CFMOTO 300SR ২৩০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - মোহাম্মদ তুহিন

This page was last updated on 17-Jul-2025 08:49am , By Raihan Opu Bangla

আসসালামু আলাইকুম, আমি মোহাম্মদ তুহিন। আমি সম্প্রতি গ্র‍্যাজুয়েশন শেষ করেছি এবং আপাতত কনটেন্ট ক্রিয়েশন করছি। আজ আমি CFMOTO 300SR এর ২৩০০ কিলোমিটার রাইডিং এক্সপিরিয়েন্স আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

CFMOTO 300SR - ২৩০০ কিমি রাইডিং এক্সপিরিয়েন্স

CFMOTO 300SR - ২৩০০ কিমি রাইডিং এক্সপিরিয়েন্স

আমার স্পোর্টস বাইকের প্রতি আলাদা একটা ভাল লাগা কাজ করে বরাবরই। যেহেতু আমি একজন বাইক এন্থুসিয়াস্ট বলা চলে, সেক্ষেত্রে CFMOTO ব্র‍্যান্ড সম্পর্কে আমি আগে থেকেই পরিচিত।

আমার সংগ্রহে আরো একটা ১৫০ সিসির স্পোর্টস বাইক থাকা স্বত্ত্বেও আমার ইচ্ছা ছিল হায়ার সিসির একটা স্পোর্টস বাইক পারসোনালি এক্সপিরিয়েন্স করার। সেই হিসেবে সিসি লিমিট বৃদ্ধির পর CFMOTO বাংলাদেশে অফিশিয়ালি লঞ্চ হওয়ার পর এর স্পেসিফিকেশন নিয়ে রিসার্চ করার পর আমি ডিসিশন নেই আমার নেক্সট বাইক হিসেবে 300SR মডেলটি আমি আমার সংগ্রহে রাখব।

বাইকটি এখন পর্যন্ত প্রায় ২৩০০ কি.মি আমি রাইড করেছি, যার মধ্যে সিটি এবং হাইওয়ে উভয় রোড কন্ডিশন ছিল। বাইকটির ভাল দিকের মধ্যে এর টর্ক এবং ইনিশিয়াল রেস্পন্স আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি রাস্তায় এফোর্টলেসলি যে কোন গতির অন্যান্য বাহন সহজেই ওভারটেক করতে পারি। বাইকটির লুক অত্যান্ত এগ্রেসিভ এবং সাদা কালারের সাথে বাইকটি খুব সহজেই এটেনশন ড্র করে। বাইকের রাইডিং মোড এবং স্মার্ট ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারটি সময়োপযোগী ফিচার আমি বলব।

তবে একটি ইস্যু আমি প্রথম দিকে 300SR বাইকে ফেস করেছি সেটি হচ্ছে বাইকটি প্রায়ই ফুয়েল কাট করতো। অবশ্য CFMOTO Bangladesh থেকে এই সমস্যার সমাধান হিসেবে ECU আপডেট করে দিয়েছে তার পর থেকে আমি এই ইস্যুটি আর পাই নি। আফটার সেলস সার্ভিস হিসেবে CF Moto এর এই দিকটি আমার ভাল লেগেছে৷

ব্রেকিং নিয়ে যদি বলতে চাই তাহলে বলব হাই স্পিডে বাইকের ব্রেকিং খুবই স্মুথ। এবিএস থাকায় কনফিডেন্সের সাথে বাইকটি যে কোন স্পিডে থেকে থামানো যায়। তবে বাইকের এবিএস সেন্সিটিভিটি হাই হওয়ার কারনে কম স্পিড অর্থাৎ ৪০-৫০ স্পিডে ব্রেক করার সময় মনে হয় বাইকটির এবিএস একটিভেট হয়ে থেমে থেমে ব্রেক করছে  এবং ব্রেকিং ডিস্টেন্স সামান্য বেশি বলে ফিল হচ্ছে ।

যেহেতু আমি দীর্ঘদীন ধরে নন-এবিএস বাইক ব্যবহার করে আসছি এজন্য আমার মনে হয়েছে লো স্পিডে এবিএস সেন্সিটিভিটি কিছুটা কমানো গেলে হয়তোবা ভাল হতো। কিন্তু হাই স্পিড ব্রেকিং নিয়ে আমার কোন কম্পলেইন নেই এবং এই ক্ষেত্রে এবিএস একটি লাইফ সেভিং ফিচার হিসেবে কাজ করেছে আমি স্বীকার করতে বাধ্য।

বাইকের সিটিং পজিশন খুবই এগ্রেসিভ, যেহেতু আমি স্পোর্টস বাইকে আগে থেকেই অভ্যস্ত তাই হাইওয়ে এবং লং ট্যুরে আমার কোনরকম কোন সমস্যা হয়নি। তবে সিটি রাইডে কিছুটা আনকমফোর্ট এবং মাঝেমধ্যে পেইন ফিল করেছি। যদিও এটা মেনে নিতে হবে স্পোর্টস বাইকগুলো সিটি কম্যুটিং এর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় না।

আমার হাইট কিছুটা কম হওয়া সত্বেও লো সিট হাইটের কারনে আমি বেশ ভালভাবেই বাইকটি রাইড করতে পারি। তবে পিলিয়ন সিট আরেকটু ওয়াইড হলে হয়তোবা ভাল হতে পারতো যেহেতু মাঝে মধ্যে আমাকে পরিবার নিয়ে চলাচল করতে হয়।
 
বাইকটিতে হাই আরপিএম এ কোন ভাইব্রেশন নেই, কিন্তু লো আরপিএম এ ভাইব্রেশন ফিল করেছি। বাইকটি থেকে প্রথম অবস্থায় ২৫-২৭ কি.মি মাইলেজ পেয়েছি, বর্তমানে ৩০ এর আশেপাশে মাইলেজ পাই যা একটি হাই পারফর্মেন্স ৩০০ সিসি বাইকের জন্য যথেষ্ট বলে আমি মনে করি।

আর হিটিং ইস্যু বলতে সিটি রাইডে বেশ ভাল হিট হয়, হাইওয়েতে তেমন হিটিং ইস্যু পাইনি। এখনো মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি, হয়তোবা ফুল সিন্থেটিক অয়েল ব্যবহার শুরু হলে হিটিং এবং ভাইব্রেশন ইস্যু কমে যাবে বলে আমি আশাবাদী।

Also Read: CFMOTO Showroom In Bangladesh

তো এই ছিল CFMOTO 300SR এর সাথে আমার ২৩০০ কি.মি চলার অভিজ্ঞতা। আমি যেহেতু সহজে বাইক পরিবর্তন করি না তাই আরো চালানোর পর বাইকটি সম্পর্কে আরো বেশি অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারবো ইনশাল্লাহ। আশা করি আমার এই অভিজ্ঞতাটি যারা বাইকটি ক্রয় করতে চাচ্ছে তাদের জন্য উপকারী হবে।


লিখেছেনঃ মোহাম্মদ তুহিন


আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।