Shares 2
হোন্ডা সিবি ট্রিগার এর মালিকানা রিভিউ লিখেছেন জুন সাদিকুল্লাহ
Last updated on 06-Jul-2024 , By Ashik Mahmud Bangla
আমার প্রতি অনেকের অভিযোগ আমি যখন যেই বাইক চালাই সেটাকেই সেরা বলি। যাইহোক আজ আমার হোন্ডা ট্রিগার এর ৭৫০০ কিলোমিটার পূরণ হল তাই কিছু জিনিষ শেয়ার করতে চাই আপনাদের সাথে আশাকরি ভালো লাগবে।
হোন্ডা সিবি ট্রিগার এর মালিকানা রিভিউ লিখেছেন জুন সাদিকুল্লাহ
ড্যাশ বোর্ড
ভালো দিক ড্যাশ বোর্ডের কমলা আলো যদিও আমার পছন্দ না কিন্তু কি আর করা। ড্যাশ বোর্ডে দুইটা ট্রিপ মিটার আছে আর আমার পছন্দের ঘড়ি আছে। কেন জানি ড্যাশ বোর্ডের ঘড়িটা আমার কাছে খুব দরকারি মনেহয়। সুইচ গুলো খুব ভালমানের মনে হয় নোকিয়ার ১১০০ মোবাইলের সুইচ টিপছি। খারাপ দিক দুইটা ট্রিপ মিটার ১০০০ কিলোমিটার পার হওয়ার পর আবার অটোমেটিক শূন্য থেকে শুরু হয়। টপ স্পীড আর জিরো টু সিক্সটি রেকর্ড যদি দেখা যেতো আরটিআর এর মতো তাহলে ভালো হতো।
হেডলাইট আর ওয়্যারিং
ভালোদিক ১২V 4 Ah এর AC হেডলাইট আলো ভালোই ব্যাক লাইটা সুন্দর। খারাপদিক DC হেডলাইট ব্যবহার করার পর খুব সমস্যা হয় AC হেডলাইট ব্যবহার করতে।
ফ্রন্ট সাস্পেন্সন
ভালো দিক Size doesn’t matter এই কথাটা আসলেই সত্যি। ফ্রন্ট সাস্পেন্সন চিকন দেখে খুব খারাপ লেগেছিল।
প্রথম যখন এই বাইকটা টাঙ্গাইল থেকে নিয়ে আসি তখন গভীর রাত মির্জাপুরের পরে হটাত সামনে বিশাল এর উঁচু ডিবি পেয়েছিলাম কিন্তু সময় ছিলোনা ব্রেক করার মতো কারন পিছনে আরও দুই জন রাইডার ছিল কি আর করা দিলাম পীচের তৈরি উঁচু ডিবির উপর উঠিয়ে ... সত্যি যেমন ভয়ঙ্কর ভেবেছিলাম তেমন কিছু হয়নাই তখন ফ্রন্ট সাস্পেন্সন নিয়ে মনটা একটু ভালো হল। আর একেবারে নিশ্চিন্ত হলাম যখন দেখলাম সিবিআর ১৫০আর এর ফ্রন্ট সাস্পেন্সন আর CB trigger এর ফ্রন্ট সাস্পেন্সন সেম।
খারাপ দিক একটু মোটা করলে বাইকের লুকটা খারাপ হতো না। হয়তো আরও বেশী কমফরট ফিল হতো।
ব্যাক সাস্পেন্সন
ভালো দিক শেষ কয়েক বৎসর অনেক গুলো বাইক চেঞ্জ করেছি আর আমার রেগুলার পিলিওন এর ভাষ্য মতে ট্রিগার সবচাইতে বেশী আরামদায়ক আর আমার নিজেও একমত। খারাপ দিক এখনো বের করতে পারিনাই পারলে জানিয়ে দিবো।
কন্ট্রোল আর ব্রেকিং
ভালোদিক ডাবল ডিস্ক এর কল্যাণে বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম সত্যি ভালো আর যতদিন এফজেড সিরিজ ডাবল ডিস্ক দিচ্ছে ততদিন ট্রিগার এগিয়ে থাকবে। বাইকটা খুব কম জায়গায় ইয়উ টার্ন করা যায় যে কারনে জ্যামের ভিতর চালাতে ভালোই লাগে । আর কন্ট্রোল নির্ভর করে রাইডারএর উপর আর ১৩৭ কেজির এই মেশিনটার কন্ট্রোল সত্যি খুব ভালো কারন অনভিজ্ঞ রাইডারদের অনেক সুবিধা দেবে এই ট্রিগার।
