Lifan KPS 150 মালিকানা রিভিউ - মোহাম্মদ আলী জুয়েল
This page was last updated on 09-Jul-2024 01:23pm , By Saleh Bangla
আমি মোহাম্মদ আলী জুয়েল । আমি কক্সবাজার জেলার পিএম খালী ইউনিয়নের, দক্ষিন নয়াপাড়া, বাংলা বাজারে থাকি । আমার বর্তমান বয়স ২৬ । আমি বর্তমানে লিফান কেপিএস ১৫০ বাইকটি ব্যবহার করছি । আজ আমি আপনাদের সাথে আমার Lifan KPS 150 নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করব ।
Lifan KPS 150 মালিকানা রিভিউ
কেন বাইকিং ভালবাসি আমি ৫ম শ্রেনী থেকে বাইক চালানো শিখি। আমার প্রথম বাইক চালানো শিখায় আমার কাকা ওনার ডাইং ৮০ সিসি। ওনার একটা ওয়ার্কশপ ছিল ঐখানে তার বাইক থাকতো আমি বাইক চালানোর জন্য ওয়ার্কশপে কাজ করতাম। আমার বাইক চালানো আগ্রহ দেখে কাকা হাতে ধরে বাইক চালানো শেখায়। কিন্তু কন্ডিশন ছিল ওয়ার্কশপে নিয়মিত কাজ দেখাশোনা করতে হবে আমি রাজী ।
৫ বছর পর আবার কাজ শুরু করি আমার মামার সাথে তার একটা ডিসকবার ১৩৫ সিসি ছিল । মামার আবার কাজ হচ্ছে ঠিকাদারি তো এ কাজে আমাকে বিভিন্ন দিখে যেতে হত। বাইকটির প্রতি আমার ভালোবাসা ছিলো অন্য রকম। তাই আমি আবার ঐ বাইকটি ২ বছর পর মামাকে বিক্রয় করে দেওয়ার পরামর্শদি। তার পর ওনাকে কিনতে বলি বাজাজ পালসার ১৫০ সিসি। এর কিছুদিন পর মামার সাথে ঝগড়া দিয়ে বাসায় কিছু না বলে চলে আসি চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামে ২বছর চাকরি করার পর নতুন একটা বাইক কিনেছি তা হচ্ছে বাজাজ পালসার ১৫০ সিসি। তার পর খেলা শুরু হল ট্যুর আর ট্যুর। তার পর অনলাইন থেকে বাইক নিয়ে অনেক কিছু জানতে শিখি। বাইকটা ৬ মাস চালানোর পর ছোট একটা এক্সিডেন্ট করি তারপর বাইকটা যেন কেমন লাগে তাই কিছুদিন পর বিক্রয় করে দেই।
Lifan KPS 150 Review By Team BikeBD
Lifan KPS 150 – কেন আমি লিফান কেপিএস প্রথম দেখাতেই প্রেমে পরে যাই। পরে এর সম্পর্কে অনলাইনে খোজ খবর নিয়ে যান্তে পারি যে এর মূল্য আমার সাধ্যের মধ্যে। সবচেয়ে বড় যে বিষয় তা হচ্ছে এর ৪ স্ট্রোক ইঞ্জিন সিলিন্ডার, ওয়াটার কুলড ইঞ্জিন, ৬ স্পিড গিয়ার বক্স, ২ বছর বা ২০,০০০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি। এর স্পীড, রেডি পিক আপ, কন্ট্রোল, ব্রেকিং, এবং সার্ভিস সেবা সব দিক দিয়ে লিফান সেরা।
Lifan KPS 150 - রাইডঃ প্রথম বার যখন বাইকটি রাইড করলাম মনে হচ্ছিলো আমি হিরো হাঙ্ক এর উপর বসে আছি আর তা লাগামহীন ভাবে ছুটতে যাচ্ছে তার গর্জন ই বলে দিচ্ছে সে কতোটা শক্তিশালী কিন্তু ব্রেকইন পিরিয়ড বলে একটা কথা আছে তাই ২০০০ কিমিঃপর্যন্ত ৫০কিঃমিঃ প্রতি ঘন্টা চালাতে হবে তাই মাথা ঠান্ডা করে প্রতি শুক্রবার চট্টগ্রাম থেকে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ এ যাওয়া আসা করতাম।
