Apache RTR 160 4V বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - আহমেদ সানি
This page was last updated on 29-Jul-2024 04:59pm , By Raihan Opu Bangla
আমার নাম আহমেদ ফয়সাল সানি । আমি কুমিল্লা, কোটবাড়ি থাকি । আজ আমি আমার TVS Apache RTR 160 4V বাইকটির ব্যপারে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো । আমার জীবনের প্রথম বাইক Hero Splendor । বাইকটি দিয়ে আমার বাইক চালানো শেখা ।
Apache RTR 160 4V বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ
তার পর Bajaj Discover 100cc, Glx victor, TVSApache RTR 150cc চালিয়েছি । বর্তমানে আমি TVS Apache RTR 160 4V রাইড করি ।
আমি বাইক ভালোবাসি । বাইক ছাড়া মনে হয় চলার পথ থমকে যায়। বাইক ভালোবাসার কারন অনেক থাকে কিন্তু আমার কাছে এটা আমার শখ। বাইক ছাড়া আমি নিজেকে পরিপূর্ন অনুভব করতে পারিনা।
আমি একটা স্টাইলিশ বাইক খুজতাম এবং কিছুটা ফুয়েল সেভ এর কথাও চিন্তা করি। পিছনের চাকা কিছুটা মোটা নেয়ার চেস্টা করি। কারন মোটা চাকার কন্ট্রলিং আমার মতে ভালো হয় । আর সবচেয়ে যে বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো যে বাইকটি কিনবো সেইটা নিজের জন্য কতটুকু কম্ফোর্ট ।
TVS Apache RTR 160 4V বাইকটির ইঞ্জিন পাওয়ার, স্টাইল সব মিলিয়ে অনেক ভালো লাগে। এই বাইকের সাউন্ড খুব ভালো লাগে । হেডলাইট লুক, স্পিডোমিটার লুক, হেন্ডেলবার, সামনের লুক, পিছনের লুক, লুকিং গ্লাস, ইন্ডিকার্টার লুক সবকিছুই খুব ভালো লাগে। TVS Apache RTR 160 4V বাইকটি আমি কিনেছি ১,৮৯,৯৯৯ টাকা দিয়ে । শোরুম এর নাম মদিনা টিভিএস, পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড ।
পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এড়িয়াতে মদিনা TVS শো-রুম টি খুব নামকরা শোরুম । এই শোরুমের মালিক কর্মচারী সবার ব্যবহার এবং সার্ভিস ভালো । বাইকটি কিনতে যাওয়ার সময় অনুভুতি অন্যরকম ছিলো। কারণ এটা একটা স্পোর্টস বাইক।
এই দামে এই সেগমেন্ট এর এমন একটা বাইক যা সত্যিই অসাধারন। বাইক কিনতে যাওয়ার সময় মনে একটা বিশ্বাস ছিলো বাইকটি আমাকে বেশ ভালো সাপোর্ট দিবে ।
Apache RTR 160 4v Test Ride Review In Bangla – Team BikeBD
কেউ কেউ বলছে এটা না কিনে অন্য বাইক কিনো। হিসাব করে দেখলাম ওরা যে বাইক সাজেস্ট করছে সেই বাইক আর এই বাইকের দামের পার্থক্য অনেক বেশি। এখন বুজতেছি Apache RTR 160 4V কিনে আমি ভুল করিনি ।
বাইকটি প্রথম যখন রাইড করি বেশ ভালো লেগেছে । কারণ এই দামে এমন একটা রেডি পিকআপের বাইক সত্যিই অসাধারন । প্রথম যখন বাইকটি স্টার্ট করি তখন মনে হচ্ছিল বাইকটির হাইট একটু বেশি কিন্তু এখন কোনো সমস্যা হয়না। স্পিডোমিটারে নতুন একটা লুক আনা হয়েছে তাই আরো ভালো লাগছে ।
বাইক রাইডের পিছনে অনেক কারন থাকে তবুও বরাবরের মত বলবো এটা আমার শখ। চলার পথটা অনেক সহজ করে দেয়, সময় সেভ করে । যে কোনো যায়গায় নির্দিষ্ট একটা সময় নিয়ে বের হলেই যাওয়া যায় । TVS Apache RTR 160 4v বাইকের থ্রটল রেসপন্স খুব ভালো, ব্যাক পেইন নেই, দাম মোটামুটি কম।