খারাপ দিক ড্রামের তুলনায় ডিস্ক এর দাম বেশী আর ডিস্কে যদি মবিল আর তেল পড়ে তাহলে খুব রিস্ক বেড়ে যায়। আর যদি ডাবল ডিস্কে অভ্যাস না থাকে তাহলে প্রথম প্রথম ভালো সমস্যা ফেস করবে।
ইঞ্জিন আর টায়ার
ভালোদিক হোন্ডার রিফাইন ইঞ্জিনের কথা নাই বা বললাম শুধু এইটুকু বলবো এতো স্মুথ ইঞ্জিন আমি পাইনি আর এটা নিয়ে একদিনে ঢাকা বিছানাকান্দি ঢাকা ৬০০+ কিলোমিটার চালালাম কোন সমস্যা ছাড়া আর গত সপ্তাহে একটানা ২৬ ঘণ্টা ১১৬৫ কিলোমিটার চালালাম কোন প্রবলেম ছাড়া। ট্রিগার এর সামনের চাকা ৮০/১০০-১৭M/C ৪৬P আর পিছনের চাকা ১১০/৮০-১৭M/C ৫৭P হইলবেস ১৩২৫ এম এম।
বাইকের ডিজাইন অনুযায়ী চাকাগুলো ভালোই সাপোর্ট দেয়। করনারিং আর ভাঙ্গাচুরা রাস্তায় খুব একটা সমস্যা হয়না টিউবলেস টায়ারে। বাংলাবান্ধা রোডে ১১০ এ করনারিং করে দেখেছি কোন সমস্যা হয়নাই। আরপিএম এর কাটা ৯ পার করতে পেরেছি এই ট্রিগার দিয়ে যেখানে এফজেড সিরিজে ৮ পার করতে পারিনাই।
খারাপ দিক এফজেড সিরিজ আসার আগে মোটা চাক্কার চল খুব কম ছিল তাই আমারও মনেহয় পিছের চাকা একটু মোটা হলে ক্ষতি কি।
লিটারে কতো যায়
ভালোদিক নুতুন যখন বাইকটা নিলাম ব্রেকিং প্রিয়ডে ৬০ এর উপর পেলাম যদিও আরপিএম কাটা ৫ পারহতে দিতাম না। আর এখন পাচ্ছি ৪৫ থেকে ৫০। ১২ লিটারের ট্যাঙ্কই ফুল করার পর ৪৫০ কিলোমিটার আর রিজার্ভ এর ২ লিটারে ৮০ কিলোমিটার। যদিও রিজার্ভে আসার পর পর পাম্পে দৌড় দেই।
খারাপ দিক কোন বাইকে আমি হাইওয়েতে ভালো মাইলেজ পাইনা যেমন আমি ত্রিগারে পাই ৪০ আমার মনেহয় চালানো খারাপ।
এক্সিলারেসন আর টপ স্পীড
ভালোদিক ১৪ বিএইচপি এর বাইকের এক্সিলারেসন ভালোই একদিন আরটিআর এর সাথে ড্রাগ রেস দিয়ে চেক করে ফাইনাল কমেন্টস দিতে হবে। সিবিআর আর আরওয়ান ফাইভ এর পর এক্সিলারেসন ট্রিগার এর ভালো নাকি আরটিআর এর ভালো এটা নিয়ে আমার একটু কনফিওসন আছে। ট্রিগারে আমি পেয়েছিলাম ১২৬ আর ঢাকাতে আর হাইওয়েতে খুব তাড়াতাড়ি ১১০/১১৮ পর্যন্ত উঠানো যায়।
খারাপ দিক আরপিএম মিটারে দেখি ১১ পর্যন্ত দেওয়া যদিও ৯ এর বেশী উঠানো যায়না।
অনেকেই বলেন এটা ইয়উনিকরন এর কপি আমি তাদের অনুরধ করবো দুইটা বাইক পাশাপাশি রেখে একটু বসার জন্য না চালালেও হবে পার্থক্য এমনি বুজতে পারবেন। দাম আর অন্যান্য দিক দিয়ে দেখলে এটা সত্যি খুব ভালো একটা বাইক। আর হোন্ডা কি জিনিষ নুতুন করে বলার কিছু নেই কারন আমার জন্মের আগের হোন্ডা আমি রাস্তায় হরদম দেখি কিন্তু অন্য কোম্পানির বাইক ওইভাবে দেখিনা।
আর একটা কথা না বললেই না সেটা হল এই ট্রিগারের লুক যদি আর একটু ভালো হতো তাহলে অন্য বাইক কোম্পানিগুলো চিন্তায় পড়ে যেতো তাদের প্রোডাক্ট নিয়ে।
-লিখেছেন জুন সাদিকুল্লাহ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন।
মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com - এই ইমেইল এড্রেসে।
T
Published by Ashik Mahmud Bangla