Lifan KPS 150 - ফিচার লিফান কেপিএস ১৫০ বাইকটি লিফান কেপিআর১৫০ এর নেকেড ভার্সন। কিন্তু এতে কিছু ছোট খাটো পরিবর্তন আনা হয়েছে অন্য সকল জাপানী ব্র্যান্ড গুলোর মত।যেহেতু এটি কেপিআর১৫০ এর নেকেড ভার্সন,তাই এর ইঞ্জিন ঠিক একই ১৫০সিসি ওয়াটার কুলডসিঙ্গেল সিলিন্ডার, দুটি ভালভ, কার্বুরেটর সমৃদ্ধ ইঞ্জিন। সিক্স গিয়ারের ইঞ্জিন ১৪.৮৮ বিএইচপি তে ৮৫০০আরপিএম এবং ১৪ এন এম টর্কে ৬৫০০ আরপিএম ক্ষমতা উৎপন্ন করতে পারে। কেপিআর আর মতই এর ইঞ্জিন স্মুদ এবং কেপিআর ভি২ এর ইঞ্জিন সমৃদ্ধ।
থ্রটল করলে আপনি প্রায় ১১০০০ আরপিএম পর্যন্ত তুলতে পারবেন।বাইকের ইঞ্জিন কম্প্রেশন রেশিও হচ্ছে তাই ইঞ্জিনে বেশি পরিমানে বাতাস প্রবাহিত হয়। প্রথম দিকে বাইকের ইঞ্জিন কিছুটা গরম হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে এটি কমে আসে এবং আবহওয়ার সাথে মানিয়ে যায়। ইঞ্জিনের এই নতুনত্বের জন্য এর এক্সেলারেশন অনেক স্মুদ ও গিয়ার বক্স অনেক নরম। যদিও প্রথম ১০০০-২৫০০কিমি পর্যন্ত একটু গিয়ারবক্সটা কিছুটা হার্ড থাকে, কিন্তু পরে সেটি ঠিক হয়ে কিন্তু প্রথম সার্ভিসিং এরপর সব কিছু নরমাল হয়ে যায়। সবার পছন্দ এক নয়। তাই রাইডারের কমফোর্ট অনুযায়ী ক্লাচ চেঞ্জ করে নেয়া যায়। লিফান কেপিএস ১৫০ এর ইঞ্জিন এবং চেসিস দুটো ই লিফান কেপিআর১৫০ এর মত করেই তৈরি করা। ১১.৪.১।ফুয়েল ট্যাংক এ ১৪ লিটার তেল ধরে যার মধ্যে ২ লিটার রিজার্ভ, এর ওজন ১৪৩ কেঃ জিঃ, সামনে এবং পিছনে হাইড্রলিক ডিস্ক ব্রেক ব্যাবহার করা হয়েছে । তবে বাইকটিতে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে।
১ - ফুল এলএইডি প্রোজেকশন হেডলাইট। ২ - ফুল এলএইডি টেল লাইট। ৩ - এলএইডি ইন্ডিকেটর। ৪ - আপসাইড ডাউন ফ্রন্ট সাসপেনশন। ৫ - রেয়ার মনোশক সাসপেনশন। ৬ - এয়ার স্কুপ বাইকের সাইডে দেয়া যাতে ইঞ্জিনে বেশি পরিমানে বাতাস প্রবাহিত হয়। ৭ - রেডিয়েটর গ্রিলস প্রোটেক্টর। ৮ - কালার চেঞ্জিং স্পিডো মিটার। ৯ - ফ্রন্ট টায়ার ১০০ এবং রেয়ার টায়ার ১৩০। ১০ - ৩০০ মিমি ফ্রন্ট ডেস্ক এবং ২২০ ডিস্ক ব্রেক। ১১ - টিউবলেস টায়ার। ১২ - ২ স্টিক এলয় রিম। ১৩ - সিট অনেক প্রশস্ত। ১৪ - এক্সহস্ট এর উপর স্টিল প্লেট দেয়া আছে যাতে পিলিয়ন গরম অনুভূব না করে। ১৫ - স্প্লিট সিট। Lifan KPS 150 – মাইলেজ বেশির ভাগ সময় আমি শহরের বাহিরে রাইডিং করেছি, সেক্ষেত্রে আমি ৩৮ থেকে ৪০ কিঃ মিঃ/লিটারে মাইলেজ পেয়েছি। আর শহরের ভিতারে রাইডিংএ ৪৫ থেকে ৪৭ কিঃ মিঃ/ লিটারে এর মত মাইলেজ পাচ্ছি।
Lifan KPS 150 – সর্ব্বোচ্চ গতি যেহেতু আমি প্রায় বেশিরভাগ সময় শহরের বাহিরে বাইক চালিয়েছি তাই আমি এর সম্পুর্ন স্পিড টেস্ট করার সুযোগ পেয়েছি। আমার বাইকের টপ স্পিড ছিল ১২৮ কিঃমিঃ/ঘঃ, যদিও সেটা ঢাকা-ময়মনসিংহ হাইওয়েতে।
লিখেছেন - মোহাম্মদ আলী জুয়েল
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।