Benelli 165s ব্রেক ইন পিরিয়ডে ৩৮ কিলোমিটার মাইলেজ- ফাহাদ
This page was last updated on 27-Jul-2024 01:09am , By Raihan Opu Bangla
আমি ফাহাদ সরকার । আমি গাজীপুর বসবাস করি । বর্তমানে আমি একটি Benelli 165s বাইক ব্যবহার করতেছি। আজ আমি আমার এই বাইকটি ১৫০০ কিলোমিটার রাইডের কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
আমার ছোটবেলা থেকেই ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক চালানোর স্বপ্ন ছিল। বিশেষ করে KTM Duke অস্ট্রিয়ান ভার্সন টা খুব ই পছন্দের ছিল। সাধ থাকলেও সাধ্য নেই। আমাদের দেশে Benelli 165s বাইক টা আসার পর আমার মনে হতে লাগলো এবার সাধ্যের মধ্যে সবটুকু সুখ খুজে পাওয়া যাবে। বাইক টার সামনের লুক অনেক টা KTM Duke এর মতোই।
Also Read: Abdullah Motors in Rajbari, Dhaka
আমাদের দেশে Benelli Bike একটা আন্ডার রেটেড বাইক হলেও আমার কাছে দেখতে যেমন ভালো লাগে, তেমন বাইকটি চালিয়েও খুব ভালো লেগেছে। বাইকের লুকস যেমন সুন্দর, পার্ফরমেন্স তেমন স্মুথ। হাই আর পি এম এ বাইকটির সাউন্ড অনেক ভালো লাগে।
এইতো কিছু দিন হয়েছে বাইকটি নিয়েছি।বাইকটি মাত্র ১৫০০ কিলোমিটার চলেছে। আমি গাজীপুর জেলার শিমুলতলী এলাকায় থাকি। আমি এখানকার স্থানীয়। আমার জীবনের প্রথম বাইক Benelli 165s। বাইক টি কেনার পর মনে হয়েছে এটা আমার একটা সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। বাইকটির পারফর্মেন্স-এ সত্যিই আমি মুগ্ধ।
ছোট বেলা থেকেই বাইক রাইড করার স্বপ্ন ছিল। বাইকের প্রতি আগ্রহটা খুব বেশি । আমি কলেজে পরি। তবুও আমার পরিবার বাইকের প্রতি আমার আগ্রহ আর ভালোবাসা দেখে বাইকটি কিনে দিয়েছে। বাইক রাইডিং এ যে আনন্দ পাই তা অন্য কিছুতে পাই না।
ছোট বেলা থেকেই বাইক ট্যুরের খুব সখ ছিল। ব্রেক-ইন পিরিয়ড শেষ হলে বের হবো ট্যুরের জন্য , বাংলাদেশটা দেখার জন্য। যেহেতু ছোট বেলা থেকেই আমার ন্যাকেড স্পোর্টস বাইকের প্রতি আগ্রহ ছিল আর পছন্দের শীর্ষে ছিল KTM Duke তাই সাধ্যের মধ্যে Benelli 165s ব্যাতীত অন্য কোনো ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক পছন্দ হয়নি।
এই বাইক টার যেমন রয়েছে নজরকাড়া লুক তেমনি রয়েছে যথেষ্ট পাওয়ার। একটা ন্যাকেড স্পোর্টস বাইকে যা প্রয়োজন তাই আছে এটাতে। এর বিল্ড কোয়ালিটি খুব ভালো। আমাদের দেশে এই বাজেটে অন্য কোনো বাইকে এত সব ফিচার্স পাওয়া অসম্ভব। এই বাইকটির অফিসিয়াল মূল্য ২,২৫,৫০০ টাকা। আমি এই বাইকটি তেজগাঁও এর সন্নিকটে অবস্থিত আফতাব অটোমোবাইলস থেকে নিয়েছিলাম। আমার জীবনের প্রথম বাইক এটা।
কিনতে যাওয়ার আগের মুহূর্তগুলো আজীবন মনে থাকবে আমার। সত্যিই খুব এক্সাইটেড ছিলাম। আমার ৩ জন কাছের ভাইদের নিয়ে সকাল সকাল রওনা দিয়েছিলাম বাইক কিনার উদ্দেশ্যে। অবশেষে বাইকটি কিনে বাসায় ফিরে স্বস্তি পাই। প্রথম বার বাইক টি রাইড করার অনুভূতি ছিল অসাধারণ।
স্বপ্ন পূরণের আনন্দ কেমন হয় তা বুঝতে পেরেছিলাম ওই দিন। এই বাইকটিতে আছে ৬ টি গিয়ার। বাইকটিতে প্রায় 18 bhp পাওয়ার দেওয়া আছে। 7000 rpm এ 14.0 Nm torque উৎপন্ন হয়। এই বাইকের সাসপেন্সন এর কথা না বললেই নয়। এক কথায় অসাধারণ পারফরম্যান্স বাংলাদেশের রোড কন্ডিশনে।
