Shares 2
হোন্ডা লিভো ১১০ মালিকানা রিভিউ - নাঈম আহমেদ
Last updated on 17-Aug-2025 , By Saleh Bangla
আশা করি সবাই ভাল আছেন । আমি আমার হোন্ডা লিভো ১১০ ডিস্ক(ব্ল্যাক) নিয়ে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যাচ্ছি|আমার বয়স৩২, আমি পেশায় একজন চাকরিজীবী। এই বাইকটি চয়েজ করার কারণ আমি একটি Reliable Brand, Good looking, Low maintenance, Commuter বাইক চাচ্ছিলাম। অনেকের সাথে আলোচনা করে এটিই কিনার সিদ্ধান্ত নিলাম। অফিস যাতায়াতে জ্যাম, বাস-বাস এর জন্য ঘণ্টা খানেক অপেক্ষা – এসবে বিরক্ত হয়ে বাইক কেনা।
Also Read: Honda CRF450X 2016 Price in BD

অনেক আগে থেকে বাইক কিনার শখ ছিল কিন্তু বাসার আপত্তির কারনে কিনা হয় নাই। রাস্তায় জ্যাম আর বাসে ঠেলা ঠেলি,সিট না পেয়ে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে– এসব কারণে বাসার আপত্তি সত্ত্বেও শেষমেশ সবায়কে রাজি করায়, কিনে ফেললাম হোন্ডা লিভো ১১০।হোন্ডা লিভো ১১০ – মাইলেজ সবাই প্রথমে মাইলেজ জানতে চায়। তাই এটি প্রথম লিখলাম। যেহেতু আমি নতুন বাইকার তাই তেলের পাম্প গুলোর চুরি সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না এবং ফুয়েল মিটার এ কতটুকু এক লিটার তা ধারণা হয় নাই তাই প্রথম দিকে মাইলেজ নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলাম। আমার Honda Livo এখন ২৭০০কিমি চলছে। এখন আমি সর্বচ্চো গড়ে ৫৭/৫৮ কিমি মাইলেজ পেয়েছি। এই গড়ে ৫৭/৫৮ মাইলেজ এর মধ্যে ৬৫কিমি এর মাইলেজও আছে আবার ৫০ কিমি এর মাইলেজও আছে। রাস্তা আর জ্যাম এর উপর মাইলেজ কম বেশি আসবে। খালি রাস্তায় তেমন জ্যাম না থাকলে ৬০ এর মত মাইলেজ পাওয়া যাবে economic range এ চালালে।
Also Read: ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে হোন্ডা বাইক এর দাম
ফুয়েল মিটার এর এক দাগ থেকে আর এক দাগ পর্যন্ত এক লিটার ফুয়েল দেখায়। ফুয়েল মিটার এ আপনি ৫.৫ লিটার দেখতে পারবেন বাকি ৩ লিটার ফুয়েল মিটার এ দেখতে পারবেন না। এই ফিচারটা তাই ভাল লাগেনি। অন্যান্য কমিউটার বাইকের মত এটাতেও আরপিএম মিটার নেই। আর একটি কথা,অধিকাংশ তেলের পাম্প ৬০০ অথবা ৭০০ মিলি তেল বিক্রি করে এক লিটার বলে। এত কম তেল যখন পাই মনটা ই খারাপ হয়ে যায়।অথচ পাম্প গুলোর মিটার Tempering এর বিরুদ্ধে প্রশাসন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না।
Also Read: Honda CM 400 T 1982 Price in BD

Honda Livo – হ্যান্ডলিং এবং কন্ট্রোলিং বাইকটির কন্ট্রোল ভাল। গিয়ার শিফটিং খুব স্মুথ। প্রথম দিকে কিনার পর চালাতে গিয়ে কয়েকবার চাকা স্লিপ করে চিকন চাকার কারণে। পরে ফাকা রাস্তায় প্র্যাকটিস করে অভ্যস্ত হয়েছি এটাতে কিভাবে ব্রেক করতে হবে। খেয়াল করে দেখলাম ১০০/১১০ সিসি এর সব ব্র্যান্ড এর বাইকেই চাকা চিকন।চাকা মোটা হলে মাইলেজ কমবে। সামনের ব্রেক ৬০% পিছনে ৩০% এই অনুপাতে ব্রেক করা প্র্যাকটিস করলে আশা করি আমার মত আপনাদের ও আর সমস্যা হবে না। এখন আর ঝামেলা হচ্ছে না, আমি যেরকম চাচ্ছি সেরকমই ভাল কন্ট্রোলিং পাচ্ছি। সামনের হাইড্রলিক ব্রেক বেশ ভাল। আমি সামনের ব্রেক এর উপর প্রেসার দেই বেশি।
Also Read: Honda CBR 1100 XX Super Blackbird (2000) Bike Price In BD
