Shares 2

Bajaj Pulsar 150 DD নিয়ে মালিকানা রিভিউ - সিয়াম সাখাওয়াত

Last updated on 29-Jul-2024 , By Shuvo Bangla

আমি সিয়াম সাখাওয়াত সাম্য। সিরাজগঞ্জের ছেলে হলেও বর্তমানে বগুড়া থাকি। আজ আমি আমার Bajaj Pulsar 150 DD নিয়ে ১৫০০ কিলোমিটার রাইড করার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

Bajaj Pulsar 150 DD নিয়ে মালিকানা রিভিউ

bajaj pulsar 150 dd bike picture

অনেকদিন ধরে ভাবছি আমার বাইকের একটি রিভিউ লিখব। অবশেষে আজ লিখেই ফেল্লাম।  বাংলাদেশের এই সবচেয়ে জনপ্রিয় Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটিই আমার জীবনের প্রথম বাইক।


Bajaj Pulsar 150 DD বাংলাদেশে অত্যধিক জনপ্রিয় ১৫০ সিসির একটি বাইক। এই জনপ্রিয়তার রেশ ধরেই আমিও কিনে ফেলি একটা Bajaj Pulsar 150 DD বাইক। আমার বাইকটি একদমই নতুন। এটি এখন পর্যন্ত চলেছে মাত্র ১৫০০ কিলোমিটার। আজ আপনাদেরকে এই বাইকটি সম্পর্কে ভালো এবং খারাপ কিছু দিক জানাবো।


আশা করি আপনাদের এটি কাজে আসবে। ছোটবেলা থেকে বাইকের প্রতি আমার খুব আগ্রহ ছিল। বাইক মানুষকে প্রকৃতির সবচেয়ে কাছে নিয়ে যেতে পারে। পারিবারিক বিধী নিষেধ থাকলেও আমি ক্লাস ৮ থেকেই বাইক চালানো শুরু করি। কিন্তু আমি ক্লাস ৫ এ থাকতেই বাইক চালানো শিখে ছিলাম। আমি বাইক চালানো শিখি Honda CD80 দিয়ে।


Bajaj Pulsar 150 DD First Impression Review In Bangla – Team BikeBD



পালসার হল ১৫০ সিসি সেগমেন্ট এ বাংলাদেশ এর সবচেয়ে জনপ্রিয় বাইক। ছোটবেলাতে যখন আমি পালসার রাস্তায় দেখতাম তখন থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল যে আমি বড় হয়ে একটি পালসার বাইক কিনবো। আমি আমার বাইকটি ছোটখাটো ঘুরাঘুরির জন্য কিনেছি, লং ট্যুর দেওয়া হয়নি এখনো আর খুব একটা ইচ্ছাও নেই। এর লুকস, স্টাইল সবকিছু আমাকে আকর্ষণ করে। 


যার কারণে বাজারে আরো অনেক বাইক থাকলেও আমি পালসার বাইকটিই ক্রয় করি। আমি Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটি কিনেছিলাম ১,৮২,৯০০ টাকা দিয়ে। বাইকটি কিনেছিলাম বগুড়ার অথোরাইজ ডিলার ইদ্রিস মটরস থেকে। 


এই বাইকের উপর বসতেই কেমন একটা ভাললাগা কাজ করে আমার। আমি নিজে বাইকটি কিনতে যাইনি। এমনকি আমি জানতামও না যে আমার একটি বাইক হতে যাচ্ছে। এটি ছিল আমার জন্য অনেক বড় একটি উপহার। আমি আমার নানুর বাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এসে দেখি আমাদের বাসার নিচে একটি নতুন বাইক।

bajaj pulsar 150 dd bike picture

বাসায় ঢোকার পর বাবাকে জিজ্ঞেস করি বাইকটি কার? বাবা বলে এটি তোমার। ওই দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিন। আমার বিশ্বাস হচ্ছিল না যে সত্যিই বাইকটি আমার। বাবা আমার স্বপ্ন পূরণ করে আমাকে এভাবে চমকে দিবে ভাবতেও পারিনি। প্রথম দিন যখন আমি নিজের Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটি চালাই সেটা ছিল অন্যরকম একটি অনুভূতি। 


আমি খুবই খুশি ছিলাম যে এটি আমার নিজের বাইক এবং পছন্দের একটি বাইক। প্রথমদিন আমি বাইকটি 50 কিলোমিটার চালিয়েছি । সেদিনের কথা আমি কখনো ভুলব না


