SPC (Safe Riding Promotion Club) এর রাতের ভ্রমন

This page was last updated on 29-Jul-2024 02:49am , By Saleh Bangla

SPC (Safe Riding Promotion Club) এর রাতের ভ্রমন

মানুষের কোলাহলে পূর্ণ মাওয়া ফেরিঘাট। ঠিক যত টা হৈচৈ উল্লাস দিনের আলোয়, তার থেকে কোনো অংশে কম নয় রাতে আঁধারে। বরং রাতের বেলায় একটু বেশী জাকজমক হয়ে উঠে মাওয়া ফেরিঘাট। দূর দুরান্ত থেকে বাইক আর প্রাইভেট কার নিয়ে চলে আসে অনেকেই, তারপর চলে রাত ব্যাপি আড্ডা। SPC (Safe Riding Promotion Club) তাদের প্রথম গেট টুগেদার ট্যুর করার পর থেকেই ভাবছিল নেক্সট প্ল্যান কই করা যায়। ভাবতে ভাবতে মাথায় আসে রাতে বাইক রাইড করার কথা। 

তারপর যেই ভাবনা সেই কাজ। প্ল্যান করে নিলাম গ্রুপ নিয়ে মাওয়া যাবো। সবাই মিলে ইলিশ খাবো, আড্ডা দিবো, আরো আনন্দ করবো। তাই গত ২৯, নভেম্বর ২০১৮ রোজ বৃহস্পতিবার SPC তার গ্রুপ নিয়ে যায় মাওয়া ফেরিঘাটে। ৮ টি বাইক আর ১৫ জন মেম্বার সহ দ্বিতীয় গ্রুপ ট্যুর সম্পন্ন করলো SPC। এই ট্যুর নিরাপদ ভাবে সম্পন্ন করতে অনেক বড় ভুমিকা রেখেছে রাজিব ভাই, হাবিব, ফাহিম, অর্নব, প্রিতম,রিয়াদ,রিকু ভাই, আতিক আরো যারা ছিলো। মাওয়া ট্যুরে থাকা প্রতিটি মেম্বার কে SPC এর পক্ষ থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 

spc

SPC এর রাতের ভ্রমন এর গল্পঃ

শুধু শুধু অনেক কথা বলা হলো এখন চলুন মাওয়া যাই। ২৭ তারিখ রাত ১১ টায় গ্রুপে একটি ওয়াল পোস্ট হয় মাওয়া ট্যুর নিয়ে সেখানে মেম্বার দের রেস্পনন্স দেখে রাত ৩ টায় গ্রুপে "SPC এর রাতে ভ্রমণ" নামে ইভেন্ট ক্রিয়েট করা হয়। এত কম মেম্বারেও ভালোই রেস্পনন্স ছিলো ইভেন্টে। ২৯ তারিখ বৃহস্পতিবার রাত ১১:৩০ মিনিটে ঢাকা ইউনিভার্সিটির টি.এস.সি তে দেখা করি সবাই। 

কথা ছিলো ১২ টায় টি.এস.সি থেকে মাওয়া রওয়ানা করবে SPC। কিন্তু এক বাইকার আসতে অনেক দেরি করায় SPC তার মাওয়া যাত্রা শুরু করে রাত ১ টায়। হানিফ ফ্লাইওভার ব্রিজ থেকে নেমে কিছু দূর যাওয়ার পরেই পুলিশের খপ্পরে পরে পুরো গ্রুপ। কিছু জিজ্ঞাসা বাদ আর পেপার চেকিং এর পর পুরো দমে চলতে শুরু করে SPC। 

spc bike

অনেক খারাপ রাস্তা মাওয়ার রাস্তা তার পরও সবার মাঝে একটা আনন্দের ছাপ। যতটা নিরাপদ ভাবে রাইড করা সম্ভব ততটাই নিরাপদ ভাবে বাইক রাইড করেছে সকলে। ৮ টি বাইক এক সিরিয়ালে চলেছে পাক্কা ২ ঘন্টা। কেউ কাউকে ওভারটেক করেনি, গতি লিমিট ছিলো ৬০। রাত ৩ টা নাগাদ SPC পৌঁছে যায় মাওয়া ফেরিঘাটে। সকলের বাইক সুন্দর করে পার্ক করে আগে হয়ে যায় এক দফা চা পান। 

তার পর আমরা ২-৩ জন চলে যাই খাবারের আয়োজন করতে আর বাকিরা তাদের আনন্দের আড্ডায় মশগুল, কেউ কেউ ছবি তুলতে ব্যাস্ত। যাই হোক ইলিশ কিনে নিলাম ৩ টা ১২০০ টাকায়। ইলিশ কিনতে রীতিমত দামাদামির যুদ্ধ করতে হয়েছে। তার পর মাছ কাটা হলো। মাছ কাটার সময় সবাই মাছ কাটা কে কেন্দ্র করে অনেক মজা করলো। কে কন পিছ খাবে, ডিম গুলো কারা কারা খাবে সে এক অন্য রকম এক আনন্দ। 

spc fish

মাছ কাটার পর্ব শেষ হতে ভাজতে চলে গেলেন রাধুনি সেখানেও সবাই হাজির। নিজের হাতে মাছ ভাজলেন SPC এর অন্যতম মেম্বার রাজিব ভাই। তারপর সকলে এক সাথে এক টেবিলে। ভাত, বেগুন ভাজি, টাকি মাছের ভির্তা, সুটকি ভর্তা, আলু ভাজি, আর ইলিশ ভাজা, ইলিশের ডিম ভাজা, ইলিশের লেজের ভর্তা দিয়ে খাবারের পর্ব শেষ করলো SPC। 

তারপর ভোর ৫ টা পর্যন্ত চললো আড্ডা, ছবি তোলা। ঠিক ভোর ৫ টায় মাওয়া ছেড়ে আবারো টি.এস.সি এর দিকে রওয়ানা দিলো SPC। সেই ফিরে আসাটা ছিলো আরো কঠিন। মাওয়ার ভাঙ্গা রাস্তা আর তার সাথে ঘন কুয়াশা। ভয়ংকর এই রাস্তায় একটু ধীর গতিতেই এগিয়ে চললাম আমরা। 

spc eating

৬:৩০ নাগাদ দিনের আলো ফুটে উঠার সাথে সাথে আমাদের গতিও বারতে থাকে। ৮ টার দিকে SPC টি.এস.সি এসে পৌঁছায়। ভোরের স্নিগ্ধ তায় SPC টি.এস.সি তে ট্যুরের শেষ চায়ের কাপে চুমুক দেয়। তারপর সকলে সকলের সাথে বিদায় নিয়ে ঘরমুখো হয়। আলহামদুলিল্লাহ আমরা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি। ধন্যবাদ আপনাদেরকে কষ্ট করে পরার জন্য। আমাদের সাথে থাকুন। আপনাদের সাপোর্ট আমাদের কাম্য। সেইফ থাকুন, সবসময় ফুল ফেইস হেলমেট এবং সেফটি গিয়ার ব্যবহার করুন। 

Hasan Chowdhury LingkonAdmin SPC (Safe Riding Promotion Club)