রেডি পিকআপ থাকায় হাইওয়েতে চালিয়ে খুব মজা পাওয়া যায় । ডুয়েল ডিক্স, টায়ার সাইজ মোটা, সিংগেল সাসপেনসন, ডিজিটাল স্পিডোমিটার, সবচেয়ে মজার বিষয় হলো Apache RTR 160 4v তে টপ স্পিড রেকর্ড হয়।
আমার বাইকটি ১৫০০ কিলোমিটার রানিং। একটা সার্ভিসিং করিয়েছি মদিনা টিভিএস মটর থেকে। মদিনা টিভিএস মটরস এর সার্ভিস অনেক ভালো। এক একটা বাইকের জন্য যথেষ্ট সময় দেয় এবং যত্ন নিয়ে কাজ করে। এতে বাইক এর খুটিনাটি সমস্যা খুজে বের করে সমাধান করা যায়।
সার্ভিসিং করানোর আগে মাইলেজ পেতাম ৩০ এর নিচে আর সার্ভিসিং করানোর পর ৩৩-৩৪ পাচ্ছি । আশা করি সামনে আরো বেশি মাইলেজ পাবো। ২৫০০ কিলোমিটার হলে আবার সার্ভিসিং করাবো তখন হয়তো মাইলেজ আরে বেশি হবে আশাকরি ।
আমি রাফ রাইড করি না, যদিও ব্রেক ইন পিরিয়ড চলতেছে তবুও হাইওয়েতে স্পিড আপ করিনা। নিয়মিত ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি, সঠিক যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি ।
আমার বাইক এ প্রথম ব্যবহার করা ইঞ্জিন অয়েল এর নাম TVS Tru4 10w30 গ্রেড। দাম ৮৫০ টাকা । বাহিরের দোকান গুলোতে ৮০০ টাকা বিক্রি করে কিন্তু RJ TVS Cantonment Comilla থেকে ৮৫০ টাকা দিয়ে কিনেছি । এখন পর্যন্ত বাইকের কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি ।
পরবর্তি সার্ভিসিং এর সময় ফুয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করবো, যদি কোনে পার্টস পরিবর্তন করার দরকার হয় তবে করে নিবো । এখন পর্যন্ত বাইকের কোন মডিফাই করিনি, শুধু স্পিডোমিটারে একটা উইন্ডশিল্ড আর পা দানি লাগিয়েছি । দুই চাকার রিং গুলো কালার করাবো।
এই বাইকটি মডিফাই করার প্রয়োজন মনে করিনা কারন এটা যেমন আছে ঠিক আছে ।
বাইকটি নিয়ে চৌদ্দগ্রাম থেকে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত আমার তোলা সর্বোচ্চ স্পিড ১৪৫। বাইকটিতে খুব অল্প সময়ে স্পিড উঠে যায়। এর চেয়ে বেশি তোলার আর ইচ্ছাও নাই। আমি ৬০-৭০ স্পিডে রাইড করে বেশ কম্ফোর্ট পাই।
TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু ভালো দিক-
- হাইওয়েতে রাইড করে বেশ ভালো লাগে
- বাইক রাইড করে তেমন পেইন নাই
- রাইডিং সিট কম্ফোর্ট
- বাইকটি খুব স্মুথ
- রেডি পিকাপ
TVS Apache RTR 160 4V বাইকের কিছু খারাপ দিক-
- ব্রেক কন্ট্রোল আরো ভালো হলে বেস্ট হতো
- মাইলেজ এভারেজ ৪০ হলে ভালো হতো
- সিট হাইট কিছুটা কম হওয়ার দরকার ছিলো
- ABS নাই
- পিছনের চাকা আরও মোটা করা উচিৎ
বাজেট, লুকস, স্পোর্টস বাইকের ফিল সব দিক বিবেচনা করে Apache RTR 160 4v বাইকটি বাজেটের বেস্ট একটি বাইক । আমি আমার বাইক রাইড করে সেটিসফাই । কেউ যদি ২,০০,০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে একটি স্পোর্টস বাইক নিতে চান তাহলে অবশ্যই TVS Apache RTR 160 4v বাইকটি নিতে পারেন । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ আহমেদ ফয়সাল সানি
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।