Lifan KPR165R NBF2 টেস্ট রাইড রিভিউ - টীম বাইকবিডি
This page was last updated on 01-Aug-2024 01:40pm , By Ashik Mahmud Bangla
প্রায় ৬ বছর ধরে বাংলাদেশে রাজত্ব করে আসছে লিফান কেপিআর, এবং এতোদিনেও এর বড় কোন পরিবর্তন আসেনি। তারা বাইকে নতুন কালার, বড় ইঞ্জিন, ফুয়েল ইনজেকশন, ইত্যাদি দিয়েছে, কিন্তু বাইকের ফ্রেমওয়ার্ক এবং চ্যাসিস সবসময় একই ছিলো। আজ আমরা এসেছি Lifan KPR165R NBF2 এডিশন এর রিভিউ নিয়ে, যেটা গতবছর রিভিউ করা Lifan KPR165R থেকে অনেকটাই আলাদা!
Lifan KPR165R NBF2 টেস্ট রাইড রিভিউ
Lifan KPR165R NBF2 – ফিচারস
- NBF2 ইঞ্জিন
- ইঞ্জিনে নতুন ক্র্যাংককেস, কুলেন্ট ইনলেট এবং নতুন ট্রান্সমিশন
- অয়েল ফিল্টার
- ক্লাচ প্লেট
- Keiphin pZ30 কার্বুরেটর
- কেপিএস এর রিম
- কেপিটি এর সুইংআর্ম
- ১৩০ সেকশন রিয়ার টায়ার
- ৪৯ দাঁতের রিয়ার স্প্রকেট
- নতুন কালার স্কীম
নতুন এই ইঞ্জিনটি আগের চাইতে অনেকটাই স্মুথ, এবং আপনি প্রথম মুহুর্ত থেকেই বুঝতে পারবেন যে বাইকটির গিয়ারবক্স অনেকটাই সফট, এবং গিয়ার পরিবর্তন করা অনেক সহজ। নতুন NBF2 ইঞ্জিনটি আগের মতোই ১৬.৭ বিএইচপি শক্তি এবং ১৭ নিউটন মিটার টর্ক উতপন্ন করে। ইঞ্জিনটি সিঙ্গেল সিলিন্ডার, ২-ভালভ ওয়াটার কুলড ইঞ্জিন যাতে ইঞ্জিনের ভাইব্রেশন কমানোর জন্য ব্যালেন্স শ্যাফট দেয়া হয়েছে। ৭ হাজার আরপিএম থেকে বাইকের ভাইব্রেশন শুরু হয়, এবং ৯ হাজার আরপিএম পর্যন্ত চলে।
Lifan KPR165R NBF2 এর ভিডিও রিভিউ
Lifan KPR165R NBF2 এর আরো কিছু ফিচারস:
- এলইডি প্রজেকশোন হেডলাইট
- এলইডি টেইললাইট
- ৩৭ মিলিমিটার এর ফ্রন্ট টেলিস্কোপিক সাসপেনশন
- রেডিয়েটর গার্ড
- ৭৭৫ মিলিমিটার এর স্যাডল হাইট
- এনালগ আরপিএম কাউন্টার সহ ডিজিটাল স্পীডোমিটার
- স্প্লিট সীট।
লিফান কেপিআর মূলত ২টি কারনে বাংলাদেশের বাইকারদের মন জয় করে নিয়েছিলো, প্রথমটি ছিলো এর দাম, এবং দ্বীতিয়টি ছিলো এর লুকস। বাইকটির সিঙ্গেল প্রজেকশন হেডলাইট বেশ ভালো আলো দেয়। তারা এখনো বাইকটিতে বাল্ব ইন্ডিকেটর ব্যবহার করছে, এখানে এলইডি ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা দরকার ছিলো। বাইকটি উচ্চতায় বেশ ছোট, ফলে যেসকল বাইকাররা উচ্চতায় একটু কম, এমনকি যারা ৫ ফুট ২ উচ্চতার, তারাও সহজেই বাইকটি রাইড করতে পারবেন। বাইকটির অন্যতম একটি ইস্যু হচ্ছে এর টার্নিং রেডিয়াস, বাইকটি ঘোরানোর জন্য বিশাল পরিমানের জায়গার প্রয়োজন হয়। এছাড়াও বাইকটির সুইচ কোয়ালিটি মোটামুটিমানের।
লিফান এই বাইকটিতে রঙ এর মান বৃদ্ধি করেছে। বাইকটির নতুন কালার ও গ্রাফিক্স আমার খুবই পছন্দ হয়েছে। বাইকটির রাইডিং পজিশন এগ্রেসিভ নয়, এর থ্রি পার্ট হ্যান্ডেল রাইডারকে বেশ ভালো ব্যালেন্সড একটি রাইড দেবে। বাইকটির ব্রেকিং এবং হ্যান্ডলিং নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। আধুনিক স্পোর্টস বাইকের মতো এতে এবিএস বা সিবিএস না থাকলেও সামনের ৩০০ মিলিমিটার এর ফ্রন্ট ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনের ২২০ মিলিমিটার