আমি এবং আমার হোন্ডা স্টানার সি.বি.এফ
This page was last updated on 02-Jul-2024 10:20am , By Ashik Mahmud Bangla
হাই আমি শুভ,আমি এখানে আমার হিরো হোন্ডা স্টানার সি.বি.এফ ( Honda Stunner CBF ) সম্পর্কে আমার অনুভূতি প্রকাশ করতে এসেছি । প্রথমেই আমি “বাইকবিডি” কে ধন্যবাদ দিতে চাই ,এ কারণে যে তারা বাংলাদেশের চালকদের বাইক সম্পর্কে তাদের অনুভূতি প্রকাশের জন্য একটি ক্ষেত্র তৈরী করে দিয়েছে ।
ছোটবেলা থেকেই আমি মোটরসাইকেলের প্রতি খুবই আগ্রহী ছিলাম । মোটরসাইকেল চালানোর ইচ্ছা কখনো গোপন রাখতে পারতাম না। আমি বাইকে বসতে ভালবাসতাম । আমি বাইক চালানো শিখেছি হোন্ডা ৮০ সি.সি এর সাহায্যে ।
এরপর আমার বাবার ইয়ামাহা আর.এক্স ১০০ তে বহুবার চড়েছি ।২০০৩ সালে আমার পরিবার শরীয়তপুর থেকে ঢাকায় চলে আসে।
আমি এবং আমার হোন্ডা স্টানার সি.বি.এফ
আমি মোটরসাইকেল কিনতে চাছিলাম, কিন্তু আমার পরিবার আমাকে বাইক কেনার অনুমতি দিচ্ছিলনা । কিছুদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগার পর............আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমি নিজের টাকা দিয়ে বাইক কিনব। আমি একজন গায়ক । আমি কিছু স্টেজ শো করি এবং টাকা জমায় । তারপর ২০১১ সালে আমি আমার নিজের জমানো টাকা দিয়ে একটি হোন্ডা স্টানার কিনি ।
ডিজাইনঃ
১২৫ সিসির ইকোনমি ক্লাসের সাধারণ বাইকগুলোর মধ্যে Honda CBF Stunner ছিল আধুনিক স্টাইলিশ ডিজাইনের প্রতীক। নিচু হাতল,নিচু সিট এবং রিয়ারসেট লেগ পেগ সবকিছু মিলিয়ে এর ডিজাইন ছিল অসাধারন। সকল হোন্ডা বাইকের ইঞ্জিন ডিজাইন করা হয় চালকের আরামকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে। অন্যান্য হোন্ডা বাইক গুলোর মত নয় এতে রয়েছে কিছুটা কড়া সাসপেনসন রয়েছে যাতে বিভিন্ন খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও বাইকটি সুন্দরভাবে দাড়িয়ে থাকতে পারে ।
ইঞ্জিনঃ
এতে রয়েছে ১২৪.৭ সিসির ইঞ্জিন । নতুন গিয়ারবক্স আশ্চর্য মসৃণতায় শক্তি সরবারাহ করে । বাইকটি ৬.১ সেকেন্ডেই ০-৬০ কি.মি গতিতে উপনীত হয় এবং এটার সর্বোচ্চ গতি রেকর্ড করা হয়েছে ১০০.৩ কি.মি প্রতি ঘণ্টায় । এর ব্রেকিং ব্যবস্থা এমন একটি চলমান অনুভূতি দেয় যেন এটা সামনের ব্রেকের লিভার হতে চালকের দিকে আসছে । এর সামনের দিকে রয়েছে ২৪০ মি.মি ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে রয়েছে ১৩০ মি.মি ড্রাম ব্রেক।
মাইলেজঃ
