Shares 2

Bajaj Pulsar N160 বাইক নিয়ে মালিকানা রিভিউ - হেলাল

Last updated on 05-Nov-2024 , By Shuvo Bangla

আমি আল আমিন হেলাল। আমার বাসা রাজশাহীর তানোর উপজেলায়। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স কমপ্লিট করেছি। আজ আপনাদের সঙ্গে Bajaj Pulsar N160 বাইকটি নিয়ে প্রায় ৫ মাসের রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।

ছোটোবেলা থেকেই বাইকের প্রতি একটা ভালো লাগা কাজ করতো। ২০১৭ সাল হতে BikeBD সহ অন্যান্য বাইকিং কমিউনিটিতে যুক্ত আছি। ২০২০ এর মাঝামাঝিতে এক বড়-ভাইয়ের Lifan KPR 150 দিয়ে বাইক চালানো শিখি। যেহেতু প্যানডেমিক চলছিলো ক্যাম্পাসও অফ তখন সারাদিন বাইক নিয়ে ঘুরতাম। বাইক নিয়ে নিজ ইচ্ছামতো, স্বাধীনভাবে ঘুরাঘুরি করা যায়। এজন্য বাইক রাইডিং আমার বেশ ভালো লাগে, রাইডিং খুব এনজয় করি।

Bajaj Pulsar N160 বাইকটি কেনার প্রথম অনুপ্রেরণা পাই ইউটিউবে BikeBD চ্যানেলের রিভিউ থেকে। ২০২৪ এর মে মাসে সিদ্ধান্ত নেই যে একটা বাইক কিনবো। প্রথম দিকে আমার চয়েজ লিস্টে ছিলো Suzuki Gixxer SF Fi ABS এবং Suzuki Gixxer Fi ABS। তো এই ইউটিউবে এই বাইকগুলোর রিভিউ দেখার সময় হঠাৎ BikeBD চ্যানেলের Bajaj Pulsar N160  বাইকের রিভিউ আমার সামনে আসে। রিভিউটা দেখে মনে হয়েছে এই বাইকটা আমার জন্য পারফেক্ট। 

পরে ইউটিউবে অনেক দেশি-বিদেশি বাইক রিভিউয়ারের ভিডিও দেখেছি এই বাইকটি সম্পর্কে। বাইকটির এগ্রেসিভ লুক, স্পেসিফিকেশন, ফিচারস এবং দাম দেখে মনে হয়েছে এই বাইকটা ভ্যালু ফর মানি। অবশেষে মে মাসের ১৫ তারিখে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট বাজারে অবস্থিত বাজাজ এর শোরুম হেনা এন্টারপ্রাইজ থেকে ২,৫৬,০০০ টাকায় (তখন অফারে বাজার মূল্য ছিলো- ২,৫৯,৯০০/-) Bajaj Pulsar N160 ব্লু কালার বাইকটা কিনে ফেলি। তারপর শুরু হলো আমার বাইকটির সাথে পথচলা।

এবার দেখা যাক Bajaj Pulsar N160 তে কি কি ফিচারস রয়েছে - 

  • প্রথমেই আসি এর Dual Channel ABS এর দিকে, ১৬৫ সিসি বাইকের মধ্যে এই বাজেটে এটাই একমাত্র বাইক যাতে Dual Channel ABS রয়েছে এবং ABS এর পারফরম্যান্সও বেশ ভালো। 
  • বাইকটিতে Fuel Injection System থাকায় ১৬৫ সিসির ইঞ্জিন হওয়া সত্ত্বেও এভারেজ ৪৮ + মাইলেজ দেয়। আশা করছি ব্রেক-ইন পিরিয়ড শেষে মাইলেজ আরও বাড়বে ।
  • সাইড স্ট্যান্ড ইঞ্জিন কাট-অফ ফিচারটি বেশ ভালো লেগেছে।
  • অয়েল কুলড ইঞ্জিন হওয়াতে ইঞ্জিন ওভার হিটিং ইস্যু নেই।
  • বাইকটিতে রয়েছে দুটি DRL সহ একটি LED Projection লাইট। এই লাইটের আলোতে হাইওয়ে বা সিটিতে কোথাও আলোর কমতি ফিল হবে না।
  • বাইকটিতে রয়েছে Under Belly Exhaust যা বাইকটিকে Unique লুক দেয় এবং এই Exhaust এর সাউন্ডটা শুনলে অন্যরকম একটা ফিল পাওয়া যায়।
  • স্পিডোমিটারটা বেশ ইনফরমেটিভ , এটাতে সাইড স্ট্যান্ড কাট-অফ, Fi Malfunction, Oil Pressure, ABS সহ বেশ কিছু ইনফরমেশন পাওয়া যায়। তবে আমার কাছে সবচেয়ে ভালো লাগে DTE ফিচারটা, এর মাধ্যমে বোঝা যায় যতটুকু ফুয়েল আছে সেটা দিয়ে কতটুকু পথ চলা যাবে।
  • আমি এখন পর্যন্ত ২টা ফ্রি সার্ভিস নিয়েছি। ১ম ফ্রি সার্ভিস নিয়েছি ডিলার পয়েন্ট থেকে কিন্তু তাদের সার্ভিস পছন্দ না হওয়ায় ২য় সার্ভিস নিয়েছি উত্তরা মোটরস রাজশাহীর সার্ভিস সেন্টার থেকে। আমি আমার বাইকে একদম প্রথম থেকেই মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। প্রথম থেকেই আমি Mobil Super 4T 20w50 গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি।

