Shares 2
Suzuki Gixxer বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - শাকিল আহম্মেদ
Last updated on 30-Jul-2024 , By Shuvo Bangla
আমি শাকিল আহম্মেদ। পেশায় একজন স্টুডেন্ট এবং ফ্রিল্যান্সার। আমি একটি Suzuki Gixxer বাইক ব্যবহার করি । ছোট বেলা থেকে বাইকের প্রতি আসক্ত একজন মানুষ। হাইস্কুলের গন্ডি পেরোনোর আগে বাইক চালানো পুরোপুরি আয়ত্ব করে ফেলেছিলাম। আর আব্বুর বাইক নিয়েই টুকিটাকি চালানো শুরু।
হিরো হাংক ১৫০ সিসি বাইকে চালানো শিখেছিলাম। টুকটাক চালানো হতো, বেশ ভালো লাগত আর মনে মনে শুধু স্বপ্ন ছিলো একদিন আমার নিজের একটা বাইক থাকবে। একান্ত নিজের! নিজের ইচ্ছেমত রাইড দিবো আর ঘুরে দেখবো বাংলাদেশ।
কলেজে উঠার পর থেকে আব্বুর বাইক একটু বেশি চালানো হতো।ব্লু কালারের ১৩৫ সিসি বাজাজ ডিসকভার। যেটা এখনও সৌখিনতা'র প্রতিক। ডিসকভার সিরিজের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং রোডকিং সাউন্ড কোয়ালিটি সম্পন্ন বাইকগুলোর মধ্যে এই বাইকটা আমার কাছে অন্যতম মনে হয়েছে।যেটা দীর্ঘদিন আমি ব্যবহার করেছি এবং বাইকটি আমাকে সুন্দর মত সঙ্গ দিয়েছে।
ছোট খাটো দুএকটা দূর্ঘটনা ছাড়া এই বাইকটিতে বড় ধরনের কোনো বিপদ আসেনি আলহামদুলিল্লাহ। কলেজে উঠার পর থেকে একটা বাইক দাবী করেছিলাম তবে খুব বেশি কাজে দেয়নি। বাবার কথা ছিলো কলেজ শেষ করলেই হবে নতুন বাইক। যাই হোক এভাবেই কাঁটতে লাগল দিন।পরিক্ষা শেষ হলো অনার্সে ভর্তি হলাম তবে বাইকের আসক্তিটা যেন জেকে বসেছে।
বাড়িতে যেহুতু আগে থেকে কমিটমেন্ট করা ছিল তাই আর পরিবার থেকে বাঁধা পায়নি। আব্বুকে বললাম তিনি রাজী হলেন তবে শর্ত একটাই নির্দিষ্ট গতিসীমায় বাইক রাইড করতে হবে। সব শর্ত নির্ধিধায় মেনে নিলাম। কারন এখন আমার নতুন বাইক হবে। একদিন সকাল বেলা বাইক কিনতে গেলাম। আমার পছন্দের ভিতর দুটো বাইক ছিলো সুজুকি জিক্সার । সুজুকির শোরুমে গিয়ে দেখে শুনে জিক্সার নিলাম।
এবার শেয়ার করব সুজুকির সাথে আমার ৪ মাসের পথচলা -
জিস্কার নেওয়ার প্রথম কারন এই গাড়িটার লুকিং স্টাইল এবং সিটিং পজিশনটা সব চেয়ে বেশি ভালো লাগে আমার। বাইকটিতে বসেও সামনের দিকে একটা সুন্দর লুক পাওয়া যায় । ইঞ্জিন পারফর্মেন্স এবং সাউন্ড কোয়ালিটি দারুন। সুজুকি জিক্সার ইঞ্জিন অনেক বেশি রিফাইন এবং শক্তিশালী। দীর্ঘসময় চালালেও এই বাইকের কোন ইঞ্জিনে ভাইব্রেশন হয়না।
আমার বাইকে রয়েছে ১৫৪.৯ সিসি একটি ইঞ্জিন। ১৪.৮ হর্স পাওয়ারের সাথে রয়েছে ১৪ ন্যানোমিটারের টর্ক যা মোটরসাইকেলটিকে করেছে শক্তিশালী। সুজুকি জিক্সারের রয়েছে ৮৫০ মিঃলিঃ ইঞ্জিন ওয়েল ধারন করার ক্ষমতা। এর একটি স্বচ্ছ গ্লাস উইন্ডো রয়েছে যা ইঞ্জিন ওয়েল এর লেভেল দেখায় এবং এটি ইঞ্জিন ওয়েলের পার্ফেক্ট রিডিং পাওয়ার জন্য খুব উপকারী ইঞ্জিনের সাউন্ড ভালো এবং হাই আর পি এম এ ইঞ্জিনের গ্র্যান্টি সাউন্ড চমৎকার ফিল দেয়।
আমার মতে সুজুকি জিক্সার এর মত সেরা সাউন্ড আর কোন বাইক এর নেই। আর যখন থ্রটল ঘুরাবেন তখন দেখবেন মুহূর্তেই স্পীড ৬০ কিমি +। প্রথম প্রথম আপনি এর স্পীড দেখে অবাক হবেন এই বাইক কিভাবে এত দ্রুত স্পীড তোলে? যখন যেখান থেকেই, যেই গিয়ার থেকেই থ্রটল ঘুরাবেন, টের পাবেন যে কি হচ্ছে।
সুজুকি জিক্সার সত্যি সত্যিই অনেক কম্ফোর্টেবল একটি বাইক । আমি একবারের জন্যও আনকম্ফোর্টেবল ফিল করিনি। ব্যাক পেইন, আর্ম পেইন এগুলো হবেনা । এটার ইঞ্জিন ভাইব্রেশন ও অনেক কম হওয়ায় কারণে এটি সবচেয়ে কম্ফোর্টেবল। সুজুকি জিক্সারের মাইলেজ হাইওয়েতে গড়ে প্রায় ৫০কিঃমি/লিটার । এছাড়া সিটি রাইডিং এ ৩৮-৪০ কিঃমিঃ/লিটার অনায়াসে পাওয়া যায়। এটা অনেক সন্তুস্ট হওয়ার মতই একটি ব্যপার।
আমার কাছে মনে হয়েছে জিক্সার সবথেকে বড় গুন হলো এটার ব্রেকিং সিস্টেম। অনেক দ্রুত গতি নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম। ভালোব্রেকিং এর জন্য ভালোমানের ফ্রন্ট শক এবজর্বার , ডিস্ক , টায়ার , পেছনে মনোশক , মোটা রিয়ার টায়ার ইত্যাদি এটিকে সমৃদ্ধ করেছে ।
প্যানিক ব্রেকিং এর সময়ও এটি অনেক ভালো সাপোর্ট দেয়। হাইওয়েতে এবং গ্রামের রাস্তাতে টুকটাক অনেক ট্যুর করেছি এবং আমার কাছে সেরা সুজুকি মানেই আমার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা গুলোর দাবীদার। সব মিলিয়ে আমি মনে করি সুজুকিই সেরা বাইক। ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ শাকিল আহম্মেদ
T
Published by Shuvo Bangla