জ্বালানীর ক্ষেত্রে এটা তার বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী ও ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে ভ্রমণের সাথে তুলনীয় । যদিও হোন্ডা সি.বি.এফ স্টানার প্রতি লিটার পেট্রলে প্রায় 8৮ কিলোমিটার যায় । একটি বাইকের জন্য এটা খারাপ নয় কেননা এতে চড়লে ১৫০ সিসি বাইকের অনুভূতি পাওয়া যায় । এটি দেখতে অন্যান্য স্টান্ট বাইকের মত এবং খুব দ্রুত ১০০ কি.মি গতি তুলতে পারে।
আরামঃ
সম্পূর্ণ নতুন ১৭ ইঞ্চি হুইল গ্রিপ রাবারের সাথে যুক্ত যেটা টি.ভি.এস ইউরোতে ব্যবহার করা হয়েছে । এটা দেখতে খুবই সুন্দর যতক্ষণ না এটা চলতে শুরু করছে । প্রতিদিন অফিসে আসা-যাওয়ার বাইক গুলোর জন্য এ টায়ার গুলো অত্যন্ত উপযুক্ত কিন্তু কেউ যদি অতিরিক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে এর কার্যক্ষমতা কমিয়ে ফেলে তাহলে এটা চালককে যথাযথ সার্ভিস দেবে না । অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে হার্ড ব্রেকের সময় হটাৎ টায়ার লক হয়ে যায় যা চালকের জন্য পরিস্থিতি জটিল করে তোলে ।
ভেজা আবহাওয়ায় ইঞ্জিনের কার্যকারিতা খুবই বাজে যদিও এটা খারাপ অবস্থার উপযোগী বাইক হিসেবে তৈরী করা হয়নি । এমনকি ইমারজেন্সি ব্রেক কিংবা আদ্র আবহাওয়াতেও এর ইঞ্জিনের শক্তি সঠিকভাবে কার্যক্ষম নয় । এ বাইকের একজন অন্ধ ভক্ত হিসেবে এটা আমার চড়া অন্য বাইক গুলোর চেয়ে ভালো ।আমি দীর্ঘদিন ধরে বাইকের দুনিয়ায় আছি । স্টানার এর কার্যক্ষমতা অনুসারে ১২৫ সিসির বাইকগুলোর মধ্যে এটি একই সাথে হাইব্রিড বাইক এবং অর্থনৈতিকভাবেও সাশ্রয়ী ।
তাই এটি একই সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও বাড়িতে ব্যবহার উপযোগী। উত্তরা থেকে বনানি যেতে যে বাইকটি স্টানারের থেকেও ভালো পারফরমেন্স দেয় সেটি হল বাজাজ পালসার তাও এর নতুন অবস্থায় ।
Also Read: বাংলাদেশে পৌনে ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে হোন্ডা
তাই স্বাভাবিকভাবেই এতে হোন্ডা বাইক পরিবারের মকুটে একটি মূল্যবান রত্ন। এটি এমন একটি বাইক যা একই সাথে চালককে গতির বৈচিত্র্য ও সাশ্রয়ী ভ্রমণ দ্বারা সন্তুষ্ট করে ।
Also Read: হোন্ডা মোটরসাইকেলের মূল্য হ্রাস
ভালদিকসমূহঃ
মসৃণ ডিজাইন, শক্তিশালী ইঞ্জিন, ১২৫ সিসির ইঞ্জিন হিসেবে দ্রুত গতি বৃদ্ধি ,আরামদায়ক ভ্রমণের ব্যবস্থা এবং সবশেষে ভালো মাইলেজ।
খারাপদিক সমূহঃ
কোন কিক স্টার্ট নেই শুধুমাত্র ইলেকট্রিক স্টার্ট ,কিছুটা নিচু এবং বডির প্যাঁচানো স্টাইল, ডিজাইন অনুযায়ী হালকা ওজনের ।
সবকিছু বলার পরও হোন্ডা সি.বি.এফ স্টানার (Honda CBF Stunner) আমার চালানো সেরা বাইক এবং আমি এটা বলছি দীর্ঘদিন ধরে আমার বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা থেকে ।
- লিখেছেন সুস্মিত শুভ