Bajaj Pulsar N160 বাইকটির কিছু ভালো দিক -

  • বাইকটির লুকিং বেশ এগ্রেসিভ।
  • বাইকটি Dual Channel ABS হওয়াতে ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং বেশ ভালো।
  • বাইকটিতে হেডলাইট হিসেবে রয়েছে LED Projection ল্যাম্প, যার ফলে সিটি কিংবা হাইওয়ে কোথাও আলোর কমতি ফিল হয় না।
  • পাওয়ার বেশি হওয়ায় ওভারটেকিং এর সময় খুব সহজেই ওভারটেক করা যায়।
  • পিলিয়ন সিট বেশ বড় হওয়ার পিলিয়ন নিয়ে খুব বেশি সমস্যা হয় না।
  • Fi  সিস্টেম থাকায় ১৬৫সিসি ইঞ্জিন হিসেবে মাইলেজ বেশ সন্তোষজনক।

Bajaj Pulsar N160 বাইকটির কিছু খারাপ দিক -

  • বাইকটির সিট হাইট কিছুটা বেশি হওয়ার কারণে ৫ ফুট ৫ ইঞ্চির কম হাইটের বাইকারদের বাইকটি চালাতে কিছুটা সমস্যা হয়।
  • বাইকটি ওজন কিছুটা বেশি হওয়াতে বাইকটা হ্যান্ডেল করতে সমস্যা হয়। অফ-রোডে চালালে ওজনটা ফিল করা যায় এবং হাতে ব্যথা অনুভব হয়।
  • বাইকটার হ্যান্ডেলবার কিছুটা নিচু হওয়ায় সামনের দিকে সামান্য ঝুকে চালাতে হয়।
  • বাইকটির টার্নিং রেডিয়াস কম হওয়ায় টার্নিং করতে বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়।

কোনো বাইকই শতভাগ পারফেক্ট না সব বাইকেরই ভালো-দিক, খারাপ-দিক আছে। আমার বাইকটি মাত্র ১২০০+ চলেছে, এখনো ব্রেক-ইন পিরিয়ড চলছে তাই আমি ৪০০০-৫০০০ rpm মেইনটেইন করে ৫০-৫৫ স্পিডে চালানোর চেষ্টা করি। যেহেতু এখনো ব্রেক-ইন পিরিয়ড শেষ হয়নি তাই কোনো লং ট্যুরে যাওয়া হয়নি। তবে কিছুদিন আগে প্রায় ১০০+ কিলোমিটার পথ রাইড করেছিলাম বাইকের মাইলেজ এভারেজ ৪৮+ পেয়েছি যেটা ১৬৫সিসি বাইক হিসেবে আমার কাছে বেশ সন্তোষজনক। 

এছাড়া এই বাইকটার ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং বেশ ভালো লেগেছে আমার । ABS কখনো মিস করে না এবং এবিএস এর ফিডব্যাক খুবই ভালো। এই বাইকের প্রতি ভালোবাসা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই বাইকটি হাইওয়ে এবং সিটি রাইড উভয়ের জন্যই বেশ আরামদায়ক। থ্রটল রেস্পন্স খুব ভাল মাইলেজ নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট। ওভারঅল সবকিছু বিবেচনা করলে Bajaj Pulsar N160 খুবই গুড লুকিং, সাশ্রয়ী এবং পারফেক্ট একটা বাইক। ধন্যবাদ ।


লিখেছেনঃ   আল আমিন হেলাল

আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla