Shares 2

Suzuki GSX-R150 বাইকের মালিকানা রিভিউ - তপু

Last updated on 31-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

আমি মো: তপু আহমেদ । আপনাদের সাথে আমার Suzuki GSX-R150 বাইকের মালিকানা রিভিউ শেয়ার করবো । আমার জীবনের প্রথম বাইক কিনেছিলাম আমার এক ফুফাতো ভাইয়ের কাছ থেকে। বাইকটি ছিলো পালসার ১৫০ সিসি.বাইকটি কিনেছিলাম ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে।

Suzuki GSX-R150 বাইকের মালিকানা রিভিউ                                  

Suzuki GSX-R150 বাইকের মালিকানা রিভিউ - তপু

আমার বাইকটি আমার খুব পছন্দের ছিলো ৷ কিন্তু বেশিদিন বাইকটি ব্যবহার করতে পারিনি ৷ আমার এক বড়  ভাই বাইকটি নিয়েছিলেন ব্রাক্ষনপারা নির্বাচনী কাজে। দুর্ভাগ্যক্রমে বাইকটি সেখানকার লোকেরা পুরিয়ে ফেলে ৷ তারপর কিছুদিন পরে একই মডেলের আরেকটি বাইক কিনি শো রুমে গিয়ে। তারপর বাইকটি অনেকদিন ব্যবহার করেছিলাম ৷ এটি ছিলো আমার প্রথম বাইকের অভিজ্ঞতা।

ছোটবেলা থেকেই আমার বাইক পছন্দ ছিলো। ছোট বেলা দেখতাম আব্বুকে বাইক রাইডিং করতে ৷ সেখান থেকেই আমার বাইক রাইডিং এর নেশা জাগে। যেটা এখনো অব্দি আছে। আমার দ্বিতীয় বাইক্টির পরে আমি পালসার এন এস ১৬০ কিনি ৷ কিছু দিন চালানোর পরে আমি বিদেশে চলে যাই ৷ পাচ বছর বিদেশে থাকার পরে এসে নতুন বাইক কিনি ৷

যেহেতু বাইকিংয়ের নেশা আছে সেহেতু দেশে এসেই ড্রাইভিং লাইসেন্স করি এবং Suzuki GSX-R150 বাইকটি কিনি। বাইকটি প্রথম দেখেই প্রেমে পরে যাই। বাইকটির রঙ কালো- হলুদ, সিসি ১৫০,  ডুয়াল চেনেল এবি এস, বাইকটির টপ স্পিড ১৬০ যেটি কিনা বাংলাদেশের সব থেকে বেশি টপ স্পীড এর বাইক । বাইকটির কালার, ডাবল এবি এস, টপ স্পীড, লুকস ইত্যাদি দেখে বাইকটি কিনতে আগ্রহী হই।

Suzuki GSX-R150 মালিকানা রিভিউ

বাইকটি কিনেছি  হোমনা থানা তিতাস থেকে। বাইকটি সেকেন্ড হেন্ড কিনেছি। বাইকটির জন্য আমাকে খরচ করতে হয়েছে ৩,২৫,০০০ টাকা। বাইকটি সম্পর্কে আমি ফেইসবুকের মাধ্যমে জানতে পারি৷ তারপর আমি আমার  এক বন্ধুকে সাথে নিয়া বাইকটি আনার জন্য যাই ৷ বাইকটিতে উঠার পরে যখন একটু রাইড করে আসি তখনই বাইকটির প্রেমে পরে যাই। তারপর আর দেরি করিনি বাইকটি নিয়ে সোজা দুই বন্ধু বাসার দিকে রওনা হই।

বাইকটি যেহেতু খুব পছন্দের সেহেতু বাইকটিতে উঠলেই এক অন্যরকম অনুভূতির সৃষ্টি হয়। যা কিনা কোন শব্দে প্রকাশ করা যাবেনা। বাইকটি কিনেই আমি পরের দিন  কুমিল্লা কেন্টেরমেনট S,s,motors সুজুকি সার্ভিস সেন্টারে মাস্টার্স সার্ভিস করিয়ে আনি। তারপর এখনো কোন  সার্ভিস করাইনি। আমি Motul 10w30 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি।