পিছনের ব্রেক এ হার্ড ব্রেক কখনই করা যাবে না। করলে চাকা ঘুরে যাবে। দুই ব্রেক উল্লেখিত অনুপাতে একসাথে ধরতে হবে। কর্নারিং অ্যাঙ্গেল ৪৫ ডিগ্রি যা জ্যাম এ চিপা জায়গা গুলতে কাজে দেয়। সাস্পেন্সন গুলো ভালই মনে হচ্ছে। এই পর্যন্ত তিন বার এর মত চেইন টাইট দিয়েছি। হোন্ডা লিভো ১১০ – সিটিং পজিশন এবং রাইডিং এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স বেশ ভাল।জমাট বাধা কাদা,বালু,পাথর,কঙ্কর এ খুব সাবধানে আস্তে চালাবেন। আমার হাইট ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি। আমার পা বাইকের দুই সাইডে একদম ফ্লাট ভাবে রাখা যায় না। তবে আমার এতে কোন প্রব্লেম হয় না। কিন্তু যাদের হাইট এর চেয়ে কম তারা বাইকে বসে চেক করে কিনলে ভাল হবে।বাইক এর হাইট বেশি হওয়াতে কোন উচু স্পিড ব্রেকার এ দুইজন নিয়ে চালিয়েও ইঞ্জিনের নিচে কোনপ্রকার ঘষা লাগেনি, লাগবেওনা আশা করি।
হোন্ডা লিভো ১১০ – ইঞ্জিন ওয়েল ইঞ্জিনের শব্দ আমার কাছে ভালই লাগে অন্য বাইকের থেকে। তবে এটার চয়েজ এক এক জনের কাছে এক এক রকম। ২০০০কিমি এ ৪ বার ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করেছি। হোন্ডা 4T 10W30 Grade এর ইঞ্জিন অয়েল Recommend করে। তাদের নিজস্ব ইঞ্জিন অয়েল ইউজ করেছি ৪ বার। মাঝখানে একবার 20W50 grande এর ক্যাস্ট্রল একটিভ ইউজ করেছি কিন্তু তখন ইঞ্জিন সাউন্ড ভাল লাগেনি। অনেকে বলে 10W30 grade এর ইঞ্জিন অয়েল পাতলা।
Also Read: চট্টগ্রামে আয়োজিত হতে যাচ্ছে হোন্ডার মেগা ইভেন্ট
কিন্তু আমি কোম্পানির রিসার্চারদের উপর আস্থা রেখে 10W30 গ্রেড ব্যবহার করছি। 10W30,10W40,5w30,20W40,20W50 এসব এর কোন নাম্বার কেন হয় নেট এ খুজলে জানতে পারবেন। তখন নিজেই বুঝবেন আসলে কোনটা করা উচিত। হোন্ডা লিভো ১১০ – এক্সেলেরেশন এবং স্পীড আমি এ পর্যন্ত ৯০ এর কাছাকাছি স্পীড তুলেছি আশুলিয়া বেড়িবাঁধ রোড এ। সঠিকভাবে বলতে পারতেছিনা কারন মিটার এনালগ। এর বেশি আর তুলতেও চাই না। কারন বাইকটি ১৫০সিসি, ১২৫সিসি বাইক এর থেকে হাল্কা কিন্তু অন্য ব্র্যান্ড এর ১০০/১১০ সিসি থেকে ভারী।
এটি চালালে আপনার ১৫০ সিসি অথবা ১২৫ সিসি বাইক কে কখনই মিস করবেন না কারন টান আছে ভাল। শুধু 5th গিয়ারটা মিস করবেন। ৭০ এর পর স্পিড তুললে হালকা ভাইব্রেশন হবে এবং ইঞ্জিন এর সাউন্ডও বাড়বে। হোন্ডা লিভো ১১০ – লাইট লাইট এর আলো শহর এলাকার জন্য এবং যারা মহাসড়কে চালান না তাদের জন্য যথেষ্ট। এই বাইক এর ফ্রন্ট লাইটটি পিক আপ এর সাথে অ্যাডজাস্ট করা। আপনি চাইলে এটা কে ডাইরেক্ট করে নিতে পারেন অভিজ্ঞ মেকানিক দ্বারা তবে এতে ব্যাটারি এর আয়ু কমবে।আমি নিজেও ডাইরেক্ট করেছিলাম।
Also Read: হোন্ডা সিবি শাইন এর মালিকানা রিভিউ
কিন্তু আমার আরও বেশি আলো লাগবে। একবার ভেবেছিলাম LED লাগাবো কিন্তু এর আলো ফোকাস কম হয়ে ছড়িয়া যায়। আমি যেহেতু মহাসড়ক এবং ভাঙ্গা চুরা রাস্তা- সব রকম রাস্তায় চলতে হয় তাই আমি সামনে LED না লাগিয়ে fog light লাগিয়েছি বাম্পার এ এবং ফ্রন্ট লাইট আবার পিক আপ এর সাথে অ্যাডজাস্ট করে দিয়েছি। আর কথা বাড়ালাম না। এমনিতেই অনেক লম্বা হয়ে গেছে। এই ছিলো আমার Honda Livo 110 নিয়ে আমার অভিজ্ঞতা। কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
Also Read: হোন্ডা ড্রিম নিও বনাম হোন্ডা লিভো ১১০
লিখেছেন: নাঈম আহমেদ
আপনিও আমাদেরকে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠাতে পারেন। আমাদের ব্লগের মাধ্যেম আপনার বাইকের সাথে আপনার অভিজ্ঞতা সকলের সাথে শেয়ার করুন! আপনি বাংলা বা ইংরেজি, যেকোন ভাষাতেই আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ লিখতে পারবেন। মালিকানা রিভিউ কিভাবে লিখবেন তা জানার জন্য এখানে ক্লিক করুন এবং তারপরে আপনার বাইকের মালিকানা রিভিউ পাঠিয়ে দিন articles.bikebd@gmail.com – এই ইমেইল এড্রেসে।
T
Published by Saleh Bangla