Bajaj Pulsar Ns 160 ১০,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - সৌরভ

This page was last updated on 31-Jul-2024 05:23pm , By Shuvo Bangla

আমি সৌরভ । আমি ঢাকার মিরপুর এলাকায় বসবাস করি । আমার প্রথম বাইক Bajaj Pulsar Ns 160 বাইকটি বর্তমানে প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার রানিং ।

Bajaj Pulsar Ns 160 ১০,০০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - সৌরভ

Bajaj Pulsar Ns 160

আমি বাইকিং কেনো ভালোবাসি তা আসলে বলে বুঝাতে পারবো না। ছোট বেলা থেকেই সখ ছিল কোন একদিন আমার ও একটি বাইক থাকবে, আমিও আমার বাইক নিয়ে বাংলাদেশ ঘুরে বেড়াবো।সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় আমার এখন বাইক আছে।

আমার মা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে বাইকটা নেওয়ার জন্য। সত্যি কথা বলতে মা আমাকে কিছু টাকা দিয়েছে বাকী টাকা বাবা এবং ছোট বোন দিয়েছে। সবার সম্মিলিত অবদানেই বাইকটা কেনা হয়েছে। প্রথম বাইক ক্রয় করার  অনুভুতি অতুলনীয়। আমি Bajaj Pulsar Ns 200 বাইকটির ভক্ত ছিলাম। যদিও তখন Bajaj Pulsar Ns 160 লঞ্চ হয়নি এবং আমার বাইক ক্রয় করার মত ক্ষমতা ছিল না। যখন থেকে বাইক কিনবো ভাবছিলাম তখন থেকে আমি বাইক বিড়ির পেইজ,ইউটিউব,ওয়েবসাইট মিয়মিত ফলো করি ।

Bajaj Pulsar Ns 160 10k km

বাইক বিডিতে Bajaj Pulsar Ns 160 বাইকটির পোষ্ট গুলো ফলো করতাম । বড় কথা হচ্ছে এই বাইকের লুকস আমার অসাধারন লাগে। তাই আমার জন্য Bajaj Pulsar Ns 160 বাইকটি ক্রয় করলাম । পালসার এন এস ১৬০ বাইকটি আমি ক্রয় করার কারন হচ্ছে, এই বাইকটির টপ স্পিড, রেডি পিকাপ এবং কম দামের মধ্যে স্পোর্টস বাইকের লুকস দিয়েছে। বাইকটি আমার কাছে অসাধারন লাগে । আমি বাইকটি ক্রয় করেছি ১,৮৪,৫০০ টাকায়। বাইকটি আমি মিরপুর এর বাজাজ শোরুম থেকে কিনেছি।

আমার বাইকটি ক্রয় করার দিনের ঘটনা বলতে গেলে একটু অতিতে যেতে হবে । দীর্ঘ ৭ বছর বাইক এর জন্য পরিবারের বিপক্ষে গিয়ে অনেক কিছুই করেছি কিন্তু  কোন লাভ হয়নি। ইউনিভার্সিটি শেষ করেই জীবনের প্রথম  বাইকটি ক্রয় করে দিয়েছে আমার পরিবার।  বাইকটি কেনার আগের দিন মা হাতে ৭০,০০০ টাকা দিয়ে বললেন তোর বোন ৩০,০০০ টাকা  দিয়েছে আর আমি কিছু টাকা দিলাম। সেই দিন রাতেই আমি আমার কাজিনকে নিয়ে বাইক দেখতে গেলাম বাজাজ শোরুমে । শোরুমে গিয়েই চোখ আটকে গেল সেই ছোট বেলার ভালোলাগার বাইক এন এস এর উপর। ৭০,০০০ টাকা জমা দিয়ে বাইক বুকিং করে এলাম। পরের দিন বাবাকে নিয়ে গিয়ে বাকি টাকা পরিশোধ করলাম।