বাইক টি তে মোট ৮ টি সেন্সর রয়েছে। এতে আছে ৩ টি স্পার্ক প্লাগ। যার ফলে ফুয়েল অপচয় কম হয়। মাইলেজ ৩৫-৩৮ কিলোমিটার পাচ্ছি প্রতি লিটার অকটেনে।এতো পাওয়ারফুল একটা বাইকে আমার মতে এই মাইলেজ যথেষ্ট। বাইক টির সব গুলো লাইট এলইডি দেওয়া হয়েছে। বাইক টি তে সিবিএস(কম্বাইন্ড ব্রেকিং সিস্টেম) দেওয়া হয়েছে। যে কারণে বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম অত্যন্ত ভালো এবং কন্ট্রোলিং অসাধারণ। বাইক টির ওজন ১৪৭ কেজি। যে কারণে কন্ট্রোলিং করতে খুব ই সুবিধা হয়। হাই আর পি এম-এ রাইডিং এর সময় ওজনের কারণে খুব কম ই ভাইব্রেট করে।
Click To See Benelli 165s Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD
আমি এ পর্যন্ত একবারই সার্ভিসিং করিয়েছি গাজীপুর থেকে। বাইকের নাম্বার পেলে ঢাকা গিয়ে সার্ভিস সেন্টারে সার্ভিসিং করাবো। আশা করি তখন এর চেয়েও ভালো সার্ভিস পাবো। আমি বাইকটি নিয়মিত ধুয়ে মুছে রাখি। রোদের মধ্যে পার্কিং করা থেকে বিরত থাকি।
সময় মতো মতুল এর 10w 40 গ্রেডের ইঞ্জিন ওয়েল ব্যাবহার করি। আমার মনে হয় যত্ন করলে সব কিছুই ভালো পার্ফরমেন্স দেয় । বাইকটি ব্রেক-ইন পিরিয়ডে থাকায় আমি সচারাচর 5000 rpm এর বেশি আরপিএম তুলিনা । 5500 rpm এ 5th গিয়ারে 92km/h স্পিড পেয়েছি।বাইকের কিছু ভালো দিক-
- সিবিএস ব্রেকিং সিস্টেম হওয়ার কারনে বাইকটির ব্রেকিং সিস্টেম খুবই ভালো
- বাইকটির সাসপেন্সন খুবই ভালো
- হাইওয়েতে এর পারফরম্যান্স অসাধারণ
- লং ট্যুরের এবং সিটি রাইডের জন্য বাইকটি পারফেক্ট
- এর হ্যান্ডেল বার উঁচু হওয়ায় খুব আরামদায়কভাবে রাইড করা যায়
- বাইকের মাইলেজ আশানুরূপ
- বাইকের কন্ট্রোল খুব ভালো
- বাইকটির ইঞ্জিন খুব স্মুথ এবং পাওয়ারফুল
- বাইকটির এক্সষ্ট সাউন্ড অসাধারণ
- হাই আর পি এম- এর সাউন্ড খুবই এগ্রেসিভ
বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- বাইকটি ভাঙা রাস্তায় রাইড করতে কন্ট্রালিং-এ একটু সমস্যা হয়
- বাইকটির ফুয়েল ট্যাঙ্ক ক্যাপাসিটি খুব ই কম। মাত্র ১০ লিটার ফুয়েল ধরে এতে। যা একটু কম ই বলতে গেলে
- বাইকের পিলিয়ন সিট একদম ছোট। ভারি বা স্বাস্থ্যবান কোনো পিলিয়ন বসানো অসুবিধাজনক
- বাইকটির লুক এর সাথে এর এক্সষ্ট মানানসই নয়। এটা আরো মাসকুলার হতে পারতো
- বাইকের হেড লাইটের আলো কিছুটা কম। নাইট রাইড করতে হলে ফগ লাইট লাগাতে হবে
বাইকটির প্রতি আমার মতামত হলো - এই বাজেটে অন্য কোনো বাইকে এত সব ফিচার্স পাওয়া যাবে না। প্রিমিয়াম সেগমেন্ট এর বাইক গুলোর সবগুলো ফিচার্সই Benelli 165s বাইকে রয়েছে। এক কথায় বাইকটি স্বয়ংসম্পূর্ণ। যাদের কম বাজেটে ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক কেনার স্বপ্ন তারা নিঃসন্দেহে Benelli 165s বেছে নিতে পারেন।
আপনি যদি ৫'৫"-৫'৮" লম্বা হন তাহলে আপনার জন্য এটি পারফেক্ট। তবে বেশি লম্বা মানুষের জন্য এই বাইকটি রাইড করা একটু অসুবিধাজনক হতে পারে। আপনি যদি গুড লুকিং এন্ড পাওয়ারফুল ন্যাকেড স্পোর্টস বাইক নিতে চান তাহলে Benelli 165s আপনার জন্যই। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ ফাহাদ সরকার
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।