইকটি সিংগেল ডিক্স হওয়ার কারনে ড্রাম ব্রেক এ তেমন কনফিডেন্স পাইনা।
  • হেডলাইট টা তেমন সুবিধার না লাইট অনেক কম আর একটু বেশি হলে ভালো হতো
  • বাইকের গিয়ার সিফটিং এবং পিলিয়ন সিট তুলনামূলক ভাবে হার্ড।

বাইক নিয়ে এখন পর্যন্ত বেশি দূরে যেতে পারিনি কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি যাব । বাইক নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না যদি কেউ বাইক নেওয়ার চিন্তা ভাবনা করে থাকেন তাহলে অবশ্যই সাজেস্ট করবো সুজুকি কম্পানির বাইক নিতে কারন এর পারফরম্যান্স অতুলনীয় । বাজেট হিসেবে আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে কিন্তু তবু ও অনেক ভালো ।
 
শেষ মুহুর্তে কিছু কথা না বললেই নয় কারন বাইক নিয়ে অবশ্যই সচেতন ভাবে রাইড দিতে হবে ওভার কনফিডেন্স নিয়ে বাইক চালানো যাবে না এবং সবসময় সেফটি গিয়ার পরিধান করে বাইক চালাতে হবে। ধন্যবাদ ।
 

লিখেছেনঃ মোঃ শাহনেওয়াজ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।