Shares 2
Suzuki Bandit 150 পাওয়ারফুল একটি নেকেড স্পোর্টস বাইক-মকবুল
Last updated on 16-Jul-2024 , By Raihan Opu Bangla
আমি মকবুল হোসেন । ঢাকা কামরাঙ্গীরচর এলাকায় বসবাস করি । আমি বর্তমানে একটি Suzuki Bandit 150 বাইক ব্যবহার করি । আজ আমি আমার বাইকটি নিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো ।
Suzuki Bandit 150 পাওয়ারফুল একটি নেকেড স্পোর্টস বাইক
Suzuki Bandit 150 বাইকটি একটি নেকেড স্পোর্টস বাইক । আমার সবসময় নেকেট স্পোর্টস বাইকের প্রতি খুব বেশি আগ্রহ । অনেক বছর ধরে বেশ কিছু বাইক ব্যবহার করেছি তার মধ্যে বেশিরভাগ বাইক গুলো ছিল নেকেড স্পোর্টস বাইক ।
বাইকের প্রতি আগ্রহ খুব বেশি । তাই নতুন কোন বাইক বাংলাদেশে আসলে ইচ্ছে হয় বাইকটির ব্যপারে কিছু অভিজ্ঞতা নেয়ার বাইকটি রাইড করার । আর এই কারনেই বার বার বাইক পরিবর্তন করা হয় । Suzuki Bandit 150 বাইকটি বলতে গেলে একদম হুট করে সিদ্ধান্ত নিয়ে কেনা । যেদিন বাইকটি ক্রয় করি ওইদিন বাইক কেনার কোন কথাই ছিলনা ।
ইচ্ছে ছিল Suzuki Gixxer 155 Fi ABS মডেলের নতুন বাইকটি ক্রয় করার । আর তাই বাইকটি কবে মার্কেটে এভেলেবেল হবে এটা জানার কারনে আমি সুজুকি শোরুমে যাই । সুজুকি শোরুম এ গিয়ে Suzuki Bandit 150 বাইকটি দেখে খুব ভালো লাগে । পছন্দ যখন হয়েই গেছে কি আর করার সাথে সাথে বাইক বুকিং করে বাসায় চলে গেলাম বাকি টাকা নিয়ে আসতে । ২ ঘণ্টার মধ্যে বাসা থেকে টাকা নিয়ে শোরুম এ চলে আসি । এতক্ষনে বাইক সম্পূর্ন রেডি হয়ে যায় ।
Suzuki Bandit 150 First Impression Review In Bangla – Team BikeBD
বাইকটি আমি কিনেছিলাম সুজুকির অফিসিয়াল সোনারগাঁও মটরস এর বাংলামটর এর শোরুম থেকে । আমি যখন Suzuki Bandit 150 বাইক কিনি তখন বাইক এর রেজিস্ট্রেশন সহ বাজার মূল্য ছিল ৩,৩০,০০০ টাকা । আমি রেজিস্ট্রেশন এর জন্য শোরুম কে টাকা দিয়ে দেই । তবে অবাক লাগার বিষয় ছিল আমি মাত্র ৩ দিনে বাইকটির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এবং পেপার্স পেয়ে যাই । এত দ্রুত রেজিস্ট্রেশন নাম্বার পাবো ভাবিনি ।
এবার বলি বাইক এর কিছু ফিচার - Suzuki Bandit 150
বাইকটিতে দেওয়া হয়েছে একটি ১৫০ সিসি ৪ স্ট্রোক সিঙ্গেল সিলিন্ডার এফ আই ইঞ্জিন । বাইকটির ইঞ্জিনটি যথেষ্ট পাওয়ারফুল কারন বাইকটিতে দেওয়া হয়েছে Suzuki GSX-R 150 বাইকের সেইম ইঞ্জিন । আর GSX-R এর ইঞ্জিনের পাওয়ার নিয়ে মোটামুটি ধারনা আমাদের সবারই আছে । ৬টি গিয়ার । লিকুইড কুল ইঞ্জিন । ১৩০ সেকশন এর পেছনের টায়ার । ১৫০ সিসি ডুয়াল ডিক্স ব্রেক । সব কিছুই আছে যা যা একটি নেকেড স্পোর্টস বাইকের জন্য দরকার ।
Also Read: Best 150cc Bike In Bangladesh Under 5 Lakh At A Glance
আমার সব থেকে বেশি ভালো লেগেছে বাইকটির ০-১২০ এর রেসপন্স । আমি মনে করি বাইকটির ০-১২০ এর রেসপন্স বর্তমানে এই সেগমেন্ট এর বাংলাদেশের অনেক বাইককে হার মানাতে সক্ষম । বাইকটি নিয়ে খুব সহজে ঢাকা সিটির জ্যম এবং পূরান ঢাকার অলি গলি থেকে বের হয়ে যাওয়া যায় ।
এর একমাত্র কারন বাইকটির আয়তন এবং টার্নিং রেডিয়াস । বাইকের পারফরমেন্স ব্রেকিং আমার কাছে যথেষ্ট ভালো লেগেছে । এর স্মুথনেস আমার বেশ পছন্দ হয়েছে । ৫০০ কিলোমিটারে অফিশিয়াল সার্ভিস সেন্টার থেকে একটি সার্ভিস করাই ।