আমার Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটি ডুয়েল ডিস্ক 150 সিসি একটি বাইক বাইক। এর সামনে-পিছনে উভয় চাকায় রয়েছে ডিস্ক ব্রেক। এটির রয়েছে শক্তিশালী 150 সিসি DTSI ইঞ্জিন। এটির ইঞ্জিন 13.25 নিউটন মিটার টর্ক উৎপন্ন করতে পারে। এটি একটি 4-stroke, 2 valve এর ইঞ্জিন। আমি আমার Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটি এখন পর্যন্ত একবারই সার্ভিস করিয়েছি। 


বগুড়ার বাজাজ অথোরাইজড সার্ভিস সেন্টার থেকে সার্ভিসিং করিয়েছি। আমার বাইকে আমি ৩৫ থেকে ৩৮ কিলোমিটার মাইলেজ পাচ্ছি প্রতি লিটার অকটেনে। বাইকটি মাত্র ১৫০০ কিলোমিটার চলার কারণে হয়ত মাইলেজ কিছুটা কম পাচ্ছি এখন। আশা করি ব্রেক-ইন পিরিয়ড শেষ হলে আরো বেশি মাইলেজ পাব। 

bajaj pulsar 150 dd bike picture

বাইকের তেমন কোন মডিফিকেশন করার কোনো ইচ্ছা নেই আমার। তবে এর হেডলাইটের আলো আমার কাছে যথেষ্ট মনে হয়নি। তাই ফগ লাইট লাগাতে চাই। কারণ রাতের বেলা বাইক রাইড করতে কিছুটা সমস্যা হয় আলোর স্বল্পতার জন্য। 


আমি প্রতি সপ্তাহে একবার নিজের বাইক নিজেই ওয়াশ করি এবং বাইক ওয়াশ করার জন্য শ্যাম্পু ব্যবহার করি।


যেহেতু আমি আমার বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করছি এখনো তাই আমি আমার বাইকে মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করছি। আমি বাজাজ অনুমোদিত বাজাজ DTSI ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করি। এটির দাম ৪৯০ টাকা। আমার Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটি একদমই নতুন তাই কোন পার্টস পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়নি এখনো পর্যন্ত। 


ব্রেক ইন পিরিয়ড মেইনটেইন করার কারণে বাইকটি দিয়ে আমি এখন পর্যন্ত টপ স্পিড তোলার চেষ্টা করিনি। 


Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটির কিছু ভালো দিক-

  • সিটিং পজিশন আমার কাছে বেশ কম্ফোর্টেবল মনে হয়েছে।
  • উভয় সাসপেনশন অফরোডেও বেশ ভালো পারফরম্যান্স দেয়।
  • সবথেকে ভালো দিক হলো এর ডুয়েল ডিস্ক ব্রেক।
  • সামনে পিছনে ব্যবহার করা হয়েছে ৯০ সেকশন এবং ১২০ সেকশন এর টায়ার।
  • বাইকটির লুকস অসাধারণ।


Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটির কিছু খারাপ দিক-

  • পিছনের চাকার ব্রেক ডিস্ক ব্রেক হলেও পার্ফরমেন্স তেমন ভালো লাগেনি ।
  • কোনো কিক স্টার্ট এর ব্যবস্থা নেই।
  • ইঞ্জিনের শক্তি আমার কাছে পূর্বের পালসার এর চেয়ে কিছুটা কম মনে হয়েছে।
  • CBS বা ABS নেই।
  • পিলিয়ন সিট কম্ফোর্টেবল না।

Bajaj Pulsar 150 DD

বাইকটি নিয়ে এই পর্যন্ত আমি কোন লং ট্যুরে যাইনি। তবে আমি যেটুকু চালিয়েছি আমার মনে হয়েছে এটি লং ট্যুরেও বেশ ভালো পারফরম্যান্স দিবে। যারা এই বাজেটে একটু ভালো বাইক কিনতে চাচ্ছেন তারা Bajaj Pulsar 150 DD এর বাইকটি দেখতে পারেন। Bajaj Pulsar 150 DD বাইকটির কন্ট্রোলিং,লুকস, মাইলেজ খুবই ভালো। আমি আমার বাইক নিয়ে খুবই খুশি। ধন্যবাদ।   


লিখেছেনঃ সিয়াম সাখাওয়াত সাম্য  


 আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।

Published by Shuvo Bangla