আমি আসলে সখ করে বাইক নিয়েছি। আমার ইচ্ছে আমি আমার এই বাইক নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে-বেড়াবো ।   আমার বাইকটি এন এস ১৬০সিসি সিংগেল ডিস্ক ভেরিয়েন্ট। স্পোর্টস লুক এবং দুরদান্ত স্পিড সমৃদ্ধ একটি বাইক । এই বাইকটি একটি নেকেড স্পোর্টস বাইক। সিটিং পজিশন খুবই ইউনিক। যেমন এগ্রেসিভ তেমন কম্ফোর্ট। টুইন স্পার্ক প্লাগ এর সাথে বেশ ভালো রেডি পিকাপ। কিক অ্যান্ড সেল্ফ স্টার্ট। সব দিক বিবেচনা করলে বাইকটি খুব ভালো একটি বাইক।   আমার বাইকটি আমি সখের বসে নিয়েছি এবং এই বাইক নিয়ে আমি সারা দেশ ঘুড়ে বেড়াব । তাই যখন বাইক নিয়ে বের হই তখনই কোন না কোন এক জায়গার উদ্দেশ্য নিয়ে বের হই। বাইক নিয়ে ভ্রমন করার সময় মনের মধ্যে অন্যরকম এক অনুভুতি হয় ,তখন  নিজেকে অনেক সুখী মনে হয় ।   আমার বাইকটি আমি প্রথম ৩০০০কিলোমিটার এর মধ্যে ৪টি ফ্রি সার্ভিসিং করিয়েছি এবং আমি যে শোরুম থেকে বাইক কিনেছি সেই শোরুমের সার্ভিস সেন্টার থেকেই সার্ভিস গুলো করিয়েছি। আমি এই ১০,০০০ কিলোমিটার এর মধ্যে মোট ৮ বার সার্ভিসিং করিয়েছি। প্রতিবার ইন্জিন ওয়েল এবং প্রতি দ্বিতীয় বার ইন্জিন ওয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করিয়েছি ।

Bajaj Pulsar Ns 160 10k km

আমার বাইকটি ২৫০০ কিলোমিটার চালানোর পুর্বে আমি প্রতি লিটারে ৩০ মাইলেজ পেতাম। তবে এখন প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার এখন পর্যন্ত আমি ৩৫+  মাইলেজ পাচ্ছি । যে সময় বাইক বের করি তখন ভালো ভাবে পরিস্কার করি, বাইক রাইড শেষে ইন্জিন ভালো ভাবে ঠান্ডা হওয়ার পর কাদা-ময়লা যা লাগে তা পানি দিয়ে ভালো ভাবে পরিস্কার করে শুকনো কিছু দিয়ে মুছে ফেলি ।

আমি প্রথমে লিকুইমলির মিনারেল 20W50 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যাবহার করতাম। ৪০০০ কিলোমিটার চালানোর পর মটুল এর  টেক্নোসিন্থেটিক 20W50 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতেছি। শোরুমে এই ইন্জিন ওয়েলের দাম ৫৮০ টাকা ।   এখন পর্যন্ত বাইকে কোন পার্টস পরিবর্তন করতে হয়নি । শুধু মাত্র ইন্জিন ওয়েল এবং ওয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করেছি । ব্রেক প্যাড পরিবর্তন করেছি ৫০০০ কিলোমিটার চালানর পর।   মডিফাই এর মধ্যে শুধুমাত্র বাম্পার মডিফাই করেছি । এই বাইটি দিয়ে আমি উত্তরা এয়ারপোর্ট রোডে সর্বোচ্চ ১২৮ স্পীড তুলেছি।  

Bajaj Pulsar Ns 160 বাইকটির কিছু ভালো দিক-

  • রেডি পিক আপ
  • টপ স্পীড
  • লুকস
  • পাওয়ারফুল ইন্জিন
  • প্রিলিয়ন সীট কম্ফোর্টেবল
  • সহজেই টার্ন করা যায় 

Bajaj Pulsar Ns 160 বাইকটির কিছু খারাপ দিক-

  • সিঙ্গেল ডিস্কের ব্রেকিং একটু দুর্বল।
  • সিংগেল ডিস্ক ভেরিয়েন্টের পেছনের চাকাটা তুলনামূলক চিকন।
  • ১২০০ এম এল এর ইন্জিন ওয়েল দেয়া লাগে ।
  • যাদের উচ্চতা কম তাদের এই বাইক রাইড করতে একটু কষ্ট হবে ।

  আমি যত ট্যুরে গিয়েছি তার মধ্যে কক্সবাজার ট্যুর সবচেয়ে স্মরণীয় ছিল। অসাধারন একটা ট্যুর ছিল । শিখার মতো দেখার মতো অনেক কিছুই ছিল এই ট্যুরটিতে।

Love

যারা টপ স্পিড চান, রেডি পিকাপ এর সাথে সুন্দর লুকস চান তাদের জন্য পালসার এন এস ১৬০ সিসির এই বাইকটি খুব ভালো হবে।   মাইলেজ এর কথা চিন্তা করলে এই বাইক না নেওয়াই ভালো । যারা ৫ ফিটের নি চে তাদের এই বাইকটি না নেওয়াই উত্তম। আমি নিজে যা উপলব্দি করেছি তা লিখেছি। কথাগুলো একান্তই আমার অনুভুতি মাত্র। যদি ভুল কিছু লিখে থাকি তাহলে ক্ষমার দৃষ্টতে দেখবেন দয়া করে । ধন্যবাদ ।   

লিখেছেনঃ মোস্তফা ফারুক সুমন   

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।