Honda X-Blade 160 ABS বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - আসিফ
This page was last updated on 01-Aug-2024 03:48am , By Shuvo Bangla
আমি আসিফ , থাকি ঢাকার খিলক্ষেত এলাকায় । জীবনের প্রথম বাইক Honda X-Blade 160 ABS বাইক নিয়ে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো । তার আগে আমি আমার বাবার বাইক বাজাজ বক্সার ব্যবহার করতাম।
বাইক পছন্দ আমার ছোটবেলা থেকে। বাবা চাচারা বাইক ব্যবহার করতেন। ছোটবেলায় মটোজিপি , ভাইস সিটি গেমসে বাইক চালিয়ে নিজেকে হিরো হিরো লাগতো। যাই হোক, বাইক আমার সখের এবং ঢাকা সিটিতে চলাফেরা করার জন্য খুব গুরুত্বপুর্ন বাহন। অল্প সময়ে গন্তব্যে যাওয়া যায়।
বাইক পছন্দের জন্য আমি বিবেচনা করেছি যথাক্রমে, বাজেটে ভালো ব্রেকিং, পিলিয়নের কমফোর্ট, কিছুটা স্টাইলিশ লুক এবং মাইলেজ। দেখলাম মার্কেটে এই বাজেটে এক্সব্লেড বেটার। তাছাড়া এটার প্রথম মডেল আমি ব্যবহার করেছিলাম আমার কাজিন থেকে। সেটা সিঙ্গেল ডিস্ক ছিলো। সেটা ব্যবহার করে আমার খুব ভালো লেগেছিলো। পরে জিক্সার এবিএস পছন্দ হলেও বাজেট আর পিলিয়ন কমফোর্ট চিন্তা করে এক্সব্লেড এবিএস নিলাম।
বাইকের দাম ২,১৫,৫০০/- টাকা । ফকিরাপুল হোন্ডার অফিসিয়াল শোরুম থেকে কিনেছিলাম। ২৯ মে ২০২৩ তারিখে। আমার বাবাকে সাথে নিয়ে কিনতে গেলাম। জীবনের প্রথম বাইক উনাকে নিয়ে যাবো সেটা আনন্দের। মা আর স্ত্রীকেও নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু সেটা তাদের কষ্ট হবে বলে নেয়া হয়নি। প্রয়োজনীয় পেপারস নিলাম। ভোটার আইডি, বিলের কপি, ছবি ইত্যাদি।
কেনার পরে বাবাকে দিতে স্টার্ট করালাম। চালাতে বললাম কিন্তু উনি ছোট বাইক চালিয়ে অভ্যস্ত তাই এটা চালাতে চাইলেন না। পরে বাবাকে সাথে নিয়ে বাইক চালিয়ে বাসায় এলাম। বাইকটি প্রথমবার চালানোর অভিজ্ঞতা অন্যরকম ছিলো। যেমন আগে অন্যে বাইক চালিয়েছি। কিন্তু নিজের বাইক যখন চালাচ্ছিলাম তখন একটা অন্য রকম ভালো লাগছিলো নিজের কাছে।
সিটিতে অনেক জ্যাম। অফিস টাইমে বাস পাওয়া কষ্ট। আমার স্ত্রীও জব করেন। আমি কোনমতে বাসে উঠতে পারলেও তার জন্য কষ্ট হয় অনেক। তাছাড়া বাসে যাতায়তের সময় অনেক লাগে। এসকল বিষয় বিবেচনা করে মুলত বাইক ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
ফিচার সম্পর্কে বলতে গেলে এটা অন্য সব বাইকের মতই। গিয়ার ইন্ডিকেটর, মিটার, ডিজাইন, এবিএস রেসপন্স। প্রয়োজনীয় সব কিছু দেয়া আছে। একট্রা কিছু লাগাতে হয়নি। কার্বোরেটর ইন্জিন বেশ ভালো মাইলেজ দেয়। পাওয়ার যথেষ্ট ভালো যার জন্য আমি রাস্তায় চলতে বেশ কনফিডেন্স পাই। সামনে ৮০ সইজের টায়ার, যদিও এটাতে তেমন কোন সমস্য হয়নি তাও পরে আমি ৯০ সাইজ লাগিয়ে নিয়েছি।
প্রতিদিনের অনুভুতি বলতে, বেশ রিল্যাক্স ফিল করি। বাসা থেকে বের হবার সময় মনে হয় আরামসে যেতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো সাপোর্ট পাচ্ছি। মোইনটেন্যান্স বলতে, মাসে একবার ফোম ওয়াশ করি দরকার হলে। মাঝে বর্ষার কারনে বেশী কাদা জমে গেছিলো। আমি বাসার গ্যারেজে বসে নিজেই ওয়াস করি । মাঝে মাঝে চেইনে লুব দিই। কেনার পরে একবার সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে চেইন ক্লিন করিয়েছি।
২৫০০ কিলোমিটার পুর্বে ৪৫+ মাইলেজ পেয়েছি। খুব এ্যাকুরেট ক্যালকুলেশন করা হয়নি কিন্তু আমার হিসাবে ৪৫+ যাচ্ছে। মাঝে মাঝে চেইন লুব করি। সার্ভিসিং এ গিয়ে ব্রেক, টায়ার প্রেসার চেক করি । হোন্ডার মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি 10W30 গ্রেডের । সামনের চাকা ৮০ সাইজ ছিলো , ৯০ লাগিয়েছি। ৮০ সাইজের টায়ারে সমস্যা ছিলো না কিন্তু বেটার গ্রিপের জন্য, ভালো দেখার জন্য এক সইজ বড় টায়ার লাগিয়েছি। কোন মডিফাই করা হয়নি। ৯৮ পর্যন্ত স্পিড তুলেছিলাম ৩০০ ফিট পুর্বাচল রোডে।
Honda X-Blade 160 ABS বাইকের কিছু ভালো দিক -
- মাইলেজ
- পিলিয়ন কমফোর্ট
- পাওয়ার যা আমার চলাচলের জন্য যথেষ্ট
- লুকস
- ব্রেকিং
Honda X-Blade 160 ABS বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- সামনের চাকা ৮০ সাইজের
- ৩-৪ গিয়ারে মাঝে মাঝে গিয়ার হার্ড হয়ে যায়
- প্লাস্টিক কোয়ালিটি কিছু কিছু যায়গায় ভালো লাগেনি
- ইন্জিন কিল সুইচ নাই
- হেড লাইটের আলো কম
বাইকটি নিয়ে এখনো কোন লং ট্যুর করা হয়নি ইচ্ছে আছে অনেক লং ট্যুর করবো ইনশাআল্লাহ। আমার সামর্থ্যের মধ্যে এই বাইকে আমি অনেক হ্যাপি। আমার নিত্য দিনের প্রয়োজন আমি অনায়াসে মিটাতে পারি। আলহামদুলিল্লাহ। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ আসিফ