CBZ Xtreme 150 নিয়ে ২৫,০০০ কিলোমিটার পথ চলার গল্প - সুমন
This page was last updated on 15-Jul-2024 07:15pm , By Raihan Opu Bangla
আমি মোস্তফা ফারুক সুমন। আমি কিশোরগঞ্জ জেলার তারাইল থানায় বসবাস করি। বর্তমানে আমি CBZ Xtreme 150 বাইক ব্যবহার করছি। বাইকটি আমি এ পর্যন্ত ২৫,০০০ কিলোমিটার চালিয়েছি। CBZ Xtreme 150 নিয়ে আমার এই পথ চলার কিছু গল্প আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
CBZ Xtreme 150 নিয়ে ২৫,০০০ কিলোমিটার পথ চলার গল্প
যদিও আমার মা আমাকে বলেছিল আমি SSC পরীক্ষার পর বাইক পাবো কিন্তু আমরা যারা মধ্যবিত্ত আছি তাদের স্বপ্ন পূরণ হতে অনেক সময় লাগে। যাই হোক হোক জীবনের প্রথম বাইকটি ছিল আমার ভালো লাগার এক অন্যতম বস্তু। আমার জীবনের প্রথম বাইক ছিল Hero Splendor 100cc। বাইকটি আমি অনেকদিন ব্যবহার করি।
তারপর এটি বিক্রি করে একটি Discover 100cc বাইক কিনি। এই বাইকটিও বেশ কিছুদিন চালানোর পর বিক্রি করে দেই এবং একটি RTR 160cc বাইক কিনি। কিন্তু আমার মন পরে থাকে CBZ Xtreme 150 বাইকটির প্রতি। আমি ২০১২ সাল থেকে CBZ Xtreme 150 এর গুনাগুন শুনে আসছিলাম আর ভাবতাম একদিন এটা আমিও কিনবো। বাইকটি মার্কেটে নতুন পাওয়া যায় না। তাই নতুন না পেয়ে আমি সেকেন্ড হ্যান্ড ক্রয় করি।বর্তমানে এটা ব্যবহার করে আমি অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি।
আমি বাইকটি আমার এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছ থেকে ৬৫০০০ টাকায় ক্রয় করেছি। বাইকটি যখন ভাইয়ের হাতে দেখি তখন থেকে বলে রাখি বিক্রি করলে যেনো আমাকে দেয়। ভাই তখন আমাকে আশ্বস্ত করে বলেন ঠিক আছে বাইক বিক্রি করলে সে আমার কাছেই করবে। যেদিন ভাই আমাকে খবর দেয় বাইক দেখার জন্য সেদিনেই আমি বাইকটি ক্রয় করে নিয়ে আসি।
CBZ Xtreme 150 Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD
বাইকটি প্রথম বার চালিয়ে আমার মনে হয়েছে যেনো এর চেয়ে স্মুথ সাউন্ড আর কোন বাইকের নেই। বাইকটি নেয়ার পর থেকে নরমাল সার্ভিসিং ব্যাতিত বড় কোন সার্ভিসিং দিতে হয়নি। তবে আমি অভিজ্ঞ মটর মেকানিক এর পরামর্শ অনুযায়ী বাইক ব্যবহার করছি।
আমার কাছে এই বাইকের সবচেয়ে যেটা ভাল লাগে তা হল এর ইঞ্জিন সাউন্ড। ২-৩ গিয়ারে বাইকটির ইঞ্জিন পার্ফরমেন্স খুব ভালো লাগে । বাইকটির ইঞ্জিন সাউন্ড এবং ব্রেক সিস্টেম অসাধারণ। বর্তমানে আমার বাইকটি থেকে সিটিতে ৩০ কিলোমিটার আর হাইওয়েতে ৩৭ কিলোমিটার মাইলেজ পাই প্রতি লিটার অকটেন।
আমার থেকে আমার মা আর ছোট ভাই বেশি যত্ন নেয় আমার এই বাইকটির। আমি নিজেও নিয়মিত বাইকটি ওয়াস করি। ওয়াসের পরে অবশ্যই আমি এর চেইনে গিয়ার অয়েল ব্যবহার করি। আমি নিয়মিত বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। ইঞ্জিন অয়েল হিসেবে আমি শুরু থেকেই Castrol Active ব্যবহার করি যার মূল্য ৪৬০ টাকা।
আমি বাইকটি ক্রয় করার পর থেকে কোন পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি। আশা করি অতি সহজে কোন প্রকার সমস্যা হবে না। এটা এই বাইকের প্রতি আমার আস্থার যায়গা থেকে বললাম। বাইকটিতে আমি কোন ধরনের মডিফিকেশন করিনি।
বলতে গেলে মডিফিকেশন আমার খুব একটা ভালো লাগেনা। বাইকটি ব্যবহারের পর থেকে এখন পর্যন্ত এই বাইকে আমি টপ স্পিড তুলেছি ১০৫ কিলোমিটার ঘন্টায়। হয়তো আরো স্পিড তোলা যেত। কিন্তু এর পর আমি আর চেষ্টা করিনি।
CBZ Xtreme 150 বাইকটির কিছু ভালো দিক-
- সাউন্ড অনেক স্মুথ।
- কন্ট্রোল অনেক ভালো।
- আউটলুক অসাধারণ লাগে।
- ব্রেকিং সিস্টেম অসাধারণ।
- বাইকটির ইঞ্জিন কোয়ালিটি খুব ভাল।
CBZ Xtreme 150 বাইকটির কিছু খারাপ দিক-
- বাইকটি অনেক ভারী হওয়ায় অনেকের ক্ষেত্রে একটু সমস্যা হতে পারে।
- এর সিট হাইট একটু বেশি। তাই যাদের হাইট কম তাদের জন্য বাইকটি কন্ট্র্র্র্রোলে প্রবলেম হবে।
- এই বাইকের পার্টস মার্কেটে খুব একটা অ্যাভেইলেবল না। তাই পার্টস পেতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বাইকটি নিয়ে আমি ১৬/১১/২০২০ তারিখে পার্বত্য তিন জেলা- খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান ট্যুর দিয়ে এসেছি। এই ট্যুরে আমার এই CBZ Xtreme 150 বাইকের পার্ফরমেন্স ছিল অতুলনীয়।
CBZ Xtreme 150 বাইকটির উপর আমি ১০০% আস্থাশীল। আমার এই আস্থার কারণ যারা এই বাইকটি ব্যবহার করেছেন শুধুমাত্র তারাই বুঝতে পারবেন। আমার বাইকটি নিয়ে পথ চলার এখনো অনেক বাকি। আস্থার সাথে আরো অনেকগুলো লং ট্যুর করতে চাই আমার এই CBZ Xtreme 150cc বাইকটি নিয়ে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন CBZ Xtreme 150cc বাইকটির প্রতি আমার এই আস্থা দীর্ঘদিন বজায় থাকে।
লিখেছেনঃ মোস্তফা ফারুক সুমন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।