প্রথম সার্ভিস এর পরে বাইকটি আরো স্মুথ হয়ে যায় তবে আমার কাছে বাইকটির ক্লাচ একটু বেশি শক্ত মনে হচ্ছিল । যেহেতু আমি ঢাকা সিটিতে রাইড করি সেক্ষেত্রে ক্লাচ হার্ড ইস্যু থাকলে সেটা ঢাকা সিটির অতিরিক্ত জ্যামে একটু বিরক্তিকর ব্যপার হয়। বাইকের হেডলাইটের আলো যথেষ্ট ভালো ।
ঢাকা সিটিতে নাইট রাইডে কোন প্রকার সমস্যা হয়নি । বাইকটি নিয়ে আমি মাওয়া এক্সপ্রেস ওয়েতে নাইট রাইড করি , তখন এর হেডলাইটের পার্ফরমেন্স খুব ভালো লেগেছে ।
তবে বাইকের পেছন সাইড আমার কাছে ভালো লাগেনি । এত পাওয়ারফুল একটি নেকেড স্পোর্টস বাইকের সাথে এমন একটি পিলিয়ন সিট মানায় না । তবে ফ্যামিলি নিয়ে রাইড করার জন্য বাইকটি খুব ভালো । লিকুইড কুল ইঞ্জিন হওয়াতে বাইকটির পার্ফরমেন্স লং রাইডে বেশ ভালো থাকে । টপ স্পীডে কোন প্রকার পারফরমেন্স ড্রপ করেনি । হাইওয়েতে এবং সিটি রাইডে বাইকটির খুব বেশি হিটিং ইস্যু নেই ।
বাইকটির মাইলেজ নিয়ে আমার খুব বেশি ধারনা নেই । ওইভাবে মাইলেজ চেক করিনি তবে আমার ধারণা বাইকটি ৪০+ মাইলেজ দিচ্ছে । টপ স্পিড এর কথা বলতে গেলে বাইকটির থ্রটল রেসপন্স এর কারনে খুব দ্রুত স্পিড উঠে যায় । ০-১২০ এর রেসপন্স খুব দ্রুত এর পরে স্পিড উঠতে একটু সময় লাগে । মাওয়া রোডে পিলিয়ন সহ টপ স্পিড পেয়েছি ১৩৫ ।
বাইকের পেছনের চাকা ১৩০ সেকশন থেকে পরিবর্তন করে ১৪০ সেকশন এর লাগিয়েছি । কিছু স্টিকার মডিফাই করেছি এবং শাড়ি গার্ড লাগিয়েছি । বাইকটি নিয়ে আমি ২ বার লং রাইডে বের হই । ঢাকা-মাওয়া-ঢাকা এবং ঢাকা-টাঙ্গাইল । হাইওয়েতে এই বাইকের পার্ফরমেন্স খুব ভালো । খুব দ্রুত বাইকটির স্পীড উঠে যায় এবং খুব দ্রুত বাইকটি কন্ট্রোল করা যায় । লিকুইড কুল ইঞ্জিন হওয়াতে বাইকটির টপ স্পিড এর পার্ফরমেন্স খুব ভালো ।
লং রাইডে আমি পার্ফরমেন্স খুব ভালো পেয়েছি । এর পাওয়ারফুল ইঞ্জিন এর পার্ফরমেন্স হাইওয়েতে গেলে ফিল পাওয়া যায় । বাইকের ট্যাংক এর পজিশন আমার কাছে ভালো লাগেনি । রাইডার সিট থেকে ট্যাংক এর দিকটা আমার কাছে বেশি চিকন মনে হয়েছে । যে কারনে রাইড করার সময় ট্যংক এর সাথে পা আটকে থেকেনা । এই কারনে কর্নারিং এর সময় কনফিডেন্স কম পাই ।
Suzuki Bandit 150 বাইকের কিছু ভালো দিক -
- ইঞ্জিন পাওয়ার
- কন্ট্রোল
- ব্রেকিং
- স্মুথনেস
- মাইলেজ
Suzuki Bandit 150 বাইকের কিছু খারাপ দিক -
- ক্লাচ হার্ড
- পেছনের সাইড ভালো লাগেনি
- সিবিএস অথবা এবিএস ব্রেক দেওয়া দরকার ছিল
- বাইকের লুক কিছুটা স্পোর্টি করা দরকার ছিল
- কালার কোয়ালিটি আরো ভালো করা উচিত ছিল
বাইকটি নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা থেকে এতটুকু বলতে পারি ব্যস্ত শহরে সিটি রাইডের জন্য এবং হাইওয়ে ট্যুরের জন্য আপনি যদি ফ্যামিলি নিয়ে রাইড করতে চান আবার সিংগেল রাইডের সময় পাওয়ারফুল একটি বাইক একত্রে পেতে চান তবে Suzuki Bandit 150 বাইকটি আপনার জন্য হবে পার্ফেক্ট একটি বাইক । ধন্যবাদ ।
লিখেছেনঃ মকবুল হোসেন
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
T
Published by Raihan Opu Bangla