Bajaj Discover 110 ৭৫০০ কিলোমিটার মালিকানা রিভিউ - প্রিন্স
This page was last updated on 28-Jul-2024 10:27am , By Shuvo Bangla
আমি মাসুম সরোয়ার প্রিন্স। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা থেকে বলছি। আপনাদের আজকে আমার Bajaj Discover 110 বাইকটির ইউজার রিভিউ শেয়ার করবো । আমি ছাত্র অবস্থায় ইন্টারমিডিয়েট পরিক্ষা শেষ করে পরিবার থেকে আমাকে বাইক কিনে দেওয়া হয়।
বাইক কেনা -
আমার প্রায়োরিটি ছিলো ভালো মাইলেজ , খরচ কম , রিলায়েবল , মোটামুটি স্টাইলিশ একটা কমিউটার বাইক। তো এলাকার ভাই ব্রাদার, ফেসবুক, ইউটিউব দেখে এই বাইকটি ক্রয় করি । প্রথম দেখায় এবং চালিয়ে আমি সন্তুষ্ট।
চালানো শিখা -
এটাই আমার প্রথম বাইক ছিলো, আমি বাইক চালানো জানতাম না কিন্তু সাইকেল চালাতে পারতাম, তবে অবাক করা বিষয় হচ্ছে বাইক চালানোর ২-৩ মাস আগে থেকেই ইউটিউবে টিউটোরিয়াল দেখতাম নিয়মিত, দেখে কিনে নিয়ে আসার পরেই মাঠে নিয়ে ২-৩ বার ট্রায়াল দিতেই কোন দুর্ঘটনা ছাড়াই শিখে যাই। যদিও তখন আমার ক্লাচ আর থ্রটলে হাতের এডজাস্টমেন্ট ঠিক ছিলো না, তবে এখন পারদর্শী হয়ে গেছি এবং আরো শিখছি।
বাইকের ভালো এবং খারাপ দিক -
খারাপ দিক-
প্রথম দিকে ব্রেক ইন পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে বাইকের প্রতিটা পার্টস খুব শক্ত লাগত বিশেষ করে সামনে আর পিছনের সাসপেনশন। গিয়ার শিফটিং হার্ড এরপরে মাইলেজ পেতাম ৪০-৪২ কিলোমিটার, সকালে স্টার্ট নিতে সমস্যা হত, ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হত ইত্যাদি। প্রথম দিকে ডিস্কভার বাইকটা ভালো লাগত না, মনে হত এত সমস্যা একে তো স্টুডেন্ট ফাইন্যান্সিয়াল অবস্থা এমনিই ভালো থাকত না, তারপরেও এভাবেই চালাতাম।
ভালো দিক-
যখন ৩০০০ কিলোমিটার + চালানো হলো বাইক অনেক স্মুথ হয়ে গেছে , আগের সব সমস্যা সমাধান। মাইলেজও ভালো পাই , খরচ কমে গেছে এক কথায় বলতে গেলে তার প্রেমে পরে যাই। এখন আমার বাইক ৭৫০০ কিলোমিটার চলমান কোন সমস্যা ছাড়াই নিয়মিত রক্ষনাবেক্ষন করার ফলেই ভালো সার্ভিস পাচ্ছি।
প্রতিদিনের চালানোর অভিজ্ঞতা -
প্রতিদিন সকাল-বিকেল বের হতে হয় আমাকে গড়ে ৭-৮ কিলোমিটার চালানো হয় কাচা - পাকা রাস্তা মিলিয়ে। আমি ভদ্রভাবেই চালাই অতিরিক্ত রেভ করি না মাইলেজ ভালোই পাই।
আর যেদিন সামান্য একটু দূরে যেতে হয় তখন ৬০-৭০ কিলোমিটার চালানো হয়ে যায় আসা যাওয়া মিলিয়ে। বলতে গেলে আমি যে খুব বেশি বাইক চালাই এমন না কিছুটা দরকারে কিছুটা শখে আরকি তো আমি সন্তুষ্ট।
আমার সকল অভিজ্ঞতা -
প্রথম দিকে আমি বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে আমাদের বাজার পর্যন্ত যেতাম। এরপরে ফুয়েল পাম্প পর্যন্ত গিয়েছিলাম দুরত্ব ছিল ৫ কিলোমিটার, কিছুটা অভিজ্ঞতা হয় এরপর থেকেই হাইওয়েতে চালানোর হাতেখড়ি হয়।
এভাবে চলতে চলতে আমার বাইকের পেপার্স হয়ে গেল, কিন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্স এখনো হয় নাই তো গত ২০২২ সালের ঈদুল ফিতরের পরের দিন বন্ধুকে সাথে নিয়ে ইচ্ছা হলো যমুনা সেতু দেখে আসব এই ছিল আমার লং ট্যুর ।
কয়েকমাস পরে আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স হয়ে যায়। তো আমার বাড়ি সিরাজগঞ্জ হওয়াতে এখন থেকে "টাংগাইল, বগুড়া, পাবনা, নাটোর, রাজশাহী" তে আমার ভ্রমন হয়েছে কোন সমস্যা ছাড়াই আমার এই ডিস্কভার ১১০ সিসি বাইক দিয়ে। তবে লং টুরের ক্ষেত্রে আমি পাওয়ার লস লক্ষ্য না করলেও ওভারহিটিং এর জন্য বাইক চলন্ত অবস্থায় দু/একবার বন্ধ হয়েছে এটা লক্ষ্য করেছি।
Also Read: Bajaj Discover 110 - চলছে ডিস্কাউন্ট অফার
১২০ কিলোমিটার যাত্রাতে দুইবার বিরতি নিয়েছি যেন বাইকের ক্ষতি কম হয়, যদিও একবার বিরতি নিলেই হত। আমার মনে হয় মাঝে মাঝে বিরতি নিয়ে চালালে এটা দিয়ে ৫০০-৭০০ কিলোমিটার অনায়াসে একবারে পার করে ফেলা সম্ভব।
পরিশেষে বলি আমি নতুন বাইকার হিসেবে বাজাজ ডিস্কভার ১১০ সিসি নিয়ে ভালো-খারাপ সবদিক মিলিয়ে আমার অভিজ্ঞতা ভালো ছিলো। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মাসুম সরোয়ার প্রিন্স