Benelli TNT 150i ৩৩০০ কিলোমিটার রাইড - সাফওয়ান সাকিব
This page was last updated on 28-Jul-2024 11:54pm , By Raihan Opu Bangla
আমি সাফওয়ান সাকিব । আমি সিলেটের লালাদিঘির পার এলাকায় বসবাস করি। ছোট থেকেই আমার বাইকের প্রতি আগ্রহ ছিল অনেক বেশি । আব্বুর বাইক দিয়ে বাইক চালানো শিখে বন্ধুদের সাথে নিয়ে ঘুরতাম। আজ আমি আমার বর্তমানে ব্যবহার করা Benelli TNT 150i বাইকটির সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো এবং এই বাইকটির ভালো খারাপ দিক গুলো বলার চেষ্টা করবো ।
Benelli TNT 150i ৩৩০০ কিলোমিটার রাইড
আব্বু আমাকে প্রথম H-Power Max-Z বাইক কিনে দিলেন। তারপর ঐ বাইকটি বিক্রি করে দিলাম। আমি Danishzehen এর ভক্ত তার Benelli TNT 600i দেখে বাইকটির প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে যায়। কিন্তু বাংলাদেশে TNT 600i না থাকায় আমি Benelli TNT 150i ক্রয় করলাম। বাইকটির সাসপেনশন আমাকে বাইকটির প্রেমিক হতে বাধ্য করে। বাইকটি ১,৬৫,০০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করলাম। গোল্ডেন মটরস এর নাইয়রপুল ব্রাঞ্চ থেকে কিনেছিলাম।
বাইকটি প্রথম বার চালানোর পর মনে হলো আমি আমার মনের মত বাইক পেয়ে গেলাম। বাইকটিতে দেয়া আপসাইড ডাউন সাসপেন্সন, সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম, কমফোর্টেবল সিট,অনেক ভালো টায়ার গ্রিপ, বড় আকারের টায়ার, কমফোর্টেবল হেন্ডেলবার পজিশন, বাইকটির সৌন্দর্য আমাকে বাইকটির চালাতে আসক্ত করে।
বাইকটিতে দেয়া CBS Breaking System আমাকে বাইক চালাতে ফুল কনফিডেন্স দেয়। বাইকের সামনে এবং পিছনের দেয়া সাসপেনশন অন রোডে এবং অফ রোডে অনেক কমফোর্টেবল রাইড করতে সাহায্য করে। এতে সামনের ৮০-১০০ পিছনে ৭০-১৩০ টায়ার থাকায় আমি ফুট-পেগ মাটিতে ঘষে কর্নারিং করতে পারি। এতে ব্যবহার করা এলইডি সিগনাল লাইট, পার্কিং লাইট, ব্রেক লাইট অনেক পাওয়ারফুল হওয়ায় অনেক দুর থেকে যেকোন যানের নজরে আসে এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কম হয়। এতে দেয়া কমফোর্টেবল হ্যান্ডেলবার থাকায় টানা অনেক সময় রাইড করলেও কোন ব্যাথা অনুভব করিনি। কার্বোরেটর ইঞ্জিন হওয়া সত্যেও এর মাইলেজ অনেক ভালো। ৪০-৪৬ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি ।
প্রতিদিন বাইক নিয়ে বের হওয়ার পরেও প্রতিদিন বাইকটিকে নতুনই মনে হয়। এ পর্যন্ত আমি আমার বাইকটিকে মাত্র ১ বার সার্ভিস দিয়েছি। গোল্ডেন মটরস এর সার্ভিস সেন্টার থেকে কিন্ত গোল্ডেন মটরস এর সার্ভিস নিয়ে আমি সেটিসফাইড না। ২৫০০ কিলোমিটার এর পুর্বে মাইলেজ পেয়েছি ৩২-৩৭ কিলোমিটার প্রতি লিটার। বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ৪০-৪৬ কিলোমিটার প্রতি লিটার। ১৫ দিনে কমপক্ষে ১ বার বাইক পরিষ্কার করি ভালো গ্রেডের চেইন লুব, ইঞ্জিন লুব ইউজ করি। লকডাউনে সার্ভিস দিতে না পারায় নিজে যত সম্ভব যত্ন নিয়েছি। আমি আমার বাইকে OPHEL 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। এ পর্যন্ত কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি। বাইকের পিছনের নাম্বার প্লেট স্যান্ড খুলে নিয়েছি এতে আমার বাইকটির লুকস আরো বেশি স্পোর্টি হয়ে ওঠেছে। আমি আমার বাইক দিয়ে সর্বোচ্চ ১২৮ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পিড তুলেছি।
বাইকটির কিছু ভালো দিক হলো -
- সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম
- আপ সাইড ডাউন সাসপেনশন
- মাইলেজ
- টায়ার সেকশন
- সিটিং পজিশন
বাইকটির কিছু খারাপ দিক হলো -
- রেডি পিক-আপ কম
- পিলিয়ন গ্রাব-রেল প্লাস্টিকের এতে ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
- হেড- লাইট এর পাওয়ার কম এজন্য হাইওয়েতে দেখতে অসুবিধা হয়
- পিলিয়ন সিট আন-কমফোর্টেবল
- অনেক খারাপ মানের ফাইবার প্লাস্টিক সেইড
বাইকটি দিয়ে আমি সর্বোচ্চ ২৮০ কিলোমিটার একটানা রাইড করেছি। সিলেট থেকে সুনামগঞ্জ যাওয়া আসা। এই রাইডে আমি আমার বাইকের টপ স্পিড তুলতে গিয়ে দেখলাম ৪ গিয়ারে ৮৬ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগ তোলায় কোন ভাইব্রেশন আসেনি এবং ৫ গিয়ারে ১১৮ কিলোমিটার ঘন্টা বেগ তোলায় কোন ভাইব্রেশন পাইনি।
এই রাইড দিয়ে আমি Benelli Bike প্রেমে পড়ে যাই। আসার সময় তুমুল বৃষ্টিতে ৮০ - ১০০-১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে বাইক কোন প্রকারের স্কিড বা ড্রিফট করেনি তবে কাদায় সামান্য স্কিড হচ্ছে বুঝতে পারলাম। কিন্তু তার পরেও সব মিলিয়ে ঐ রাইডে কোন সমস্যায় পরিনি বাইকটি নিয়ে। সব বাইকেরই ভালো এবং খারাপ দিক থাকে এ হিসেবে Benelli TNT 150i এর ভালো দিকের তুলনায় খারাপ দিক গুলো আমার কাছে তুচ্ছ বলে মনে হয়েছে। মধ্যবিত্তদের নাগালের মধ্যে এটি একটি দারুণ নেকেড স্পোর্টস বাইক। ধন্যবাদ।
লিখেছেনঃ সাফওয়ান সাকিব
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।