TVS Stryker 125 বাইক নিয়ে ১০০০০ কিলোমিটার রাইডিং অভিজ্ঞতা - নিলয়
This page was last updated on 24-May-2025 04:56pm , By Shuvo Bangla
আমি এহসান ইসলাম নিলয় । আমার বাড়ি উত্তরের জেলা দিনাজপুরের ফুলবাড়ি থানায়। বর্তমানে আমি TVS Stryker 125 বাইকটি ব্যাবহার করছি এবং এ পর্যন্ত বাইকটি প্রায় ১০০০০ কিলোমিটার চলেছে , তো এই বাইকটির ভালো মন্দ সম্পর্কে আমার কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো।এই বাইকটি আমার জীবনের প্রথম বাইক , বাইকটি কেনা হয় ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে। এবং এটা দিয়েই আমি বাইক চালানো শিখি। স্বাধীন ভাবে পথ চলার জন্য বাইক একটি অন্যতম বাহন। ছোটবেলা থেকেই বাইকের প্রতি একটা অন্য রকম ভালোলাগা কাজ করতো। বাইক কেনার সময় অনেক দ্বিধার মধ্যে ছিলাম। বাইক কেনার জন্য বাজেট খুব একটা বেশি ছিলো না , বিভিন্ন ব্রান্ডের বিভিন্ন মডেলের বাইক দেখার পরে টিভিএস স্ট্রাইকার ১২৫ সিসির বাইকটি পছন্দ হলো।
এই বাইকটি পছন্দ হওয়ার কিছু কারণ হলো মোটামুটি কম বাজেটের মধ্যে একটু ভালো লুকিং , ভালো থ্রটল রেসপন্স এবং মাইলেজ। বাইকটি ২০২০ সালে কেনা হয়েছিলো, তখন মুল্য ছিলো ১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা। ফুলবাড়িতে টিভিএস এর মোকাররম মটরস থেকে বাইকটি কেনা হয়েছিলো। যেহেতু আমি আগে বাইক চালাতে পারতাম না, তাই এটা দিয়েই আমি চালানো শিখি, প্রথম ১ বছর বাইকটি তেমন চালানো হয় নি, যেহেতু বেশি অভিজ্ঞতা ছিলো না।তবে জীবনের প্রথম এই বাইকটি চালানোর অনুভুতি ছিলো অসাধারণ। বাইকটিতে সম্পুর্ন ডিজিটাল স্পিডোমিটার রয়েছে , যা বর্তমান সময়ে অনেক উপকারী। বাইকটির সাথে শো-রুম থেকে ৮ টি সার্ভিস দেয়া হয় এর মধ্য ৬টি ফ্রি সার্ভিস এবং ২ টি পেইড সার্ভিস। এখন পর্যন্ত বাইকে তেমন বড় ধরনের কোনো সমস্যা দেখা যায় নি, সার্ভিস সব কয়টি ই সঠিক সময়ে নেওয়া হয়েছে । তাদের সার্ভিসিং ও ব্যাবহার অনেক ভালো ছিলো।

২৫০০ কিলোমিটার পুর্বে বাইকটি থেকে প্রতি লিটার তেলে ৪৫ কিলোমিটার এর মতো মাইলেজ পাওয়া যেতো। সঠিক গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ,ভালো মানের তেল ও যথাযথ ভাবে মেইন্টেন করে ব্যবহার করায় বর্তমানে বাইকটি থেকে ৫০ থেকে ৫৫ কিলোমিটার মাইলেজ পাওয়া যায়।
এখন পর্যন্ত কোনো পার্টস খোলা লাগানো বা কোনো প্রকার মডিফাই করা হয় নি। বাইকটি থেকে এই পর্যন্ত আমার পাওয়া সর্বোচ্চ গতি ১০৫ Kmph/ কিলোমিটার এবং পিলিয়ন সহ ৯৮ kmph / কিলোমিটার।
TVS Stryker 125 বাইকটির ভালো দিক -
- সম্পুর্ন ডিজিটাল স্পিডোমিটার।
- মাইলেজ তুলনামূলক ভালো।
- থ্রটল রেসপন্স ভালো।
- সিটের নিচে Usb চার্জিং পোর্ট, লং রাইডে ফোন চার্জে দেওয়ার জন্য কাজে লাগে।
- উন্নতমানের পিলিয়ন ফুট রেষ্ট, যা অনেক ১৫০ সিসির বাইকেও দেখা যায় না।
- ব্রেকিং বেশ ভালো।
- এই বাজেটে লুকস টা সুন্দর।
TVS Stryker 125 বাইকটির খারাপ দিক -
- ৬০ এর উপর গতিতে বেশ ভাইব্রেশন করে।
- অনেকের অল্প দিনেই সাইলেন্সার এর নিচে ফুটো হয়ে যায়।
- বাইকটির ওজন ১১৭ কেজি যা তুলনামূলক কম, হাইওয়েতে বাতাসে সমস্যা করে।
- পার্টসের দাম বেশি।
- হেডলাইটের আলো হাইওয়েতে পর্যাপ্ত নয়।
- বাইকটির রাইডিং পজিশন মোটামুটি ভালো তাই এটা দিয়ে লং রাইডে ভালো মজা পাওয়া যায় ।
- তবে এয়ারকুল ইঞ্জিন হওয়ায় বেশিক্ষণ রাইড করলে ইন্জিন হিট হয়ে যায়, তাই একটানা বেশিক্ষণ রাইড করার মাঝে একটু বিরতি দিলে ভালো হয়।

বাইকটি সম্পর্কে আমার চুড়ান্ত মতামত -
একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রতিটা ছেলের ইচ্ছা তার একটা বাইক থাকবে, কিন্তু অর্থ ও বিভিন্ন প্রতিকূলতার মাঝে এই স্বপ্ন পুরণ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে । তাই নিজের স্বপ্নের বাইকটি দেখে শুনে কেনা উচিত , নিচের পছন্দকেও প্রাধান্য দিতে হবে। আমার কাছে মোটামুটি কম বাজেটের মধ্যে একটা ভালো বাইক মনে হয়েছে টিভিএস স্ট্রাইকারকে। বাইকটির সিট যথেষ্ট প্রসস্থ, যারা ফ্যামিলি নিয়ে চলাফেরা করেন তাদের জন্য বাইকটি ভালো হবে।

এছাড়া বাইকটির পারফমেন্স ও লুকিং সব মিলিয়ে আপনাদের ভালো লাগবে আশা করি। যদিও সব জিনিসের ভালো মন্দ উভয় দিক বিদ্যমান। তবে যথাযথ ভাবে মেইনটেইন করলে সব জিনিস থেকেই ভালো কিছু আশা করা যায়। বাইক চালানোর সময় সবসময় হেলমেট ব্যবহার করবেন, এবং অতিরিক্ত গতি পরিহার করবেন।
কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ।
লিখেছেনঃ এহসান ইসলাম নিলয়
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