এর ডিস্ক ব্রেক যথেষ্ট ভালো কাজ করে। বাইকটির পেছনের ১৩০ সেকশন টায়ার এখন আপনাকে আরো বেশি গ্রিপ ও কনফিডেন্স দেবে, বিশেষত কর্নারে এবং ১০০ কিমি/ঘন্টা স্পীড থেকে একদম স্থির হয়ে থামার ব্যাপারে এটা ভালো পারফর্ম করে। বাইকটিতে এবিএস বা সিবিএস না থাকার ফলে আপনি বাইকটি নিয়ে বেশ মজা করে রাইড করুতে পারবেন। যদিও এবিএস এবং সিবিএস থাকা ভালো একটি আইডিয়া, কিন্তু এগুলো না থাকার ফলে বাইকটি রাইডারকে আরো বেশি কানেক্টেড রাখে। ভালো রাস্তায় বাইকটির সামনের এবং পেছনের সাসপেনশন বেশ ভালো কাজ করে। তবে, খারাপ রাস্তায় পিলিয়নসহ পেছনের সাসপেনশনটা ভালো পারফর্ম করে না। হাইওয়েতে পিলিয়নসহ রাইড করার জন্য বাইকটি বেশ ভালো একটি মেশিন, এবং পেছনের গ্র্যাব রেইল পিলিয়নকে যথেষ্ট পরিমান সাপোর্ট দেয়।
যদিও বাইকটি আগের ভার্শনের চাইতে আরো বেশি রিফাইনড, কিন্তু এটা একটু বেশিই স্মুথ। এছাড়াও বাইকটির টপ স্পীড কিছুটা কমের দিকে। আমরা আমাদের টেস্টিং এর সময় বাইকটির টপ স্পীড পেয়েছিলাম ১৩৬ কিমি/ঘন্টা। বাইকটির মাইলেজ আমরা পেয়েছি শহরে ৩২ কিমি/লিটার, এবং হাইওয়েতে ৩৬ কিমি/লিটার।
পেছ্নে মোটা রিয়ার টায়ার থাকার কারনে বাইকটি কর্নারে আরো অনেক বেশি রোল করে। তারা বাইকের সামনের টায়ারটা পরিবর্তন করেনি, যেটা হতাশাজনক। যদিও বাইকের টায়ারের গ্রিপ বেশ ভালো, তবে আমার মতে বাইকটির সামনে ১০০ সেকশন টায়ার দেয়া দরকার ছিলো। বাইকটির ইন্সট্যান্ট এক্সেলেরেশন বেশ ভালো, তবে এফআই ভার্শনের মতো ভালো নয়। বাইকটির ব্রেকিং সেটাপ নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। আমরা জানুয়ারি ২০২০ এর শীতকালের মাঝে বাইকটির টেস্ট রাইড করেছি কাজেই আমরা বাইকটির ওভারহীটিং ইস্যু পাইনি।লিফান দাবী করে নতুন কুলেন্ট ইনলেট এর কারনে বাইকটির হিটিং ইস্যু সলভ হয়ে গেছে।
বাংলাদেশে Lifan KPR এর ৩টি ভ্যারিয়ান্ট রয়েছেঃ
Lifan KPR150 (কার্বুরেটর) - ১,৮৫,০০০ টাকা LIfan KPR165R (কার্বুরেটর) – ১,৯৯,০০০ টাকা Lifan KPR165R (ফুয়েল ইনজেকশন) - ২,১০,০০০ টাকা
Lifan KPR65R – ভালো দিকসমূহঃ
- স্মুথ গিয়ার চেঞ্জ
- ভালো ব্রেকিং স্ট্যাবিলিটি
- পেছনে ১৩০ সেকশোনের টায়ার ভালো কনফিডেন্স দেয়
- বাইকের এলইডি প্রজেকশন হেডলাইট ফ্যান্টাস্টিক
Lifan KPR165R - খারাপ দিকসমূহঃ
- টার্নিং রেডিয়াস বেশ বড়
- পেছনের সাসপেনশন খুব একটা ভালো নয়
- এফআই ভার্শনের তূলনায় ইঞ্জিনের রাফনেস কম
- মাইলেজটি কিছুটা হতাশাজনক
স্পোর্টস সেগমেন্টে লিফানের নতুন একটি বাইক ডেভেলপ করার সময় চলে এসেছে। বর্তমান কেপিআর সিরিজ বেশ লম্বা একটা সময় ধরে চলে আসছে। গুজব শোনা যাচ্ছে যে লিফান একটি নতুন কেপিআর বাইক ডেভেলপ করছে, তবে এটা ২০২১ সালের আগে লঞ্চ হবার কোন সম্ভাবনা নেই। Lifan KPR165R NBF2 সম্পর্কে বলতে হয়, এটা আগের কেপিআর বাইকগুলোর থেকে একটি বেশ বড় ইমপ্রুভমেন্ট। বাইকটি বর্তমানে আগের চাইতে আরো অনেক বেশি স্মুথ এবং রিফাইনড, এবং তারা যদি বাইকটি থেকে আরেকটু মাইলেজ বৃদ্ধি করতে পারে, তবে ব্যাপারটা আরো ভালো হবে।