ছোট সাইজের মোটরসাইকেল ব্যবহারের সমস্যা
This page was last updated on 01-Aug-2024 11:41am , By Saleh Bangla
বিশ্বের মোটরসাইকেল ইন্ডাষ্ট্রিতে লোয়ার ইঞ্জিন-ক্যাপাসিটির বা ছোট সাইজের মোটরসাইকেলগুলিই মূলত: বাজারের বড় অংশ দখল করে রয়েছে। আর নিঃসন্দেহে মোটরসাইকেল রাইডারদের বেশিরভাগই মোটামুটি ছোট সাইজের মোটরসাইকেলই চালায় বা লোয়ার ক্যাপাসিটি মোটরসাইকেলের মালিক। প্রকৃতপক্ষে, ছোট সাইজের মোটরসাইকেলে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়, যা কিনা বাস্তব জীবনের চহিদার সাথে ভালোভাবে মিলে যায়। আর সেকারণে এসব মোটরসাইকেল বিশ্বব্যাপী এত জনপ্রিয়। তবে ছোট সাইজের মোটরসাইকেল ব্যবহারের সমস্যা ও রয়েছে; আর সেসবই নিম্নে তুলে ধরা করা হলো।
ছোট সাইজের মোটরসাইকেল ব্যবহারের সমস্যা
>> ছোট সাইজের মোটরসাইকেলের সমস্যা নিয়ে বলতে গেলে প্রথমেই আসে এগুলির অতি সাধারন বিল্ড-কোয়ালিটি। কেননা, এসব মোটরসাইকেল সাধারনত: দামে অত্যন্ত সস্তা হয় এবং এর টার্গেটই হলো বাজেট-ফোকাসড কাষ্টমার। ফলে মূল্য কম রাখার জন্য এসব মোটরসাইকেল মানের ক্ষেত্রে অনেকটাই আপোষ করে তৈরি হয়।
>> বিল্ড কোয়ালিটির বিবেচনায় ছোট সাইজের মোটরসাইকেল সাধারণত অনেকটাই সাধারন মানের ও দুর্বল। তাই এগুলো সাধারণত বড় সাইজের বা হায়ার সিসি মোটরসাইকেলের মতো তেমন টেকসই হয় না। আর ছোট মোটরসাইকেলগুলোর অল্প ক্ষমতার ইঞ্জিন যথেষ্ট পাওয়ার উৎপাদনের জন্য বেশ চাপ নিয়েই কাজ করে। ফলে এসব মোটরসাইকেলের গড়পড়তা কার্যকালও অনেক কম হয়।
>> ছোট সাইজের মোটরসাইকেলগুলি সাধারণত চিকন টায়ার, এন্ট্রি-লেভেল ব্রেকিং সিস্টেম এবং সাধারণ সাসপেনশন সিস্টেমসহ তৈরী হয়। ফলে এসবের কন্ট্রোলিং ও হ্যান্ডেলিং ফিচার অনেকটাই দুর্বল ও মোটামুটি চলনসই ধরনের হয়ে থাকে। আর এসব মোটরসাইকেলে আর-এন্ড-ডি কস্ট কমানোর জন্য ডিজাইন ইমপ্রুভমেন্টে তেমন ব্যায় করা হয় না; ফলে এসবের ওয়েট-ডিস্ট্রিবিউশন ও ব্যালান্সও তেমন আহামরি টাইপের হয়না।
>> অল্প ইঞ্জিনক্ষমতার ছোট মোটরসাইকেলগুলো সাধারনত খুব সাধারনমানের সেফটি ফিচার সম্বলিত হয়ে থাকে যাতে হয়তো এবিএস, ট্র্যাকশন কন্ট্রোল, বা রাইডিং মোডের মতো ফিচারগুলি থাকে না। আর কিছু মোটরসাইকেলে এসবের কিছু ফিচার দিলেও তা অত্যন্ত সাধারনমানের হয়ে থাকে। ফলে এসবের নিরাপত্তা ফিচার অত্যন্ত সাধারন হয়ে থাকে।
>> ছোট সাইজের মোটরসাইকেলগুলির আরো একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা হলো, এগুলির ইঞ্জিন সাধারনত খুবই অল্প ক্ষমতার হয়ে থাকে। তাই সিঙ্গেল বা ডাবল সিলিন্ডিারের এসব লো-পারফর্মেন্সের ছোট ইঞ্জিনের হর্সপাওয়ার এবং টর্ক আউটপুটও বেশ কম হয়ে থাকে। ফলে এক্সট্রিম রাইডিং কন্ডিশনে এসব মোটরসাইকেল নিয়ে একজন রাইডারকে প্রায়ই জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। আর লং-রাইডে এসব মোটরসাইকেল ব্যবহার আসলেই বেশ পীড়াদায়ক।
>> ছোট সাইজের মোটরসাইকেলগুলি স্বল্প ক্ষমতা এবং লোয়ার-পারফরম্যান্স ইঞ্জিনযুক্ত হওয়ায় এগুলি স্পষ্টতই কম-সহনশীল বাহন। তাই এসবের স্থায়িত্ব এবং স্ট্রেস হ্যান্ডলিং ক্ষমতাও অত্যন্ত সীমিত; যা অবশ্যই মাঝারি ও বড় ইঞ্জিন ক্ষমতার মোটরসাইকেল থেকে অনেকটাই কম।
>> মিনিমাম সেফটি ফিচারসহ ছোট সাইজের মোটরসাইকেলগুলির ব্যালান্স ও হ্যান্ডেলিং ফিচার বেশ কম; আর এগুলি কম সহনশীল ও কম চাপ নিতে পারে। তাই এসব মোটরসাইকেল হাইওয়ে রাইডের জন্য মোটেও ভালো নয়। সুতরাং লং-রাইড বা ট্রান্সকন্টিনেন্টাল টাইপ রাইডের মতো দূরপাল্লার স্ট্রেসফুল রাইডগুলির জন্য এসব মোটরসাইকেল উপযুক্ত নয়।
>> ছোট আকারের মোটরসাইকেলগুলো সাধারণত বাজেট-বিল্ড কমিউটিং মেশিন। তাই বিল্ড কোয়ালিটি বিচারে এসব মোটরসাইকেল তেমন প্রিমিয়ামও নয় আবার ড্যুরাবলও নয়। আর এসব মোটরসাইকেল বেশি ইঞ্জিন ধারণক্ষমতার মোটরসাইকেলের তুলনায় অনেক বেশি স্ট্রেস ডিল করে। ফলে অল্প ধারণক্ষমতার ছোট মোটরসাইকেলগুলিতে ঘন ঘন রিপেয়ার ও মেইনটেন্যান্সের প্রয়োজন হয়।
তো বন্ধুরা, এই ছিলো ছোট সাইজের মোটরসাইকেল ব্যবহারের সমস্যা নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। আশাকরি আপনারাও আমাদের সাথে একমত হবেন। তবে একথা উপেক্ষা করার উপায় নেই যে ছোট সাইজের মোটরসাইকেল ব্যবহারের সুবিধা এতো বেশি যে তা এর এসব ত্রুটিগুলিকে সবসময়েই ছাড়িয়ে যায়। আর সেকারনেই এসব মোটরসাইকেল বিশ্বজুড়ে এতটা জনপ্রিয়। যাই হোক, আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। নিরাপদে চলুন এবং নিরাপদ থাকুন।