যেহেতু আমার বাইকে ১৩০০ মিলি ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা লাগে সেহেতু আমাকে দুইটি ইঞ্জিন ওয়েলের বোতল কিনতে হয়। প্রতিটি বোতল আমাকে কিনতে হয় ১১৫০ টাকা করে। গাড়িটি ২৫০০ কিলোমিটার রাইড করার আগে ৪৮ মাইলেজ পেতাম ৷ এখন ৯০০০+ হওয়ার পরেও আমি প্রায় ৪৫+ মাইলেজ পাচ্ছি । আমি আমার বাইকটি প্রতিদিন ই খুব যত্ন সহকারে পরিষ্কার করি।  প্রতি সপ্তাহে একবার বা ১০ দিন পর পর আমি বাইকটি ধৌত করি। 

প্রতিবার বড় কোন জায়গায় ঘুরার আগে ও পরে বাইক ওয়াস করি ও ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করি। আমি আমার বাইকের তেমন কোন পার্টস পরিবর্তন করিনি। শুধু মাত্র সামনে পিছনের ব্রেক শো, এয়ার ফিল্টার , তেলের টাংকির ফিল্টার পরিবর্তন করেছিলাম। খোলা তেলের  ব্যবহারের কারনে ফিল্টার টি পরিবর্তন করতে হয়েছে। বাইকের মধ্যে তেমন কোন মডিফাইড করা হয়নি৷ শুধু মাত্র বাইকে কিছু স্টিকার করিয়েছি।  

বাইকটি দিয়ে আমি ১১০ স্পিড তুলেছিলাম ৷  আমিSuzuki GSX-R150 user review তেমন স্পীডে বাইক রাইড করিনা ৷ বাইকটির পাচটি ভালো দিক বলতে গেলে প্রথমত, বাইকটি দেখতে খুব সুন্দর,   দ্বিতীয়ত  বাইকটির কন্ট্রোলিং খুব ভালো , ৩য় বাইকটির খুব ভালো মাইলেজ পাওয়া যায়, চুতুর্থ  বাইকটি টপ স্পীড  বাংলাদেশের সব বাইকের থেকে বেশি , ডুয়াল চেনেল এবি এস।

বাইকটির পাচটি  খারাপ দিক তুলে ধরতে গেলে বলা যায়, যদিও তেমন কোন খারাপ দিক পাইনি। প্রথমত - এই বাইকের পার্টস এর দাম অনেক বেশি। ২য় - বাইকটি লং রাইড করতে গেলে শারিরীক দিক থেকে একটু ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় , ৩য় - পেছনের পিলিয়ন সিট টি নিয়ে অনেকে অভিযোগ করছে, চতুর্থ -ফুয়েল টাংকির ধারণ ক্ষমতা কম, ৫ম - বাইকের হেডলাইটের আলো অন্য বাইকের তুলনায় অনেক কম। 

সাম্প্রতিক সময়ে বাইকটি নিয়ে আমি আমার এক বন্ধুকে নিয়ে সিলেটের কিছু অংশ ঘুরতে যাই ৷ প্রায় উল্লেখযোগ্য কিছু যায়গায় ঘুরে আসি ৷ প্রায় ৭০০ কিলোমিটার রাইড করেছিলাম ৷ আমার বাসা থেকে সিলেটের জাফলং, কুলাউড়া , শ্রীমঙ্গল , মৌলভিবাজার , শাহজালাল , শাহপরান মাজার জিয়ারত  করে এসেছি ৷ অসম্ভব সুন্দরের জায়গা সিলেট।  

Suzuki GSX-R150 yellow user review

বাইকটির ব্যাপারে চুড়ান্তভাবে কিছু লিখতে গেলে বলা যায় আলহামদুলিল্লাহ বাইকটি রাইডিং এর ক্ষেত্রে অনেক ভালো । আলহামদুলিল্লাহ রেডি পিকআপ থাকার কারনে বাইকটি যেকোন পরিস্থিতিতে চালিয়ে মজা পাওয়া যায় । বাইকটি নিয়ে অনায়াসে লং টুর দেয়া যায় ৷ পরিশেষে বলা যায় যে, বাইকটি সব দিক থেকেই সেরা এবং অনেক কম্ফোর্টেবল। 


লিখেছেনঃ  মো: তপু আহমেদ

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla