Honda CB Hornet 160R বাইক নিয়ে রাইডিং অভিজ্ঞতা - জিতু
This page was last updated on 01-Aug-2024 11:59am , By Shuvo Bangla
আমার নাম মো: সজিব হোসেন জিতু। আমি বর্তমানে ঢাকার হাজারীবাগে বসবাস করছি। শেয়ার করবো Honda CB Hornet 160R বাইক নিয়ে আমার রাইডিং অভিজ্ঞতা । যদিও আমি ঢাকার স্থানীয় না, আমার গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। বাইক সম্পর্কে বলতে গেলে আমার জীবনের ১ম বাইক ছিলো বাজাজ পালসার ১৫০।
বর্তমানে আমি হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর ইউজার। আলহামদুলিল্লাহ ভালো বাইক, ভালো মাইলেজ। ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি ভালোবাসার কারন হলো আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার বাবার বাইক ছিলো। ছোটবেলায় ভাবতাম বড় হয়ে আমিও বাইক কিনে বাবাকে পছনে বসাবো, আলহামদুলিল্লাহ তাই হয়েছে।
আমি এখন পর্যন্ত ২টা বাইক কিনেছি, দুটোই সেকেন্ড হ্যান্ড কিনেছি। দুটি বাইকই ফেসবুক মার্কেটপ্লেস থেকে কিনেছিলাম। হোন্ডা সিবি হর্নেট ১৬০আর বাইকটি পছন্দের কারন ছিলো বাজেট, মাইলেজ, একটা লং লাস্টিং ইঞ্জিন। আমি ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বাইকটি কিনেছিলাম। প্রথম যখন বাইকটা চালালাম, এক অসাধারন মুহুর্ত তবে ১ম বাইকের মত এতো এক্সসাইটেড ছিলাম না তবে অনেক আনন্দ লাগছিলো।
বাইকটিতে সর্বপ্রথম বাবাকে নিয়ে ঘুরি। আমার পরিবারের সবাই বাইকটি পছন্দ করে তবে মজার বিষয় হইলো আমার ছেলে শুধু লাল গাড়ি বলে, কারন আমার পালসারটা লাল রংয়ের ছিলো। হর্নেটের সবচেয়ে ভালো দিক হলো এর কন্ট্রোলিং। বাইকটির কন্ট্রোলিং অনেক ভাল যদিও আমি সিংগেল ডিস্ক ইউজার। আসলে কোনও বাইকই শতভাগ পার্ফেক্ট না। তবুও আমি বিশ্বাস করি বাইকের যত্ন নিলে বাইক আপনাকে ভালো সার্ভিস দিবে।
প্রতিদিন বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমি একটা দোয়া পরে বের হই। (বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আল্লালাহ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাহ বিল্লাহ) আমি সকালে সেল্ফ স্টার্ট দেই না, কিক স্টার্ট করি এবং ইঞ্জিনটি গরম হওয়ার জন্যে কিছুক্ষন অপেক্ষা করি।
আমি যখন বাইকটি নেই তখন ওডো ছিলো ২৭০০০ কিলোমিটার , বাইকটি নেয়ার পর থেকে আমি ২ বার সার্ভিস করিয়েছি। সেটা হোন্ডার অথোরাইজ সার্ভিস সেন্টার থেকেই করেছি। এয়ার ফিল্টার চেঞ্জ করিয়েছি, প্রতি ১০০০-১১০০ কিলোমিটারে ইঞ্জিন অয়েল ড্রেইন দিয়েছি।
আলহামদুলিল্লাহ কেনার পর থেকেই আমি মাইলেজ ৪০+ পাচ্ছি হাইওয়েতে আরো বেশি পাই। আমি আমার বাইককে অনেক বেশি টেক কেয়ার করি। মাসে ৩/৪ বার ওয়াস করি, ওয়াসের পর হোন্ডা ব্র্যান্ডের চেইন লুব ইউস করি। ভালো সুতি সফট কাপর দিয়ে বাইক পরিষ্কার করি। যেখানেই বাইক রাখি, রোদ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করি। সবসময় ডাবল স্ট্যান্ড করে রাখি, প্রতিবার বাইক চালানোর আগে দেখি সব ঠিক ঠাক আছে কিনা।
কেনার পর থেকে আমি আমার বাইকে সবসময় হোন্ডা ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি 10W30/ Minarel, Semi Synthetic মুল্য ৬২০ টাকা। পারফরমেন্স মোটামুটি ভালোই পাচ্ছি।
বাইকটি কেনার পর তেমন বড় কোন কিছুই চেইঞ্জ করি নাই শুধু এয়ার ফিল্টার ছাড়া হঠাৎ মাইলেজ একটু কম পাচ্ছিলাম মেকানিক বললো এয়ার ফিল্টার চেঞ্জ করতে হবে, সাথে সাথেই চেঞ্জ করে ফেলি। যদিও খুব দ্রুতই ব্রেক প্যাড চেঞ্জ করতে হবে। এছাড়া আমার বাইকে তেমন কোনো মডিফিকেশন নেই।
বাইকটিতে আমি ১৩৪ পর্যন্ত টপ স্পিড তুলেতে সক্ষম হয়েছি।
Honda CB Hornet 160R বাইকের কিছু ভালো দিক -
- কন্ট্রোলিং
- চেইন স্পোকেট
- মাইলেজ
- ইঞ্জিন সাউন্ড খুব স্মুথ
- ফ্যামেলি সাইজ বাইক
Honda CB Hornet 160R বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- সাইড স্ট্যান্ড উঠানোর জন্য সেন্সর দরকার ছিলো।
- মবিল ড্রেন নাটের ওয়াসার খুব দ্রতই নষ্ট হয়ে যায়।
- মনে হয় খুব দ্রুতই ব্যাটারি ডাউন হয়ে যায়।
- সেল্ফ মাঝে মাঝে ছেড়ে দেয়।
- টাইমিং চেইন জনিত প্রবলেম দ্রতই হতে পারে ।
আমার বাইকটি নিয়ে আমি সবচেয়ে দূরের পথ বেনাপোল পর্যন্ত গিয়েছি। মাওয়া হয়ে ফরিদপুর হয়ে, গোপাল্গঞ্জ এর কালনা ব্রিজ হয়ে নড়াইল হয়ে যশোর গিয়েছি। রোদ বৃষ্টি মিলিয়ে রাইড করেছি আমার পিলিয়ন হিসেবে আমার এক ভাই ছিলো। এক কথায় হর্নেট বাইকটা অনেক ভালো । রেটিং এ আমি ১০/৮ দিবো । যারা ১৬০ সিসির একটা পাওয়ারফুল এবং ভালো কন্ট্রোলিং এর বাইক চান তাদের জন্য এটা একটা বেষ্ট বাইক। তবে লুকের বিষয় টা যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার।
আসসসালামু ওয়ালাইকুম সবাই ভালো থাকবেন আর আমার জন্ম দোয়া করবেন। আর অবশ্যই সবসময় হেলমেট পরে বাইক চালাবেন। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মো: সজিব হোসেন জিতু